Homeএখন খবরআনিসুর মামলায় জোর ধাক্কা রাজ্যের, ছেড়ে দিয়েও গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হল পুলিশ!...

আনিসুর মামলায় জোর ধাক্কা রাজ্যের, ছেড়ে দিয়েও গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হল পুলিশ! বে আব্রু শাসকের মুখ

তমলুক হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর

নিজস্ব সংবাদদাতা: পুলিশ আধিকারিক অমিতাভ মালিক হত্যায় অভিযুক্ত বিমল গুরুং আর জঙ্গলে একাধিক হত্যায় অভিযুক্ত ছত্রধর মাহাত শুধু সরকারের জামাই আদরেই আছেন এমনটা নয় তাঁরা ২০২১য়ের নির্বাচনের জন্য তাল ঠুকছেন। সেই একই পথে হাঁটতে গিয়ে এবার জোর ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। দলীয় নেতা খুনে অভিযুক্ত আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে তাঁকে জেল থেকে ছাড়িয়ে মালা পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তৃনমূল কর্মীরা কিন্তু হাইকোর্টের আদেশে ফের তাঁকে হাতকড়া পরাতে বাধ্য হল পুলিশ। মঙ্গলবার নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।

মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তরুণ টগবগে যুবক তৃনমূল কংগ্রেসের যুব নেতা কুরবান শা খুনের মামলায় প্রাথমিক অভিযুক্ত আনিসুর রহমানের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাজ্য সরকার। দু’বছর আগে দুর্গাষ্টমীর রাতে নিজের মাইশোরা এলাকার খুন হয়েছিলেন কুরবান। রাত ন’টা নাগাদ নিজের দলীয় কার্যালয়ে বসে সহকর্মীদের সঙ্গে গল্প করছিলেন কুরবান। সেই সময় গুলিতে ঝাঁজরা করে দেওয়া হয় তাঁকে। এই মামলায় পুলিশ বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। যদিও এটা ঘটনা যে এই ঘটনায় তিনি আদৌ যুক্ত কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অভিযোগ তৃনমূলের চাপেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তৃনমূলের একদা জেলা যুব সভাপতি দল থেকে বিতাড়িত হওয়ার পরই বিজেপির আশ্রয়ে যান এবং পাঁশকুড়ায় বিজেপির সংঠনকে শক্তিশালী করে তোলেন। তাঁকে কুরবান শাহ মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার পেছনে তৎকালীন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর চক্রান্ত ছিল বলে দাবি করেন আনিসুর এবং বিজেপি। ঘটনা চক্রে শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপিতে। তাই তাঁকে মোকাবিলার জন্য অনিসুরকে জেল থেকে ছাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করে তৃনমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য সরকার।

রাজ্য সরকার তমলুক আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়ে আবেদন করে। এদিকে ভেতরে ভেতরে আনিসুরকে তৃনমূলে যোগদান করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। জেল থেকে অনিসুরকে তমলুক হাসপাতালে এনে প্রায় রাজকীয় মর্যাদায় রাখা হয় বলে অভিযোগ। সেখান থেকে আনিসুর নিজের ফেসবুকে আপডেট দিতে থাকেন যে, শুভেন্দু অধিকারীকে মোকাবিলার জন্য তিনি আসছেন। তমলুক আদালত রাজ্যের আবেদনে সাড়া দেন। মঙ্গলবার তৃনমূল কর্মীরা রীতিমত মালা পরিয়ে তমলুক হাসপাতাল থেকে আনিসুরকে বের করে নিয়ে যান। উল্লাসে ফেটে পড়েন আনিসুর আর তৃনমূল কর্মীরা। এরপরই সাদা এসইউভিতে আনিসুর রওনা দেন কোলাঘাটে। কিন্তু এরপরই ঘটে বিপর্যয়।

তমলুক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নিহত কুরবান শার আইনজীবী। তিনি দাবি করেন একজন খুনের আসামীকে কী করে রাজ্য সরকার মামলা থেকে মুক্তি দিতে পারে যেখানে সরকার নিজেই এই মামলা করেছে এবং একাধিকবার অনিসুরের জামিনের বিরোধিতা করেছে? ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কলকাতা আদালত জানিয়েদেন এই ধরনের ঘটনা ঘটলে আদালতের প্রতি আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। এখুনি তাঁকে গ্রেপ্তার করা হোক। উচ্চ আদালতের রায়ের পরেই ফের কোলাঘাট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গোটা ঘটনায় মুখ পুড়েছে রাজ্য সরকার এবং রাজ্য পুলিশের। কারন হয়ত এটা ঠিকই যে আনিসুর একটি চক্রান্তের শিকার যদি তাই হয় তবে সেই চক্রান্তের অংশীদারও এই সরকার। কেন উপযুক্ত তদন্ত ছাড়াই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং জামিনের বিরোধিতা করা হয়েছিল? আর তাঁকে এখন নির্দোষ মনে হলেও তাঁরও প্রক্রিয়া ছিল তারজন্য এত তাড়াহুড়োর কী ছিল? এই প্রশ্নগুলো এখন উঠে আসবেই। প্রয়োজনের রাজনীতির বলি কেন হতে হবে মানুষকে?

RELATED ARTICLES

Most Popular