নিউজ ডেস্ক: করোনা হাসপাতালে মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় সাড়ে ১২ টা নাগাদ এই আগুন লাগার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। মুম্বাইয়ের ভাণ্ডুপে কোভিড হাসপাতালে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এখনও আশঙ্কা করা হচ্ছে কয়েকজনের আটকে থাকার।
এদিন ভাণ্ডুপের ড্রিম মলের দোতলায় আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে মলের ভেতরে সানরাইজ হাসপাতালে। হাসপাতালটি তিন তলায় রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই হাসপাতালে ৭০ জনের বেশি করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন। আগুন ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। দমকলের ২৩টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। ১ থেকে ৪ তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বেগ পেতে হিমিশিম খেতে হয় দমকল কর্মীদের। শুক্রবার সকাল পর্যন্তও ছলছে উদ্ধার কাজ। তবে কীভাবে লাগল এই আগুন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেই সময় হাসপাতালটিতে ৭৬ জনের কিছু বেশি সংখ্যক করোনা আক্রান্ত ভর্তি ছিলেন। ড্রিমস মল সানরাইজ হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ড থেকে তৎক্ষণাৎ খুব দ্রুত ৭৬ জন করোনা রোগীকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, ৭৬ জন রোগীর মধ্যে মধ্যে ৭৩ জন করোনা রোগী ছিলেন। সকলকেই দ্রুত হাসপাতাল থেকে বের করে আনা হয়। তাদের মুলুন্দ জাম্বো সেন্টারে আর ফর্টিস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আগুন লাগায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২ জনের। তবে আগুনে তাদের মৃত্যু হয়নি বলেও হাসপাতাল সূত্রে খবর।
প্রথমে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরে আরও ৪ জনের দেহ উদ্ধার হয়। বৃহন্নুম্বাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের (বিএমসি) বিপর্যয় পরিচালন সেল দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে আগুনের কারণে তাদের মৃত্যু হয়নি। পরে, বিএমসি ট্যুইট করেছে যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ জনে।
বিএমসি কর্তৃক এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মুম্বাই দমকল বিভাগ ও মুম্বাই পুলিশের কাছে তারা কৃতজ্ঞ যে প্রাণ বাঁচাতে তারা এইভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছর এই হাসপাতালটি কোভিড পরিস্থিতিতে চালু হয়েছিল। ফায়ার লাইসেন্স, নার্সিং হোম লাইসেন্স ইত্যাদির মতো সমস্ত বাধ্যবাধকতায় এটি কাজ করছে। হাসপাতালের কর্মীরা হুইল চেয়ার ও বিছানায় থাকা রোগীদের নিরাপদে আশ্রয়স্থলগুলিতে সরিয়ে এবং ফায়ার ড্রিল অনুসরণ করে একটি দুর্দান্ত কাজ করেছেন।”
মুম্বাইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকার বলেন, ‘ আমি এই প্রথম দেখলাম, কোনও মলের ভিতর হাসপাতাল রয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ড খুবই ভয়াবহ ঘটনা। মলে আগুন লেগে যাওয়ায় তা দ্রুত হাসপাতালে ছড়িয়ে যায়। ফলে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে কীভাবে এই আগুন লাগল। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এখনও উদ্ধার কাজ চলছে।
প্রসঙ্গত, মর্মান্তিক এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সেই সময় ঘটল যখন মহারাষ্ট্রে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। মুম্বাইতে নতুন করে ৫,৫০৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নতুন করে ৩০ হাজারেরও বেশি।