নিজস্ব সংবাদদাতা: নিজের পয়সায় মদ খাবে আর বাবার পয়সায় ভাত। আর সেই ভাতের জন্য চালের টাকা না দেওয়ায় ছেলের হাতে খুন হলেন বাবা। খড়গপুর গ্রামীনের কেঁঠিয়া তাঁতি পাড়ায় এমনই মর্মান্তিক ঘটনার স্বাক্ষী থাকলেন স্থানীয় প্রতিবেশীরা। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ছেলেকে। উদ্ধার করা হয়েছে খুনের জন্য ব্যবহৃত কুড়ালটিও। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত ব্যক্তির নাম কালাচাঁদ পাতর (৬৫)। ঘটনায় ছেলে বিদ্যাধর পাতরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে ঘটনাস্থল খড়গপুর শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দুরে কৌশল্যা থেকে মকরামপুর যাওয়ার রাস্তায় বেনাপুর থেকে ১কিলোমিটার আগে। প্রধান সড়কের ওপর অবস্থিত একটি পেট্রলপাম্পের ঠিক পেছনেই কেঠিয়া গ্রামের তাঁতিপাড়া যেখানে ওই পাতর পরিবারের বাস। বিয়ে করার পর বিদ্যাধর আলাদা পরিবার নিয়ে একই জায়গায় থাকত। একটি প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকত কালাচাঁদ। বাবা-ছেলে দুজনেই দিন মজুরি করে সংসার চালাত। বিদ্যাধর কখনও ঠিকাদারের আওতায় কাজ করত কখনও আবার ভ্যান রিষ্কা চালাত।
প্রতিবেশীদের বক্তব্য, বিদ্যাধর দিন মজুরি করে মোটামুটি উপার্জন করলেও প্রচুর পরিমানে মদ্যপ ছিল, উপার্জনের পয়সা বেশির ভাগই উড়িয়ে দিত মদ খেয়ে। ফলে সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। মদ খেয়ে খেয়ে কিছুটা মানসিক সমস্যাতেও ভুগতেন। অভাব অনটন নিয়ে স্ত্রীর সাথে সাংসারিক অশান্তি লেগেই থাকত।
স্থাাানীয়রা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই একই ঘটনার সূত্রপাত হয়। সংসারের জন্য চাল না কিনেই মদ খেয়ে বাড়ি ফেরে বিদ্যাধর। বাড়িতে ফিরলে স্ত্রী চালের কথা জিজ্ঞেস করলে প্রথমে তার সঙ্গে বচসা শুরু হয়।
এরপর বিদ্যাধর যায় বাবার কাছে। চাল অথবা চালের টাকা চাইতে। কালাচাঁদ ছেলেকে জানিয়ে দেন যে তাঁর ঘরে চালও নেই আর টাকাও নেই। তাছাড়া আগেও বিদ্যাধর যে বিভিন্ন কারনে টাকা নিয়েছে ফেরৎ দেয়নি সে প্রসঙ্গও ওঠে।
বিষয়টি নিয়ে তুমুল বচসার শুরু হয় বাবা ছেলের মধ্যে। সেই বচসার মধ্যেই বিদ্যাধর বাড়িতে থাকা একটি কুড়ুল নিয়ে বাবার মাথায় আঘাত করে। মাটিতে পড়ে যান কালাচাঁদ। কিছুক্ষনের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। প্রতিবেশীদের মারফৎ খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছায়। মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি বিদ্যাধরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবার খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে মৃতের ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা। ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।