Homeএখন খবরটানা ৮দিন ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারছেননা গ্রাহকরা ! ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের মুখে...

টানা ৮দিন ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারছেননা গ্রাহকরা ! ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের মুখে মাথায় হাত ডেবরাবাসীর

শশাঙ্ক প্রধান: আর কয়েকঘন্টার মধ্যেই ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় যশ। বিপর্যয়ের আগেই সতর্কতা জারি হয়েছে দক্ষিনের জেলাগুলিতে। সেই বিপর্যয় বৃত্তে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানাও। এই বিপদের সময় হাতে কিছুটা নগদ টাকা রাখা দরকার মনে করেই বালিচক রেলস্টেশনের কাছে হামিরপুর পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে ছুটে গিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কালিপদ দে। কিন্তু হতাশ হয়ে সোমবারও ফিরতে হয়েছে তাঁকে। শুনতে হয়েছে সেই একই গল্প, লিংক নেই। গত আট দশদিন ধরেই এমনই হয়রানির শিকার বিষ্ণুপদ শী এবং রসিক নগরের রামপদ মাসন্ত, অন্তলা গ্রামের পুতুল রানী পালরা। আক্ষেপের সঙ্গে জানিয়েছেন,” আমরা প্রতিদিন হন্য হয়ে ঘুরছি নিজেদের টাকা নিজেরা তুলতে পারছি না। আমরা সংসার চালাবো কি করে?”

কেউ যেমন ঝড়ের পূর্বাভাস মানুষ অর্থের জন্য ব্যাংকে ছুটে এসেছেন, কেউ আবার এসেছেন বাড়িতে অসুস্থ রোগীর ওষুধ কিনতে হবে বলে। কেউ আবার পেনশন অথবা সামান্য সঞ্চয় থেকে মুদি দোকানের মাস কাবারির টাকা মেটানোর তাগাদা পেয়েছেন, কেউ ইলেক্ট্রিকের বিল মেটাবেন। এরকম অসংখ্য সাধারণ মানুষ প্রতিদিন প্রখর রোদে ব্যাংকে আসছেন কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁদের কিছু করবার নেই। যদি কারো চেক বই থাকে তাহলে অন্য কোন শাখায় গিয়ে আধার কার্ড দেখিয়ে টাকা তুলতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ব্যংক জানাচ্ছে বালিচক ফ্লাইওভার নির্মাণকে কেন্দ্র করে রাস্তা খুঁড়ে ড্রেন তৈরীর কাজ চলছে। সেইজন্য বিএসএনএলের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে। তার ফলে ব্যাংকে কোন লিংক আসছে না।

সোমবার ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির খবর পেয়েই ব্যংকে হাজির হয়েছিলেন বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি ভারতচন্দ্র দে এবং সম্পাদক কিংকর অধিকারী। কথা বলেন পরিষেবা বঞ্চিত গ্রাহক এবং ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেন। হামিরপুর পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের ম্যানেজার তাঁদের বলেন, তাঁরা এই সমস্যাটি তাঁদের হেডঅফিসে জানিয়েছেন এবং বিএসএনএল দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন কিন্তু এখনো কোনো কাজ হয়নি। ম্যানেজার বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে বসে রয়েছি।

স্টেশন উন্নয়ন কমিটির পক্ষ থেকে ম্যানেজারকে জানানো হয়েছে শুধু চিঠি লিখে দিলেই হবে না বাস্তবে সমস্যাটি সমাধানের জন্য প্রয়োজনে আরো সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং অতি দ্রুত যাতে এই সমাধান হয় তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বালিচক ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন কাজ চলবে তার জন্য ব্যাংকের পরিষেবা বন্ধ থাকতে পারে না। প্রয়োজনে টেম্পোরারি পদ্ধতিতে বিএসএনএলের কানেকশন দিয়ে পরিষেবা চালু রাখতে হবে। এই রকম একটা দুর্যোগের পরিস্থিতিতে এবং প্রান্তিক মানুষ তারা যদি দিনের পর দিন এইভাবে টাকা না পেয়ে হন্য হয়ে ঘুরে বেড়ায় তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “উড়ালপুল নির্মাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই কাজ করতে হচ্ছে ঠিক কিন্তু তার জন্য আলাদাভাবে ওই অংশটুকু বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ কেন তার গুলিকে জুড়ে দিয়ে জরুরী পরিষেবা সচল রাখছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ব্যংক, বিএসএনএল কিংবা উড়ালপুল নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সংস্থা সবাই উদাসীন।তাছাড়া উড়ালপুল নির্মাণের মত বড় কাজে সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ, পানীয়জল, টেলি সংযোগের মত ব্যবস্থাগুলির সাময়িক বিপর্যয় ঘটতেই পারে ধরে নিয়েই তো সম্ভাব্য সংস্থা গুলির মধ্যে সমন্বয় থাকা দরকার যাতে বিপর্যয় ঘটলে দ্রুত তার মেরামতি সম্ভব। দিনের পর দিন গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হবেন কেন?”

বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও অনুরোধ জানিয়েছে বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটি। বিষয়টি ডেবরা ব্লকের বিডিও-কে জানানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular