নিজস্ব সংবাদদাতা: কুখ্যাত মাওবাদী নেতা হিদমা লুকিয়ে আছে এই এলাকায়। এমনই খবর ছিল সিআরপিফের কাছে। ছত্তিশগড়ের দক্ষিণ সুকমার বাসিন্দা ফিলিপিন্সে জঙ্গি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৩৮ বছরের হিদমাকে খতম করতে পারলে ছত্তিশগড় সহ সংলগ্ন এলাকায় মাওবাদীদের কোমরভেঙে দেওয়া যাবে এমনই মনে করেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু ফাঁদটা যে সম্ভবতঃ হিদমারই পাতা সেটা বুঝতে অনেক দেরি হয়েগেছিল। ততক্ষনে লাশ হয়ে গেছেন ২৩ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান।
জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকালে ছত্তিশগড়ের বিজাপুর ও শুকনা জেলার সীমান্তে জোনাগুড়া নামক জঙ্গল ও পাহাড় বেষ্টিত এলাকায় যখন ৪৫০ জনের জওয়ানের দলটি তার আগের দিন রাত সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হওয়া তল্লাশি অভিযান সেরে ফিরছিলেন। সিআরপিএফ ছাড়াও এই তল্লাশি অভিযানে সামিল হয়েছিলেন কোবরা এবং স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের মোট ১৭০০ জওয়ান। তারই মধ্যে ক্যাম্পের দিকে ফিরে আসা ওই ৪৫০ জওয়ান পড়ে যান মাওবাদীদের ঘেরা টোপে। দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী অংশে একটি ইউ আকৃতির করিডোরের মধ্যে দিয়ে যখন জওয়ানরা ফিরছিলেন তখনই প্রায় ৪০০ জনের মাওবাদী দলটি পাহাড়ের মাথা থেকে গুলি বর্ষণ শুরু করে। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে পাল্টা জবাব দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনীও। ৯ জন মাওবাদীকে গুলি করে মারে সিয়ারপিএফ জওয়ানরা কিন্তু অবস্থানগত সুবিধায় লাভবান হয় মাওবাদীরাই। খবর পেয়ে ছুটে আসেন অন্য জওয়ানরাও। শুরু হয় এলাকা কর্ডন করে তল্লাশি কিন্তু রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে গা ঢাকা দেয় মাওবাদীরা।
শনিবারই উদ্ধার হয়েছিল ৫জন জওয়ানের দেহ। রবিবার সকালে আরও ১৭ জন জওয়ানের দেহ উদ্ধার করা হয়। ৩০জন গুলিবিদ্ধ জওয়ানকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে যার মধ্যে আরও ১জন মারা যান। ছত্তিশগড় পুলিশের বস্তার রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল সুন্দররাজ পি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, এই ২৩ জনের মধ্যে ৮জন ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড, ৭জন কোবরা বাহিনী, ৬জন স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ও ১জন সিয়ারপিএফের বস্তার ব্যাটালিয়ানের সদস্য রয়েছে।
জানা গেছে মাওবাদী জঙ্গি গোষ্ঠির শীর্ষ নেতা হিদমা এই এলাকায় ১৭দিন ধরে তার বাহিনী নিয়ে অবস্থান করছে এমন একটি খবর কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্র মারফৎ এসে পৌঁছায়। এরপরই মাওবাদী বিরোধী অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গা থেকে বাহিনীর সদস্যদের একত্রিত করে অভিযান শুরু হয়। সম্ভবত এই অভিযানের খবর নিজস্ব সূত্র মারফৎ পেয়ে যায় মাওবাদীরাও। আসন্ন সংঘর্ষের সম্ভাবনায় আগে ভাগেই দুটি গ্রামকে তারা খালি করে দেয়। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলে নির্বিচারে ফায়ারিং। সিয়ারপিএফ সূত্রে খবর মাওবাদীদের দলটিকে এখান থেকে সরিয়ে দিয়ে মাওবাদীদের করিডর বলে পরিচিত এই স্থানে একটি ক্যাম্প করার পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী।
এদিকে প্রচারের শেষদিন অসমে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কথা ছিল এদিন সারভোগ, জালুকবাড়ি, ভবানীপুরে প্রচার করবেন। কিন্তু অসমে বিজেপির কো–অর্ডিনেটর তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জীতেন্দ্র সিং জানান, ছত্তিশগড়ে বিজাপুরে মাওবাদী হামলা হয়েছে।তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তিনটি সভা করবেন না। একটি সভা করেই দিল্লিতে ফিরে যাবেন।প্রশাসন সূত্রে খবর, দিল্লিতে গিয়ে মাওবাদী হামলার প্রেক্ষিতে করুরি বৈঠকে বসার কথা তাঁর।