নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা প্রকোপের কারনে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন বুথে গিয়ে ভোট না দেওয়ার জন্য। সেই পরামর্শ মেনেই জীবনে প্রথমবার ভোট দেননি ৭৭ বছর বয়সী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রক্ষা হলনা তাও। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন তিনিও অবশেষে। শুধু তিনি একাই নন, সংগে সংক্রমিত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যও। সংক্রমিত হয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী তথা চিকিৎসাও। তবে আশার কথা একটাই, এখনও অবধি স্বল্পমাত্রায় সংক্রমিত তিনি আর সেই কারনেই বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বুদ্ধবাবু। তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা এখনও অবধি ঠিকই আছে। যদিও তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যর শ্বাসকষ্টের কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাঁর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷
একটি সূত্র জানাচ্ছে কিছুদিন ধরেই তাঁদের শরীরে করোনার বেশ কিছু উপসর্গ লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এরপরেই তাঁদের করোনা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। জানা গিয়েছে, প্রথমে করোনা সংক্রমিত হন মীরা ভট্টাচার্য। এরপরই করোনার রিপোর্ট পজেটিভ আসে বুদ্ধবাবুর। একই সঙ্গে করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ বলে চিহ্নিত হয়েছেন তাঁর সহকারিও। তবে মীরাদেবী অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৮০-৮৫ মধ্যে ঘোরাফেরা করছে বলেই খবর।
এমনিতেই সিওপিডিতে গুরুতর অসুস্থ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। যে কারনে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগেন তিনি। বাড়িতেই রয়েছে অক্সিজেনের ব্যবস্থা এবং প্রায়ই সেই সাহায্য নিতে হয়। তাঁর শরীরের ওপর নজরদারি করার জন্য একজন সহকারি কাম চিকিৎসক থাকেন। কিছুদিন আগেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বেলভিউ ক্লিনিকে ভর্তি ছিলেন বুদ্ধবাবু। এছাড়াও, একাধিক অসুস্থতা রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। সেকারণে অনেকদিন ধরেই তিনি প্রায় ঘরবন্দি। এই প্রথম ব্রিগেডের সমাবেশে উপস্থিত থাকতে পারেননি। আর সেই কারণেই বুথে গিয়ে তাঁকে ভোটদানের অনুমতি দেননি চিকিৎসকেরা৷ কারন তাঁদের আশঙ্কা ছিল ভোট দিতে গিয়ে কোনও ভাবে ভাইরাসের সংস্পর্ষে এলে জটিল হতে পারে পরিস্থিতি। যদিও তাতেও এড়ানো গেলনা করোনার থাবা। কমিশন জানিয়েছিল বাড়িতে গিয়েই তাঁরা ভোট নিতে পারেন কিন্তু বুদ্ধবাবু রাজি হননি। তরফে বুদ্ধবাবুকে বাড়ি থেকে ভোটদানের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
অন্যদিকে সিপিএম সূত্রে খবর, বুদ্ধবাবুর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা এখনও উদ্বেগজনক নয়। তবে যেহেতু তিনি দীর্ঘদিনের সিওপিডি-র রোগী তাই তাঁকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করাতে চাইছেন না সিপিএম নেতৃত্ব। এদিকে বুদ্ধবাবু হাসপাতালে যেতে রাজি নন বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। করোনার প্রথম ঢেউয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী সহ অনেকে। ফলে ঝুঁকি নিতে চাইছেননা তাঁরা।