নিজস্ব সংবাদদাতা: আরও ১৬ দিন অর্থাৎ আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত বাংলায় লকডাউন বা কড়া বিধিনিষেধ জারি থাকবে। করোনার শৃঙ্খল ভাঙতেই এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হল বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে বে-রোজকারি আরও বাড়ায় চরম আশঙ্কায় গরিব জনতা। ২০২০ লকডাউন কোমর ভেঙে দিয়েছিল খেটে খাওয়া মানুষের। আনলক পর্বে ফের কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল জনজীবন। মাঠে ময়দানে, ক্ষেত খামারে, নির্মাণশিল্পে কাজ শুরু হওয়ায় ফের ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল খেটে খাওয়া পরিবারগুলি কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের বাড়াবাড়িতে ফের ১৬ই মে থেকে লকডাউন শুরু করে রাজ্য সরকার। আগামী ৩০শে মে, রবিবার সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে কিন্তু তার ৪৮ ঘন্টা আগেই ১৫ই জুন অবধি লকডাউনের সময়সীমা বাড়িয়ে দিল রাজ্য।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে রাজ্যের বিধিনিষেধের মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা করেন তিনি। মমতার কথায়, “কড়া বাধানিষেধ জারি করে করোনা সংক্রমণ বেশকিছুটা কমানো গিয়েছে। তাই এর মেয়াদ কিছুটা বাড়ানো হল। আপনাদের অসুবিধার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।” এবার সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বেশ কিছুটা বাড়ানো হলেও পাটশিল্প এবং নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়ায় কিছুটা সুরাহা হতে পারে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন , “পাটের বিভিন্ন সামগ্রী চাইছে পঞ্জাব। তারা বারবার অনুরোধ করছে। তাই তাদের কথা মাথায় রেখে এবার পাটশিল্পে কিছুটা ছাড় দেওয়া হচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাটশিল্পে এতদিন ৩০ শতাংশ কর্মীর হাজিরা নিয়ে কাজ চলছিল। এবার ৪০ শতাংশ কর্মী কাজে যেতে পারে পাটকলগুলিতে। ছাড় দেওয়া হল নির্মাণ ক্ষেত্রেও। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, যে সমস্ত নির্মাণ ক্ষেত্রে মালিকদের নিজস্ব জায়গা রয়েছে সেখানে নির্মাণকর্মীদের রেখে কাজ চলতে পারে। তবে ওই কর্মীদের টিকাকরণ করাতে হবে। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তাঁদের কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়াতে হবে। তাঁর কথায়, “ওদের কর্মী যখন ওদেরও তো দায়িত্ব নিতে হবে।”
এই নিষেধাজ্ঞায় বাকি সবকিছুই আগের মত চলবে। যেমন এখনকার নিয়মেই বাজার-দোকান বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং বিকাল ৫টা থেকে ৭টা। উপযুক্ত কারন ছাড়া বাইরে বেরনোতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। মিষ্টির দোকানও খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আগের নিয়মেই খোলা থাকবে সমস্ত জরুরি পরিষেবা। যদিও গনপরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ক্ষেত্রে যুক্ত মানুষ, অসংগঠিত, ঠিকা শ্রমিক, হকার, ঠেলাওয়ালাদের আয়ের তেমন সুযোগ থাকছেনা এই পর্বেও। ফলে বিশাল অংশের মানুষকে সংক্রমন বনাম বে-রোজগারে টানা পোড়েনে থাকতেই হচ্ছে।