শশাঙ্ক প্রধান: তাপ বাড়লেই সবং যেন তাপমান যন্ত্র!তাপমান যন্ত্রে যেমন ধরা পড়ে তেমনই ধরা পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুর থানার সবংয়ে। দিন ২০ আগে বিধানসভার ভোট গননা কালে প্রচন্ড গরমে বোমা বিস্ফোরণে কেঁপেছিল সবং। শনিবার ফের উত্তপ্ত দুপুরে বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল এক তৃনমূল কর্মীর গোয়ালঘর যার অভিঘাতে একটি অবলা জীবের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই নিয়ে গত ২০দিনে তিনবার বোমাকান্ড সবংয়ে আর দুবার বিস্ফোরণ। মাত্র ৪দিন আগেই এই সবংয়েরই বিষ্ণুপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা থেকে এক ড্রাম ভর্তি বোমা উদ্ধার হয়েছিল।
২০ দিন আগের বিস্ফোরণের সঙ্গে শনিবারের খুবই মিল। দুটি বিস্ফোরণ হয়েছে সবং থানার মোহাড় গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় এবং আগের মতই শনিবারের বিস্ফোরণটি ঘটেছে তৃনমূল কর্মী সমর্থক পরিবারেই। শনিবার দুপুরের বিস্ফোরণটি ঘটেছে উত্তর নিমকি মোহাড় গ্রামের এক সক্রিয় তৃনমূল কর্মী বাদল প্রধানের গোয়াল ঘরে। আর অবশ্যই দুটি বিস্ফোরণই হয়েছে প্রচন্ড রৌদ্র তাপে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভর দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বাদল প্রধানের বাড়ির গোয়ালে। বিস্ফোরণের অভিঘাতে গোয়াল ঘরের দেওয়াল ধসে পড়ে এবং হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে গোয়ালঘরের চালা। পাশে থাকা একটি শৌচালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গোয়ালঘর চাপা পড়ে একটি গরুর মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
ঘটনার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসে। এদিকে ঘটনার পরই ওই জায়গাটি ঘিরে ফেলে কিছু ব্যক্তি। তারা স্থানীয় মানুষকে কাছে যেতে বাধা দেয় বলেও জানা গেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল- বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ঠিক একই ঘটনা ঘটনা ঘটেছিল দিন কুড়ি আগে মোহাড় গ্রামে। সেখানেও এক তৃনমূল সমর্থক পরিবারের ব্রয়লার ফার্মে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে ভর দুপুরে।
তৃনমূলের অভিযোগ, বিজেপি দুষ্কৃতীরা চক্রান্ত করে তৃণমূলকে ফাঁসানোর জন্য ওই গোয়াল ঘরে বোমা রেখে গিয়েছিল। এই ঘটনার সঙ্গে কোন তৃণমূল কর্মী জড়িত নয়। ঠিক এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছিল সেই তৃনমূল সমর্থক পরিবারের ব্রয়লার ফার্মে বিস্ফোরণের পর।
বিজেপির সবং পূর্ব মন্ডলের সভাপতি উত্তম সামন্ত অভিযোগ করেছেন, “গোটা মোহাড় জুড়েই এই বোমা মজুত রয়েছে। পুলিশ চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে এই বোমাগুলি না উদ্ধার করলে কোনওদিন আরও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “এলাকায় বিজেপির কর্মীরা নেই বললেই চলে। তাঁদের মোটরবাইক, সাইকেল ইত্যাদি ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। যারা সন্ত্রাসের ভয়ে নিজের ঘরেই থাকতে পারছেনা তারা অন্যের ঘরে বোমা রাখতে যাবে কী করে?”
ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সবং থানার পুলিশ। উল্লেখ্য গত বুধবারই বিষ্ণুপুর গ্রামপঞ্চায়েতের জগন্নাথচক গ্রাম থেকে প্রচুর বোমা উদ্ধার করেছিল পুলিশ।