Homeএখন খবরলোকসভার দলনেতার পদ থেকে অপসারিত অধীর রঞ্জন!খবরের নামে গুজব রটানো, সংবাদমাধ্যমকে এক...

লোকসভার দলনেতার পদ থেকে অপসারিত অধীর রঞ্জন!খবরের নামে গুজব রটানো, সংবাদমাধ্যমকে এক হাত নিলেন বহরমপুর সাংসদ

অশ্লেষা চৌধুরী: কয়েকদিন আগেই আব্বাস সিদ্দিকীর আইএসএফের সঙ্গে জোট নিয়ে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আনন্দ শর্মার ট্যুইট যুদ্ধ সামনে এসেছিল। তারই সঙ্গে জুড়ে গেল যে অধীরের জায়গায় লোকসভার দলনেতা হচ্ছেন রভণীত সিং বিট্টু। ব্যস, সব মিলিয়ে দাঁড় করিয়ে দেওয়া গেল যে লোকসভার দলনেতার পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে। বৃহস্পতিবার দিনভর এরকমই খবর ঘুরে ফিরে আসছিল সংবাদ মাধ্যমে। বিষয়টিকে খবরের নাম করে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে এক হাত নিয়ে নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বাংলার নির্বাচনের বাজারে গুজব ছড়ান যেন একটা প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বাংলার সংবাদ মাধ্যমের ওপর একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন মুর্শিদাবাদের রবীনহুড।

বৃহস্পতিবার বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার পদ থেকে অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে সরিয়ে রভণীত সিং বিট্টুকে সেই স্থান দেওয়া হয়। আর এই কথাতেই চটে যান তিনি। এক রাশ ক্ষোভ উগরে বলেন, “এদিন সকাল থেকেই বাংলায় একটা গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে,বাংলায় অধীর চৌধুরী নামক কংগ্রেসের যে নেতাকে ম্যাডাম সোনিয়া গান্ধী পার্লামেন্টের লোকসভায় কংগ্রেসের যে নেতা নির্বাচন করেছিলেন, সেই পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। এইভাবে কাউকে সরানো যায় না আর সরানোর কারণও নেই কোনও। শুধু শুধু বিষয়টি নিয়ে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে।“

পাশাপাশি তিনি এও বলেন, “পার্লামেন্টে কংগ্রেসের দল পরিচালানার জন্য একটি কমিটি আছে, যেখানে ৫ জন সদস্য রয়েছেন, যার মাথা আমি। আমার নীচে আরও চারজন রয়েছেন, তারা হলেন কংগ্রেসের উপ দলনেতা, মুখ্য সচেতক এবং উপ মুখ্য সচেতক পদে রয়েছেন ২ জন। যেহেতু তিনি, উপদলনেতা, মুখ্য সচেতক ও উপ মুখ্য সচেতক সকলেই আসাম, কেরল ও তামিলনাড়ুতে ভোটের কারণে ব্যস্ত থাকবেন, তাই সেই সময় দলের কাউকে তো একটা দায়িত্ব দিতে হবে, তাই সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাকি যিনি আছেন দলের সদস্য আমাদের ছোট ভাইয়ের মতন বিট্টুকে।” সেই সাথেই মমতার উপর আক্রমণ হওয়ার খবরকে গুজবের খবর বলে আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি, সংবাদমাধ্যমকে ভুল খবর পরিবেশন না করারও অনুরধ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

প্রসঙ্গত, লোকসভায় কংগ্রেসের অফিস বিয়ারার হলেন পাঁচ জন। অধীর চৌধুরী দলনেতা, গৌরব গগৈ উপ দলনেতা। এ ছাড়া কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক পদে রয়েছেন কোদিকুন্নি সুরেশ এবং উপ মুখ্য সচেতক মানিক টেগোর ও রভণীত সিং বিট্টু।

গত ৮ই মার্চ থেকে সংসদে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। আর বাংলা, আসাম, কেরল, তামিলনাড়ু সব জায়গাতেই রয়েছে নির্বাচন। ফলে গৌরব গগৈ (কংগ্রেসের ডেপুটি নেতা) ও কোদিকুন্নি সুরেশ কেরলার ভোটের জন্য এবং মানিক টেগোর তামিলনাড়ু ভোটের জন্য দিল্লি আসতে পারছেন না। এমতাবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেস সহ একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারা সংসদ মুলতুবির আবেদন জানিয়েছেন। এদিকে গৌরব ও অধীরের ব্যস্ত থাকায় কংগ্রেসের অন্দরে সংশয় তৈরি হয়েছিল লোকসভায় কে দলের দায়িত্ব সামলাবেন, তা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে আপাতত লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসাবে নিয়োগ করা হল রভণীত সিং বিট্টুকে।

উল্লেখ্য, রভণীত সিং বিট্টু পাঞ্জাবের সাংসদ। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে লুধিয়ানা থেকে সাংসদ হন বিট্টু। পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ান্ত সিংয়ের নাতি বিট্টু এর আগে আনন্দপুর সাহিব কেন্দ্র থেকে ২০০৯ সালে জিতেছিলেন। সেইসময় পাঞ্জাব যুব কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেন এবং ২০১২ সালে রাজ্যে মাদক প্রতিরোধী বোর্ড গঠনের জন্য অনশনও করেছিলেন। এরপর গত অগাস্টে লোকসভায় কংগ্রেসের মুখ্যসচেতক হন। সম্প্রতি কৃষক আন্দোলনের সমর্থন জানানোকে কেন্দ্র করে এবং সিংঘু সীমান্তেও আন্দোলনকারী কৃষকদের সমর্থন জানাতে গিয়ে আহত হওয়ার পর ফের নতুন করে চর্চায় আসেন বিট্টু।

RELATED ARTICLES

Most Popular