Homeএখন খবরঘাটালে বন্যা পরিদর্শনে দেব! ফের উঠে আসল সেই 'খুড়োর কল' ঘাটাল মাষ্টার...

ঘাটালে বন্যা পরিদর্শনে দেব! ফের উঠে আসল সেই ‘খুড়োর কল’ ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যানের কথাই

নিজস্ব সংবাদদাতা: জলমগ্ন ঘাটালের মনসুখা গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করে গেলেন সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব আর ফের উঠে আসল ঘাটাল মহকুমার জন্য প্রায় চার দশক আগে পরিকল্পিত খুড়োর কল ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যানের কথা। বছরের নিয়ম করে অন্ততঃ ২বার ঘুরে ফিরে আসে এই ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যানের কথা। বন্যা আর নির্বাচনের সময়। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হলনা। পঞ্চায়েত নির্বাচন কিংবা পৌরসভা, বিধানসভা অথবা লোকসভা আর জল জমা শুরু হলেই ঘাটালবাসীর কানে যে মন্ত্র বারবার উচ্চারিত হয় তা’হল, ‘ ওঁ, ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যানেয়াও নম:!’ বাম ডান, ঘাস কিংবা পদ্মফুল সব দল নির্বিশেষে একটাই কথা। আর সব কথার একটাই লক্ষ্য ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা।’ মঙ্গলবার দেব যদিও বলে গেলেন তিনি দোষারোপ করছেন না কেন্দ্রকে কিন্তু ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যান ছাড়া ঘাটালবাসীর মুক্তি নেই।

কিন্তু যে প্রশ্নের উত্তর মেলেনা তা’হল রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলি কোনও না কোনও সময়ে কেন্দ্রের ক্ষমতার হাত ধরে ছিলেন। বামেরা ছিলেন ইউপিএ-র হাত ধরে আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো দীর্ঘকাল বিজেপি এবং বেশ কিছুদিন কংগ্রেসের হাত ধরে ছিলেন তখনও মাষ্টারপ্ল্যানের জন্য কিছু হয়নি কেন? গত বিধানসভায় তৃনমূল সরকার বলেছিল, কেন্দ্র না করুক, রাজ্যই করবে মাষ্টার প্ল্যানের বাস্তবায়ন। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় বিবৃতিতে দিলেন ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যানের কাজ শুরু হয়ে গেছে! কিন্তু কোথায় কী?

সেচ দপ্তরের কর্তারা কী বলছেন? বলছেন, আশির দশকে তৈরি হওয়া ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যান মারা গেছে, তামাদি হয়ে গেছে। সেই সময়ের ঘাটাল আর এখনকার ঘাটাল এক জায়গায় নেই। নদী আর খালের গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে। এত জনবসতি ও জনসংখ্যা বেড়েছে যে পুরানো মাষ্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের কোনও জায়গাই নেই। সেচ দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘ওই মাষ্টার প্ল্যান কার্যকরী করতে হলে পুরো ঘাটাল শহরটাকেই অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে কাজ করতে হবে। পুরানো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে নদী খাল গুলি থেকে এত পরিমান মাটি উঠবে যে ঘাটাল শহরে রেখেও জায়গা কুলাবে না সে মাটি রাখার।’

তা’হলে উপায়? উপায় নতুন করে পরিকল্পনা করার। বর্তমান সরকারের আমলে নদী, খালের কিছু কিছু সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। দরকার একেকটি খাল বা নদীর জন্য আলাদা আলাদা সংস্কার পরিকল্পনা না করে একটি সমন্বিত পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে এই সংস্কার করা। বাজেট কম রাজ্যের তাই একসঙ্গে সবটা সম্ভব নয়। একটা দুটো করেই হোক কিন্তু সেটা হোক একটা সুসংহত পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে। তাতে ১০বছর লাগলেও ১০বছর পরে হাসবে ঘাটাল কিন্তু আজন্মকাল ধরে বছর বছরের কান্না ঘুচবে। আর বন্ধ করা হোক এই ঘাটাল মাষ্টার প্ল্যানের পুরানো কাসুন্দি। কারন একটা আবেশি স্বপ্ন যদি মানুষ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বয়ে বেড়ায় তবে সমস্যা মুক্তির নতুন উপায় খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। নতুন সরকারের কাছে তাই ঘাটালের মানুষের দাবি হোক নতুন পরিকল্পনার। ধিরে হোক কিন্তু বাস্তবায়িত হোক।

মঙ্গলবার দেব দুর্গত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি জলবন্দী মানুষদের জন্য আশু কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন। যে সমস্ত মানুষ ত্রাণশিবিরে রয়েছেন তাঁদের পাশাপাশি যাঁরা ত্রাণশিবিরে যেতে রাজি নন তাঁদের কাছেও যাতে প্রশাসন সাহায্য নিয়ে পৌঁছায় তেমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি বলে গেছেন, সময়টা রাজনীতির নয়, সবাই মিলে দুর্গত মানুষদের কাছে পৌঁছানোর, দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে পৌঁছনোর। দেবের এই আশ্বাস যদি সমস্ত দল এমনকি তাঁর নিজের দলও শোনে তাহলে সত্যিই সত্যিই ভালো কারন কয়েকদিন আগেই এই এলাকারই তৃনমূল প্রধান পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন এই বলে যে, বিধানসভায় শুধুমাত্র তৃনমূল জয়ী হয়েছে এমন বুথেই সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বলা হচ্ছে। বাকি এলাকায় কোনও কাজ করতে না করার জন্য চাপ তৈরি করা হচ্ছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular