Homeঅন্যান্য'দেব'গ্রামে পরাজয়, কেশপুরে প্রতিহিংসার অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে! সামাজিক বয়কটে ১৮ বিরোধী পরিবার,...

‘দেব’গ্রামে পরাজয়, কেশপুরে প্রতিহিংসার অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে! সামাজিক বয়কটে ১৮ বিরোধী পরিবার, অভিযোগ ওড়াল তৃনমূল

নিজস্ব সংবাদদাতা: ৫বছরের মধ্যে ব্যাপক ভোট কমেছে শাসকদলের। ২০১৬ বিধানসভায় কেশপুরে তৃনমূল প্রার্থী শিউলি সাহা জয়ী হয়েছিলেন ১লক্ষেরও কিছু বেশি ভোটের ব্যবধানে। এবার, ২০২১ য়ে শিউলি সাহা জিতেছেন ২০হাজার ভোটে। অর্থাৎ ভোট কমছে ৮০হাজার। বিজেপির অভিযোগ ছিল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মতই কেশপুরে ব্যাপক সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃনমূল। বিরোধী নেতা কর্মীদের ঘরবাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি মারধর, জরিমানা ইত্যাদি চলছে। তৃনমূল অবশ্য সেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শাসকদলের দাবি, সবই অপপ্রচার। ভোটে হেরে এই সব অপপ্রচার করছে বিজেপি, তৃনমূলের লোকেরা। যদিও গত তিন দিন ধরে কেশপুর এলাকায় ঘুরে বেড়ানো একটি লিফলেট প্রশ্ন তুলে দিয়েছে যে, তা’হলে বিরোধীদের দাবিই কী সঠিক?

লিফলেট আবার পাওয়া গেছে ঘাটালের সাংসদ, অভিনেতা দেব বা দীপক অধিকারীর গ্রামে। সেই লিফলেটে দেবের গ্রাম মহিষদার সমস্ত দোকানদারদের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার বার্তা দেওয়া হয়েছে যে লিফলেটে উল্লেখিত ব্যক্তিদের “পার্টি’র অনুমতি ছাড়া কোনও জিনিসপত্র বিক্রয় করা যাবেনা। চা দোকানদের উদ্দেশ্যে জানানো যায় এই ব্যক্তিদের চা দেওয়া যাবেনা।” লিফলেটটি ছাপানো হয়েছে মহিষদা সর্বভারতীয় তৃনমূল কংগ্রেসের নাম করে। ১৮জনের তালিকা উল্লেখ করার পর নিচে বিশেষ দ্রষ্টব্যতে লেখা হয়েছে, “এই সমস্ত ব্যক্তিদের পার্টির অনুমতি ছাড়া যে দোকানদার মাল বিক্রয় করিবে তাহাকে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হইবে।” একেবারে সোজা সাপ্টা ভাষায় যাকে বলে ধোপা-নাপিত বন্ধ।

মহিষদা গ্রাম কেশপুর বাজার থেকে আড়াই কিলোমিটার। এক সময় সিপিএমের দুর্গ বলে পরিচিত এই মহিষদা গ্রাম যেমন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএম সম্পাদক তরুণ রায়ের জন্মভূমি তেমনই অভিনেতা তথা ঘাটাল সংসদীয় ক্ষেত্রের সাংসদ দীপক অধিকারী বা দেবের জন্মভূমি এই গ্রাম। দেবের জেঠামশাই প্রয়াত শক্তিপদ অধিকারী কেশপুরের সিপিএম নেতা ছিলেন। দেখা যাচ্ছে এই নির্বাচনে মহিষদা গ্রামে তৃনমূল আর সিপিএম ২জনকেই পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে বিজেপি। লিফলেটে উল্লেখ করা হয়েছে মহিষদা গ্রামের ২টি বুথের কথা। বুথের নম্বর ১৭৬ এবং ১৭৯।

১৭৬নম্বর বুথ, যেখানে দেবের পৈত্রিক ভিটা সেখানে বিজেপি ভোট পেয়েছে ৪৩৫টি। তৃনমূল কংগ্রেস ভোট পেয়েছে ২৮৭টি আর সিপিএম ভোট পেয়েছে ১২৭টি। অন্যদিকে ১৭৯ নম্বর বুথে বিজেপি ভোট পেয়েছে ৩৮০, তৃনমূল ১৪৯ এবং সিপিএম ৮৭টি। বিজেপির বক্তব্য হল, যে যে বুথগুলোতে তৃনমূল কম ভোট পেয়েছে বা হেরেছে সেখানেই বিভিন্ন ভাবে চাপ তৈরি করা হচ্ছে বিরোধীদের ওপর। যে ১৮জনের নাম ওই লিফলেটে উল্লেখ করা হয়েছে তারমধ্যে শুধু সিপিএম বা বিজেপি সমর্থক কর্মী পরিবার রয়েছেন এমনটা নয় এমন ব্যক্তিও রয়েছেন যিনি ব্যবসায়িক স্বার্থে বিরোধী দলকে নির্বাচনের সময় মঞ্চ বানিয়ে দিয়েছেন, মাইক ইত্যাদি ভাড়া দিয়েছেন। ১৮জনের মধ্যে মহিলা, পুরুষ, স্কুল শিক্ষক, ব্যবসায়ী, দিনমজুর সবাই রয়েছে।

যদিও লিফলেটটি বাজারে ছাড়া হয়নি। কম্পিউটার টাইপ করে কিছু কপি জেরক্স করা হয়েছিল দোকানদারদের দেওয়ার উদ্দেশ্যে। ওই গ্রামে ছোটবড় মিলিয়ে তিরিশ পঁয়ন্ত্রিশটি দোকান রয়েছে। তাঁদের দেওয়ার আগেই লিফলেটটি ফাঁস হয়ে যায়। তৃনমূল জানিয়েছে, এরকম কোনও লিফলেট ছাড়া হয়নি, সবটাই বিজেপির চক্রান্ত। তৃনমূলকে বদনাম করার উদ্দেশ্য নিয়েই এটা করা হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা এমনটাই জানিয়েছেন একটি বাংলা দৈনিককে।

 

RELATED ARTICLES

Most Popular