নিজস্ব সংবাদদাতা:ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানা এলাকার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে এক শবর জনজাতির বৃদ্ধা বিধবাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে অত্যাচারের আভিযোগ উঠল বিজেপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে। আভিযোগ আরও যে বেধড়ক মারধর করার পাশাপাশি ওই বৃদ্ধার শরীরে গরম রডের ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়। বৃদ্ধার আভিযোগ স্থানীয় এক বিজেপি নেতা ও তার সাকরেদরাই এই ঘটনায় যুক্ত। পুলিশ মঙ্গলবার তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করলেও মূল অভিযুক্ত ওই বিজেপি নেতা পলাতক বলেই জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ঘটনাটি ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার ভালকিশোল গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধা বিধবা চম্পা আড়ি কে গ্রামের কয়েকজন ডাইনি হিসেবে সন্দেহ করতে শুরু করেছিল। প্রাচীন উপজাতি শবর ওই মহিলা বাড়িতে একাই থাকতেন। সম্প্রতি ডাইনি অপবাদ দিয়ে গ্রামের কিছু লোকজন সহ স্থানীয় বিজেপি নেতা রবীন্দ্র হাঁসদা চম্পা দেবী কে হেনস্থা শুরু করেছিল। রবিবার সন্ধ্যাবেলা গ্রামের কয়েক জন পুরুষ ও মহিলা তাকে পাড়ার একটি স্থানে তুলে নিয়ে গিয়ে রবীন্দ্র হাঁসদা বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। লাঠি নিয়ে মারপিট করার সাথে সাথে লোহার রড গরম করে তাকে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে।
জোর করে তাকে মানতে বাধ্য করা হয় যে সে ডাইনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মারধর করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাড়ির কাছে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় গ্রামের লোকজন। পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাতেই ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ মোট তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার তাদের ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। তবে পুলিশ রবীন্দ্র হাঁসদাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলেই জানা গেছে। গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। যদি ঘটনা সত্যি হয় তবে দল কোনও ভাবেই এর দায় নেবেনা।
ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সাধারন সম্পাদক অবনী কুমার ঘোষ বলেন, ‘গ্রামীন কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে এই ঘটনা কেউ ঘটালে আমরা তাঁকে সমর্থন করবনা। আমার জানা নেই এমন কোনও ঘটনা আমাদের দলের কোনও ব্যক্তি ঘটিয়েছে কিনা। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক যদি সত্যি এই ঘটনা ঘটে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক আমরা প্রশাসনকে সমর্থন করব।”