নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা বিধ্বস্ত চিন এখন প্রায় স্বাভাবিক। ছন্দে ফিরছে দেশ আর সেই সময় উঠে আসছে করোনা পর্বের নানা কাহিনী। তেমনই এক কাহিনী বিশ্বের নেট দুনিয়াকে আলোড়িত করেছে। লাখো লাখো শেয়ার হয়ে সে খবর ছড়িয়ে পড়ছে দুনিয়ার নানা প্রান্তে। এ গল্পের নায়ককের নাম জিয়া বাও। জিয়া বাও নামের অর্থ চিনা ভাষায়, ছোট্ট সম্পদ। ম্যাংগ্রোল প্রজাতির ৭ বছরের এই পুরুষ কুকুরটি প্রভুভক্তির জন্য নজর কেড়েছে বিশ্বের কুকুর প্রেমীদের বিশেষ করে যাঁরা কুকুর পোষেন।ঘটনা চিনের হুবেই প্রদেশের উহান তাইকিং হাসপাতালের। যেখানে করোনায় আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ৫দিনের মধ্যেই কিন্তু প্রিয় পোষ্যটি তা জানেনা তাই টানা তিনমাস সে বসেই রয়েছে হাসপাতালের লাউঞ্জে মালিকের ভাল হয়ে ওঠার অপেক্ষায়।
এই ঘটনা যখন ঘটছে তখন চিনে লকডাউন চলছে। দোকানপাট, গাড়ি ঘোড়া বন্ধ। জিয়া বাওয়ের মনিবকে যখন বাড়ি থেকে তুলে আনা হয় তখন সেও পেছনে পেছনে ছুটে এসেছে হাসপাতালে। এর আগেও হাসপাতালে এসেছে সে। মালিক অসুস্থ হলে। সুস্থ হয়ে মালিক বাড়ি ফেরার সময় সেও মালিকের আদর খেতে খেতে বাড়ি ফিরেছে কিন্তু এবার এত দেরি হচ্ছে কেন সে বুঝতে পারেনি কারন সে জানতেও পারেনি যে মালিকের মৃত্যুর পর তাঁকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কবর দিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই সে বসে রয়েছে মাসের পর মাস।
হাসপাতালের কর্মীরা তাকে ভালবেসে ফেলেছে। তারাই তাকে খাবার দিয়েছে কারন বাইরে কোনও খাবার নেই। ইতিমধ্যে অবশ্য চিন স্বাভাবিক হয়েছে। হাসপাতালের সামনের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর খুলেছে। এতদিন নিজেদের বাড়ি থেকে নিজেদের জন্য বানিয়ে নিয়ে যাওয়া খাবারই জিয়া বাওয়ের সঙ্গে ভাগ করে খেতেন চিকিৎসা কর্মীরা। এবার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে খাবার নিয়ে যান জিয়ার জন্য। স্টোরের মালিক ওয়ায়ু কুফেন জানতে পেরে জিয়ার জন্য খাবার পাঠান প্রতিদিন। ধিরে ধিরে বন্ধুত্ব করে নেন জিয়ার সাথে।
কিন্তু তবুও হাসপাতাল থেকে নড়ানো যাচ্ছেনা তাকে। কুফেনের সঙ্গে সময় কাটানোর পর জিয়া ফের ফিরে আসছে হাসপাতালের লাউঞ্জে। গেছে উহানের ছোট প্রানীদের জন্য নিরাপত্তা সমিতির কাছে। কুকুর বিড়াল ইত্যাদি প্রানীদের স্বভাব সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ এই সমিতি। তারা জিয়া বাওকে পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য একটি নিরাপদ জায়গা নির্মান করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।