নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজ্যে কয়েক দফায় ভোট হলে এক সময় খুশি হত তৃনমূল কংগ্রেস। তখন বাম জামানা, এখন অবশ্য বাম জামানার চাইতেও বেশি দফায় ভোট হয় আর নির্বাচনী হিংসার পরিমানও রেকর্ড ভাঙা। এখন তৃনমূল নিজেই ক্ষমতায় তাই বেশি দফায় ভোট হলে গোঁসা হয়। শুক্রবার ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষনার পরই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মমতা ব্যানার্জী আর শনিবার আরও একদম এগিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনের দিকে সরাসরি আঙুল তুলে বলেই ফেললেন, শুধু একজনকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই কমিশন দুই মেদিনীপুরের ভোট চারদফায় করেছেন। অর্থাৎ প্রথম এবং দ্বিতীয় দফায় দুই মেদিনীপুরের ভোট হচ্ছে দুদিন করেই।
শনিবার নির্বাচন কমিশনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরের দিনই দিদির দূত হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে একটি বড়সড় রোড-শো করেছেন। বর্ণময় এবং তৃণমূলের কর্মীদের ভিড়ে ঠাসা এই রোড-শোতে ৫০হাজার মানুষ সমবেত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তৃনমূল নেতৃত্ব। ঘাটালের নিমতলা থেকে বিবেকানন্দ মোড় পর্যন্ত কখনও পাকা সড়ক কখনও আবার লালমাটির ওপর দিয়ে এই রোড শো এগিয়েছে। ৪কিলোমিটার ব্যাপী ভিড়ে ঠাসা এই রোড-শো গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জীর্ণ ঘাটাল তৃনমূলকে যথেষ্ট অক্সিজেন দিয়েছে।
এই রোড-শোতে দিদির দূত লেখা হুড খোলা মিনিবাসে দাঁড়িয়ে অভিষেক ব্যানার্জী শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করেই নির্বাচন কমিশনের প্রতি অভিযোগ এনে বলেছেন, “কমিশন ভোট গ্রহণের জন্য পূর্ব মেদিনীপুরকে দুভাগ ও পশ্চিম মেদিনীপুরকে দুভাগে ভাগ করেছে। কারণ একজনের সুবিধা হবে ভোট করাতে।” তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “দুটি জেলায় ৩১ টি আসন রয়েছে, কমিশন যদি ৩১ দফাতে ভোট করায় তবুও ওদের জামানত জব্দ হবে।” উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই এই রাস্তায় পরিবর্তন যাত্রা করে গেছে বিজেপি। স্বাভাবিক ভাবেই অভিষেকের এই রোড-শোকে তারই জবাবি ধরে নিয়ে তাকে সফল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তৃনমূল নেতৃত্ব। এই কর্মসূচিতে যেমন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সভাপতি অজিত মাইতি , রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া, ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দলুই , দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইয়া,শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো সহ জেলার তৃণমূল বিধায়ক , বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন। তেমনই নিজ নিজ এলাকার মানুষ নিয়ে এসেছিলেন অনেকেই।
এদিন আগাপাশতলা অভিষেকের আক্রমনের লক্ষ্যেই ছিল শুভেন্দু অধিকারী। নাম না করে তাঁকেই কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, ‘বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে বলেন , ‘ একজনকে ইডি , সিবিআইয়ের ভয় দেখিয়েছে। ভাবছে আমিও ভয় পাব ! আমিও মানুষ । সেও মানুষ । পার্থক্য শুধু শিরদাঁড়ায় । ‘
তিনি ঘাটালের মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মেদিনীপুরের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর , মাতঙ্গিনী হাজরা ,
ক্ষুদিরাম বসু , সতীশ সামন্ত , সুশীল ধাড়ার মতো মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান , মেদিনীপুরের আত্মবলিদান , ঐতিহ্যকে , গরিমাকে যাঁরা দিল্লির বুকে বিক্রি করে এখানকার মানুষের আত্ম সম্মানকে ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছেন তাঁদের যোগ্য জবাব দিতে হবে।”