বিভূ কানুনগো: যদি প্রশ্ন করা হয় ঢাল নেই তরোয়াল নেই কিন্তু তবুও নিধিরাম সর্দার নয়, কে? উত্তরটা অবশ্যই, রেড ভলান্টিয়ার। সত্যি তাদের না আছে ঢাল, না আছে তরোয়াল। শুধুই প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর দুরন্ত মানবপ্রেম নিয়ে এই মুহূর্তে বাংলার অতিমারির বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইতিহাস হয়ে গেছেন রেড ভলেন্টিয়ার সদস্যরা একটা বাইক সম্বল করেই গলি থেকে রাজপথ অতিমারি পীড়িত পরিবারে পৌঁছে যাচ্ছেন ৮০হাজার রেড ভলেন্টিয়ার।
ভারত তো দূরের কথা সারা বিশ্বে কোনও যুদ্ধে আক্ষরিক অর্থে এত পরিমাণ স্বেচ্ছা সৈনিক যোগ দিয়েছেন কিনা তা অবশ্যই ইতিহাসের বিচার্য। সেই রেড ভলেন্টিয়ার খড়গপুর শাখার হাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার তুলে দিল খড়গপুরের নাট্যদল মৃদঙ্গম। সঙ্গে কয়েক হাজার টাকা আর্থিক সাহায্যও করেছে ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের ওই সাংস্কৃতিক শাখা।
বৃহস্পতিবার খড়গপুর শহরের সুভাষপল্লীতে মৃদঙ্গমের নিজস্ব ভবনে একটি ছোট অনুষ্ঠানের মধ্যে মৃদঙ্গমের সদস্যরা রেড ভলেন্টিয়ার সদস্যদের হাতে এই অক্সিজেন সিলিন্ডার ও নগদ ৬০০০ টাকা তুলে দেন। নাট্যদলের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁদের এই সংস্থার প্রাণপুরুষ পঙ্কজ চক্রবর্তী মহাশয়ের আত্মীয়া প্রয়াত শিক্ষিকা অমলা আচার্যের অসুস্থার জন্য এই অক্সিজেন সিলিন্ডারটি কিনেছিলেন তাঁরা। সাধারণভাবে প্রয়োজন ফুরালে মানুষ এই সিলিন্ডার বিক্রি করে দেন কিন্তু পঙ্কজ চক্রবর্তীর পরিবার তা সংস্থার হাতে তুলে দেন রেড ভলান্টিয়ার দেওয়ার জন্যই।
মৃদঙ্গমের সম্পাদক সত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই অতিমারির সময় রেড ভলেন্টিয়াররা যেভাবে পীড়িত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন তা অভাবনীয়। সরকারি সংস্থা না হওয়ার কারনে অর্থ এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের সঙ্কটে ভুগছেন তাঁরা। এই সিলিন্ডারটি নিশ্চিতভাবেই খড়গপুরের মানুষের উপকারে লাগবে।
রেড ভলেন্টিয়ারের পক্ষে অনিকেত সেনগুপ্ত, সৌরভরা মৃদঙ্গম ও পঙ্কজ চক্রবর্তীকে ধন্যবাদ দিয়ে জানিয়েছেন, ” শহরে যে পরিমান মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এবং যে পরিমান মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজন দেখা দিয়েছে তার তুলনায় আমরা অনেক কম সাহায্য করতে পারছি। কারন আমাদের সামর্থ্য ও সরঞ্জাম দুটোই কম রয়েছে। মৃদঙ্গমের এই উদ্যোগ, পঙ্কজদার এই ভাবনা আমাদের অনেকটাই শক্তি জোগাবে খড়গপুরে আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে। মৃদঙ্গমের পক্ষে এদিন উপস্থিত ছিলেন অসীম আচার্য দেবু চট্টোপাধ্যায় , পঙ্কজ চক্রবর্তী প্রমূখরা। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন খড়গপুরের বিভিন্ন স্তরের নাগরিকরা। আরও অনেক মানুষ এগিয়ে আসুক এমনই প্রত্যাশায় শহর।