নিজস্ব সংবাদদাতা: তীব্র গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে উত্তাল হয়ে উঠল খড়গপুর শহরের ইন্দা এলাকা। চলল বোমাবাজি এবং মারধর। ইন্দার ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃনমূল যুব সম্পাদক তথা খড়গপুর শহর তৃনমূল নেতা আশিস সেনগুপ্ত ওরফে বাবলার পার্টি অফিসে হামলা চালানোর পাশাপাশি তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠল খড়গপুর সদরের প্রাক্তন বিধায়ক বর্তমান পুর প্রশাসক প্রদীপ সরকার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বাবলা। তাঁর মুখ এবং মাথায় আঘাত রয়েছে, রক্ত ঝরেছে বলেও খবর।
বাবলা এবং তাঁর স্ত্রী ১নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর অনিমা সেনগুপ্ত সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে প্রদীপ সরকার অনুগামী মান্টা ওরফে হায়দার আলির নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে। তখন নিজের কার্যালয়ে ছিলেন বাবলা। প্রায় ৪০জনের একটি দল বাবলাকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করে আনে এবং সামনের জাতীয় সড়কে ফেলে বেধড়ক মারধর করে। সঙ্গে চলে বোমাবাজিও। এরপর বাবলার অফিসে তালা লাগিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা।
ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন তৃণমূলের নেতারা। এই ব্যাপারে তৃণমূলের খড়গপুর শহর কমিটির সভাপতি রবিশংকর পান্ডে বলেছেন ” ঘটনাটি শুনেছি। আরও বিস্তারিত খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।” আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক অজিত মাইতি বলেছেন ” ঘটনার বিষয়টি জানতে পেরেছি। দেখছি বিষয়টি নিয়ে। খোঁজ খবর নিচ্ছি।” তবে বারবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেন নি খড়গপুর পুরসভার প্রশাসক প্রদীপ সরকার।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছেন ” এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয় নি। অভিযোগ হলে খতিয়ে দেখা হবে।” তবে পুলিশ স্বীকার করেছে এরকম একটি গন্ডগোলের খবর পাওয়া গিয়েছে।
জানা গিয়েছে ওই হামলাকারীরা প্রথমে কার্যালয়ে ঢুকে নির্বাচনের সময় প্রদীপ সরকারের সাথে বেইমানি করার অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করা হয়। তারপরে তাঁকে টেনে কার্যালয়ের বাইরে এনে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়। তাঁর মাথা ফেটে যায়। কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ ফেরার সময় একটি বোম ছোঁড়া হয়। আপাতত জখম তৃণমূল নেতা আশীস ওরফে বাবলা সেনগুপ্তকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বাবলা অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা, সিক্সার ও নাইন এমএম রিভলবার নিয়ে এসেছিল। পুরো ঘটনাটি হায়দার আলি খান ওরফে মান্টার নেতৃত্বে হয়েছে। তাঁর অভিযোগ আক্রমণকারীদের মধ্যে কয়েকজন সশস্ত্র ছিলেন। ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনায় রীতিমত সন্ত্রস্ত বাবলার অনুগামীরা। উল্লেখ্য এবার নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন প্রদীপ সরকার। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরই প্রদীপ অনুগামীরা দাবি করেন কয়েকজনের বিশ্বাসঘাতকতা করেছে প্রদীপ সরকারের সঙ্গে। সেই তালিকায় বাবলাও ছিলেন।
গোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে ইন্দার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তাঁরা ঘটনাটিকে নজির বিহীন বলে দাবি করেছেন ইন্দার অধিবাসীরা। ইন্দায় কোনও দিন বোমা পড়ার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন এলাকার মানুষ। আতঙ্কিত ইন্দাবাসী জানিয়েছেন, খড়গপুরের ত্রাস সমাজবিরোধী রামবাবু, রাজেশ গুপ্তা, শ্রীনু নাইডুর আমলেও ইন্দাতে এরকম ঘটনা ঘটেনি। একটা শান্তিপূর্ণ এলাকায় বিষাক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা হল বলে তাঁদের দাবি। ইন্দা এলাকায় বহিরাগতদের এনে এই হামলা করা হয়েছে বলে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।