নিজস্ব সংবাদদাতা: ফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় চোখ রাঙাতে শুরু করেছে করোনা। জেলার সমস্ত মহকুমা, সমস্ত থানা এবং মফঃস্বল ও শহরগুলিতে যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার আক্রমন। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ১৯৫ (২৬জুন)। আগের দিন অর্থাৎ ২৫শে জুন যা ছিল ১৩৮ এবং ২৪শে জুন এই সংখ্যাটি ছিল ১৫৬। মনে রাখতে মাত্র কয়েকদিন আগেই সংখ্যাটা ৫০ জনে দাঁড়িয়েছিল।
গত তিন দিনের এই হিসাব বলছে জেলার সর্বত্রই করোনার প্রকোপ বাড়ছে। মেদিনীপুর শহরে কিছুদিন আগেই যেখানে করোনার বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করা গিয়েছিল সেই কুইকোটা, আবাস, রাঙামাটি এলাকা সহ গোটা শহরেই ফের আক্রান্ত বাড়ছে। খড়গপুর শহরের রেল এলাকা এবং আইআইটিতে ফের মাথা চাড়া দিয়েছে সংক্রমন। এছাড়া ডেবরা, সবং, পিংলা, বেলদা, কেশিয়াড়ী এই থানা এলাকায় আক্রান্তের প্রাবল্য লক্ষ্য করা গেছে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের ২৬ জুনের হিসাব অনুযায়ী পশ্চিম মেদিনীপুরের থানা অথবা ব্লক ভিত্তিক সংক্রমনের অবস্থা এই রকম।
মেদিনীপুর শহরে নির্দিষ্ট ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি এমন ১২জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। কুইকোটা থেকে ৪জন এবং রাঙামাটি ও হবিবপুর থেকে ৩জন করে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। অরবিন্দনগর, শরৎপল্লী ও মহাতাপপুর এলাকায় ২জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। এছাড়াও আক্রান্ত পাওয়া গেছে বড়আস্তানা, , বার্জটাউন, কর্নেলগোলা, মির্জাবাজার, উদয়পল্লী, তাঁতিগেড়িয়া, রবীন্দ্রনগর, পুলিশলাইন, পাটনাবাজার, নতুনবাজার এলাকায়। মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়ায় ৩ জন ও দাদরাশোলে ২জন ছাড়াও আক্রান্ত পাওয়া গেছে শিরোমনি চানিপুর, মুড়াকাটা, পালতাগরা, খয়েরউল্লাচক, বেলিয়াশোল, ধেড়ুয়া, সারেঙ্গাশোল, গুড়গুড়িপাল থেকে। গত তিন দিনের হিসাব ধরলে মেদিনীপুরে আক্রান্তের সংখ্যা আরও ৩০জন বাড়বে এবং তারমধ্যে সংক্রমিত জোনেই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
এদিকে খড়গপুর শহরের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি এমন ৩ আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। সর্বাধিক আক্রান্ত সাঁজোয়ালে ১০জন। প্রেমবাজার,পুরিগেট, কৌশল্যা এবং মালঞ্চ এলাকায় ২ জন করে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। এছাড়া নতুন করে সংক্রমন ছড়িয়েছে পুরাতনবাজার, সোনামুখী, বড় আয়মা, খরিদা, ধাড়িম্বা, ইন্দা, পীরবাবা, তালবাগিচা, ওল্ড ডেভলাপমেন্ট, নিউস্টেলেমেন্ট, হিজলী হাসপাতাল, নিমপুরা এলাকায়। খড়গপুর গ্রামীনের
কেশিয়াশোল, পাঁচডিহা, হিরাডিহি, ঘাগরা, শোভাপুর প্রতাপপুর, গোকুলপুর, সিজুয়া ও বলরামপুর (২জন)থেকে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। এছাড়াও আগের দু’দিনে খড়গপুর থেকে ৪৬ জন আক্রান্ত পাওয়া গেছে যার মধ্যে রেলেরই ২৫জন ও আইআইটি সূত্রে আক্রান্ত ১২জন। খড়গপুর শহর ঘেঁষা বলরামপুরে মারাত্মক সংক্রমন ছড়িয়েছে। বলরামপুর, আবড়াসিনি, কসবা মিলিয়ে বেশ কয়েকজন আক্রান্ত।
২৬জুনের হিসাব অনুযায়ী ডেবরা থানার বরাগড়, প্রেমচন্দ্রপুর। পিংলা থানার কুঞ্জপুর ৩, জলচক ২, ব্রাহ্মণীপুর ২, খিরিন্দা, মাকড়দা সবং সদরে ১জন ছাড়াও জুলকাপুর ২, এড়াল ২, হারনান, বেলদা সদরে ৩জন ছাড়াও , সরিষা কোনারপুর ২, সরিষা, দেউলি, চকমহিমা, মনোহরপুর, কাঁটাবনী, শালুকাতে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। মোহনপুর থানার বোড়াই ২, কুসুমদা, গোবিন্দপুর, মইসামুন্ডা
দাঁতন থানার সাউরি, একতারপুর, মাটি বিরুয়াতে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। কেশিয়াড়ীর বড়ামারা ৪, ভূঁইয়াবাড়, বেগমপুর ২, এলাসাই, হাসিমপুর, কিয়ারচাঁদ, খাজরাতে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। আগের ২দিন অর্থাৎ ২৪ ও ২৫জুন ডেবরায় ১২ জন, পিংলায় ১০জন, কেশিয়াড়ীতে ৯জন ও সবংয়ে অন্ততঃ ৪জন করে আক্রান্ত পাওয়া গেছিল। বেলদায় পাওয়া গেছিল ১৪জন।
,
গত ২৪ঘন্টায় কেশপুর সদরে ১জন ছাড়াও ওই থানার সরিষাখোলা, নেড়াদেউল, মুগবাসান, চাতলায় আক্রান্ত পাওয়া গেছে। শালবনী সদরে ৩জন আক্রান্ত ছাড়াও শালবনীর, কাছারিরোড ২, মুড়াকাটা ২, ওসিএল ২, বাকিবাঁধে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। গড়বেতা সদরে ১আক্রান্ত ছাড়াও ওই থানার কিয়াবনী, পাথরিশোল, কাঙরাশোল, চকমনসুর, আমলাগোড়া এবং গোয়ালতোড় থানার হুমগড়, আমলাশুলিতে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
তুলনায় কিছুটা হলেও কম ঘাটালের মহকুমার ৩টি থানায়। ঘাটালের মনসুখা, শ্যামসুন্দরপুর, নিশ্চিন্দিপুর, কুশপাতা, দলপতিপুর, কোটালপুর দাসপুরের
চন্দ্রকোনা সদরে ১জন, ক্ষীরপাই ৪, মনোহরপুর ৪বাগপোতা, বাঁকা ২, বেরাবেড়িয়া, রাঙামাটি, বোনা, চাঁদুর এবং দাসপুর থানার বাসুদেবপুর, বসন্তপুর, মামুদপুর এলাকা থেকে সংক্রমনে খবর পাওয়া গেছে নতুন করে। আগের ৪৮ঘন্টায় ঘাটাল মহকুমা থেকে ৩৬টি মত সংক্রমনের খবর ছিল।