শশাঙ্ক প্রধান: আবার জেগে উঠেছে সিবিআই। নির্বাচনের ঠিক আগেই রাজ্য সভার সাংসদ তথা সবং বিধানসভা থেকে তৃনমূল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বী মানস ভূঁইয়াকে জেরা করতে চেয়ে নোটিশ পাঠালো সিবিআই। একটি অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান বা চিটফান্ড ‘আইকোর’ নামক প্রতিষ্ঠানের বেআইনি কাজকর্ম সম্পর্কে তদন্তের স্বার্থেই সিবিআই ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় বলে নোটিশ পাঠিয়েছে বলেই জানা গেছে। যদিও এরকম কোনোও নোটিশ তাঁরা পাননি বলেই জানিয়েছেন মানস ঘনিষ্ঠ সবং তৃনমূলের এক নেতা।
সবং তৃনমূলের মানস ঘনিষ্ঠ ওই নেতা বলেন, ‘ সিবিআইয়ের তরফে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে আমরাও শুনেছি। সেই নোটিশ নাকি পাঠানো হয়েছে মানসদার মেলে। কিন্তু আমরা এখনও অবধি মেল সার্চ করে সেরকম কিছু পাইনি।”
যদিও সিবিআই যে নোটিশ পাঠিয়েছে এই ঘটনা সত্যি। জানা গেছে অইকোর কান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই নোটিশ যেখানে তাঁকে শীঘ্রই সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সিবিআই সূত্রে খবর এই লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তদন্তের সময় অনেকেই ভূঁইয়ার নাম নিয়েছে। পাশাপাশি কয়েকদিন আগেই প্রকাশ্যে আসা অইকোরের একটি অনুষ্ঠানের ভিডিওতে মানস ভূঁইয়া সহ একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে। এছাড়াও অইকোর কান্ডের তদন্তে মানস ভূঁইয়ার নাম উঠে এসেছে। সিবিআইয়ের ধারনা ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে।
এদিকে নির্বাচনের ঠিক মুখেই ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তত্ত্ব কাজ করছে বলেই তৃনমূলের মনে হয়েছে। মানস ঘনিষ্ঠ ওই নেতা বলেছেন, “অঙ্কটা জলের মতই পরিষ্কার। নির্বাচনের মুখে ভূইঁয়াকে আটকানোর মরিয়া প্রচেষ্টা চলছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে। নির্বাচনে যাতে ঠিক মত প্রচার করতে মানসবাবু না পারেন তাই এই খেলা শুরু করা হয়েছে। আমাদের মনে আছে তৃনমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই এক নেতা সবংয়ে সভা করতে এসে ওই সংস্থার নাম নিয়ে ভূঁইয়াকে জড়িয়ে ছিলেন।”
ওই নেতা আরও বলেন, “এ ছাড়াও বিজেপির এক নেত্রী মানস বাবুর নাম করে তাঁকে জেলে পাঠানো হবে হুমকি দেন। তখন থেকেই মানস ভূঁইয়াকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছিল। এই প্রতিহিংসার রাজনীতি আমাদের সুবিধা করে দিয়েছে। আমরা এই বিষয়টাকেও ভোটের ইস্যু করব। মানস ভূঁইয়ার ওপর আঘাত এলে সবং সর্বোত শক্তি নিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে। এবারেও ব্যতিক্রম হবেনা।”
এই ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে গত লোকসভা নির্বাচনের ঠিক কয়েকদিন আগেই রাজ্যের গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিশ দিয়েছিল ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ভারতী ঘোষকে। ঘোষের নাকতলার বাড়ি থেকে শুরু করে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের ভাড়া বাড়িতে ঘনঘন পৌঁছে ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করত সিআইডি। ঘোষ দাবি করেছিলেন, তাঁর প্রচার কার্য বিঘ্নিত করার জন্যই এই প্রতিহিংসা চালানো হচ্ছে। মাত্র ২বছর পর এবার সেই ঘটনারই কী পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে?