নিউজ ডেস্ক: যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ থেকে গঙ্গায় ভেসে আসা ডজন ডজন লাশ দেখে চমকে উঠেছিল দেশ। প্রথমে অস্বীকার করা, অন্য জায়গার লাশ উত্তর প্রদেশের বলে চালানো হচ্ছে এবং পরে ষড়যন্ত্রীদের কীর্তি বলে কার্যত লাশের ঠিকানা যে বারাণসীর রাজ্যই, তা মেনে নিয়েছিল আদিত্যনাথ সরকার। শুধু জলেই নয়, গঙ্গার চরেও করোনায় মৃতদের দেহ পুতে রাখার ছবি দেখে গা শিউরে উঠেছিল গোটা দেশবাসীর। এবার প্রকাশ্যে এল উত্তর প্রদেশের বলরামপুর জেলার রাপ্তি নদীতে কোভিড-সংক্রামিত ব্যক্তির মৃতদেহ ফেলে দেওয়ার ভিডিও।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে নগর কোতয়ালীতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ বিজয় বাহাদুর সিং বলেছেন, রাপ্তি নদীতে ফেলে দেওয়া লাশ সিদ্ধার্থনগর জেলার শোহরতগড়ের প্রেমনাথ মিশ্রের। ডঃ বিজয় বাহাদুর সিং বলেছেন যে, প্রেমনাথ মিশ্রকে ২৫ মে, করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবং ২৮ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার জানিয়েছেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মৃতদেহটি রাপ্তি নদীতে ফেলে দিতে দেখা গেছে এবং এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার এছাড়াও জানান যে, কোভিড প্রোটোকলের আওতায় প্রেমনাথ মিশ্রের মরদেহ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, আত্মীয়রাই মৃতদেহ নদীর জলে ছুঁড়ে ফেলেছেন। গোটা বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উত্তরপ্রদেশের বলরামপুরের এক ব্রিজ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় এই দৃশ্য মোবাইলবন্দী করেছেন কয়েকজন। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বৃষ্টির মাঝে দুই ব্যক্তি প্লাস্টিকে জড়ানো একজনের দেহ ব্রিজ থেকে নীচে রাপ্তি নদীর জলে ফেলছেন। এর মধ্যে একজনকে পিপিই কিট পরে থাকতে দেখা গেছে। আর এতে করেই মনে করা হচ্ছে এটি করোনায় মৃতের দেহ।
কিছুদিন আগেই গঙ্গায় মৃতদেহ ভেসে যাওয়ার দৃশ্য শুধু ভারতেই নয় সারও বিশ্ব জুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছিল। যারপরই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, এভাবে যাতে কোনওভাবেই কোনও কোভিড মৃতদেহকে নদীর জলে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া না হয়। প্রথমত মৃতদেহের প্রতি সামান্যতম সম্মান প্রদর্শন না করা ও দ্বিতীয় নদীর জলে কোনওভাবে মারণ ভাইরাস মিশে ভয়ানক সংক্রামক কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কার জেরেই এমনটা বলা হয়েছিল। যদিও তার কোনওটাই যে উত্তরপ্রদেশে এখনও মানা হচ্ছে না, সেটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেল এই ভিডিও।
ভাইরাল এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘দ্য খড়গপুর পোস্ট’।