নিজস্ব সংবাদদাতা: সময় মত যাচ্ছে তত বোঝা যাচ্ছে শাসকদলের কত গভীরে জাল বিছিয়ে ছিলেন কসবায় ভুয়ো টিকা কাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব। একাধিক নেতা মন্ত্রীর সঙ্গে ছবি, উদ্বোধন অনুষ্ঠানের ফলকে নেতাদের সঙ্গে নাম তো ছিলই এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল আরও একটি ভিডিও যেখানে দেখা যাচ্ছে তৃনমূলের বিধায়ক লাভলি মৈত্র স্বয়ং জনতার সঙ্গে দেবাঞ্জনের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন IAS আধিকারিক ও জয়েন্ট কমিশনার বলে। রাজনৈতিক সংযোগকে কাজে লাগিয়েই একের পর এক ভুয়ো টিকার শিবির খুলে বসেছিলেন দেবাঞ্জন দেব। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে জলঘোলা। বিজেপি ও সিপিএমের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে শাসকদলের সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচিতিকে কাজে লাগিয়েই দেবাঞ্জন গন একের পর এক জালিয়াতি করে গেছে।
বাংলায় বিজেপি-র মিডিয়া সেলের প্রধান সপ্তর্ষি চৌধুরী। রাজ্যের মন্ত্রী তথা পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম এবং সোনারপুর দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রকেও তীব্র আক্রমণ করেছেন তিনি। কসবায় ভুয়ো কান্ড সামনে আসতেই প্রকাশ্যে এসেছে একটি ভিডিও। ভিডিওটি গত ১৫ জুন সোনারপুরে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানের। যেখানে যোগ দেন লাভলি মৈত্র। সেখানে তাঁর সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দেবাঞ্জন। এখানেই তৃণমূল বিধায়ক লাভলি প্রকাশ্য মঞ্চে জয়েন্ট কমিশনার এবং আইএএস বলে অভিযুক্তের পরিচয় দিয়েছিলেন।
ভুয়ো টিকার বিষয়টি সামনে আসার পরই অনুষ্ঠানের সেই ভিডিয়ো ঘুরছে মানুষের হাতে হাতে।
যদিও লাভলির দাবি, দেবাঞ্জনকে তিনি আগে থেকে চিনতেন না। তাঁর কেন্দ্রে মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং ফেস শিল্ড পাঠিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। সেই সূত্রেই ওই দিনের অনুষ্ঠানে তিনি হাজির ছিলেন। সোনারপুর থেকে দেবাঞ্জনের শিবিরে যাঁরা টিকা নিতে গিয়েছিলেন, কেউ তাঁকে জানিয়ে যাননি বলেও দাবি করেন লাভলি। দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ যে ব্যক্তির সম্পর্কে কিছু জানেন না, তাঁকে IAS অফিসার বলে কী ভাবে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন লাভলি, প্রশ্ন তুলেছেন সপ্তর্ষি।
এদিকে এই ভুয়ো করোনা টিকাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল মামলা। শুক্রবার সেই জনস্বার্থ মামলা করেছেন আইনজীবী সন্দীপন দাস। তাঁর দাবি, ভুয়ো টিকাকাণ্ডে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ জড়িত আছে। রাজ্য পুলিশ সত্য উদঘাটন করতে পারবে না। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তভার দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য বুধবার কসবার ভুয়ো টিকা ক্যাম্পের বিষয়টি সামনে আসে। সেদিনই গ্রেফতার করা হয় মূল পাণ্ডা দেবাঞ্জন দেবকে। যিনি নিজেকে আইএএস অফিসার এবং কলকাতার জয়েন্ট মিউনিসিপাল কমিশনার হিসেবে পরিচয় দিচ্ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হযেছে ভুয়ো পরিচয়পত্র। অভিযোগ, তাতে কলকাতা পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের জাল সই ব্যবহার করা হয়েছে।