নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা সতর্কতায় এবার ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়তে চলেছে বাঙালির হেঁসেল। আগামী সোমবার অর্থাৎ ২৩শে মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে পূর্ব ভারতের বৃহত্তম পাইকারি মাছের বাজার দিঘা মোহনা বাজার। বুধবার এমনটাই জানিয়ে দিলেন দিঘা ফিশারমেন এন্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাশোসিয়েসনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস। আর এর ফলে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যেতে চলেছে পুকুর ও ভেড়ির পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা মিষ্টিজলের চালানি মাছের দাম ও সবজির দামও। এমনিতেই গুজবের জেরে ব্রয়লারের বাজার পড়ে যাওয়ায় বাঙালির পাতে সস্তা প্রোটিনের আকাল পড়েছিল তার সঙ্গে সমুদ্রের মাছ ও যুক্ত হওয়ায় নিশ্চিত ভাবেই হা হুতাশ করবে বাঙালির পাত।
‘দ্য খড়গপুর পোষ্ট’কে শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘করোনা সতর্কতায় সরকার সমস্ত ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছেন। আমাদের দিঘা পাইকারি মাছের বাজার পূর্ব ভারতের অন্যতম বড় বাজার শুধু নয়, বলা যেতে পারে সব চেয়ে বড় বাজার। এখানে প্রতিদিন দু থেকে আড়াই হাজার মানু্ষের সমাগম হয় এবং দৈনিক লেনদেন হয় সাড়ে তিন থেকে চার কোটি টাকা। এতবড় জমায়েত করা ঝুঁকির ব্যাপার।
সেই ঝুঁকি আমরা নিতে চাইছিনা। তাই ২৩তারিখই শেষ বাজার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুনর্বার ঘোষনা না হওয়া অবধি এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে।” দাস আরও জানান, ” দিঘার মোহনা বাজারে শুধুই কলকাতা বা রাজ্যের ব্যবসায়ীরা আসেননা, ওড়িশা , অন্ধ্রপ্রদেশ, তমিলনাডু থেকেও ব্যবসায়ীরা আসেন। সুতরাং কোথা থেকে কি হবে কে বলতে পারে? আমরা তাই কোনও প্রকার ঝুঁকি নিতে নারাজ। গভীর সমুদ্রে মৎস শিকার রত সমস্ত মৎসজীবি বন্ধুকেই বার্তা পাঠানো হয়েছে। এক দু’দিনের মধ্যেই তাঁরা ট্রলার নিয়ে মোহনায় ভিড়ে যাবেন।”
এর ফলে বড়সড় লোকসান ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়তে চলেছেন মৎসজীবী পরিবার গুলিও । এমনিতেই বছরে একবার বর্ষাকালের প্রায় তিনমাস মৎস প্রজননকালে শিকার বন্ধ রাখতে হয় তার আগেই করোনা জনিত কারনে বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ রাখতে হবে মৎস শিকার। পূর্ব মেদিনীপুর , দক্ষিন ২৪পরগনার লক্ষাধিক পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে মৎস ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ফলে চরম অনিশ্চয়তা তাঁদের পরিবারেও। এই পরিস্থিতিতে অন্য কোনও বিকল্পও আপাতত হাতের কাছে নেই। গত ফেব্রুয়ারি থেকেই চিন সহ সমস্ত দক্ষিন পূর্ব এশিয় দেশ গুলিতে চিংড়ি ও কাঁকড়ার বাজারে বড় ধ্বস নেমেছিল। এরপর পুরো ব্যবসাই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তীব্র অর্থনৈতিক সংকট নেমে আসতে চলেছে মৎস্যজীবী পরিবার গুলিতেও।