নিজস্ব সংবাদদাতা: ত্রাণের জন্য বরাদ্দ ত্রিপল কাঁথি পৌরসভার গো-ডাউন থেকে লুট করার চেষ্টা করা হয়েছে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর ভাই কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীর মদতে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের হল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানায়। এমনি একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে কাঁথি পুরসভার বর্তমান প্রশাসক মন্ডলীর এক সদস্যের তরফে।
নন্দীগ্রামের বিধায়ক এবং তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বর্তমান পুর প্রশাসক মন্ডলীর অভিযোগ , গত ২৯শে মে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে কাঁথি পুরসভার পুরনো বিল্ডিং ডরমেটরি মাঠ সংলগ্ন পুরসভার গোডাউন থেকে ত্রিপল বার করতে গিয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর কিছু লোক। তাঁরা একটি একটি ছোট লরি নিয়ে যান যা দেখতে পেয়ে পুরসভায় কাজ করতে আসা স্থানীয় এক যুবক খবর পেয়ে খবর দেন কাঁথি পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত বর্তমান চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মাইতিকে খবর দেন ওই যুবক। মাইতি এসে বাধা দিলে তাঁকে গালাগালি করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। যদিও শেষ অবধি মাইতি একটি নতুন তালা লাগিয়ে দেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কাঁথি পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য-সহ পুর প্রশাসক সিদ্ধার্থ মাইতি। শুভেন্দু অধিকারী প্রভাব খাটিয়ে এই ধরনের ঘটনা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর, পুর প্রশাসক মণ্ডলীর দুই সদস্য হাবিবুর রহমান ও রত্নদীপ মান্না এবং কাঁথি শহর তৃণমূল কংগ্রেস সম্পাদক বিশ্বজিৎ মাইতি ও কাঁথি শহর যুব তৃণমূল নেতৃত্ব সুরজিৎ নায়ক গোডাউনে দায়িত্বে থাকা পুরসভার কর্মচারী হিমাংশু মান্নাকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে খবর।
হিমাংশু মান্না অবশ্য জানিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন সময়ে মানুষ জনকে দেওয়ার জন্য কিছু ব্যক্তিগত ত্রিপল পুরসভার গোডাউনে জমা রেখেছিলেন । সেই সমস্ত ত্রিপল নেওয়ার জন্যই তিনি লোক পাঠিয়েছিল। যদিও হাবিবুর দের দাবি ওই ত্রিপলগুলিতে সরকারি লোগো আছে। সেগুলি কখনও কারও ব্যক্তিগত হতে পারেনা। তৃনমূল নেতাদের আরও দাবি, পুরসভার কর্মী হিমাংশু মান্না অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ এবং নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর একসময়ের আপ্ত সহায়ক হিসাবে কাজ করেছেন। তাই অধিকারীদের হয়ে কাজ করছেন তিনি।
তাঁরা আরও দাবি করেন পুরসভার চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া এইভাবে ত্রাণের ত্রিপল কী ভাবে বের করা যায়? তারপরই শুভেন্দু ও সৌমেন্দু সহ চার ব্যক্তির নামে কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অন্য আরেকটি ঘটনায় শনিবার কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাখাল দাস নামে এক ব্যক্তিকে। অভিযোগ ২০১৯ সালে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের সেচ মন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর দফতরে চাকরি দেওয়ার নামে ওই ব্যক্তি একজনের কাছ থেকে ২লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরেই রাখাল দাসকে খুঁজছিল পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন করে শপথ গ্রহণ করার পরই বিভিন্ন দপ্তরের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় যশ হওয়ার পর সেচ দপ্তরের কাজ কর্ম নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। কয়েকদিন আগেই দিঘায় এসে শুভেন্দু অধিকারীর আমলে দুর্নীতি হয়েছে এমন বক্তব্য রেখেছেন। রাখাল দাসকে গ্রেপ্তার ও কাঁথি থানায় অভিযোগ সেই দিকেই এগুচ্ছে কিনা এখন সেটাই দেখার।