নিউজ ডেস্ক: প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় টালবাহানার পর মাদক-কাণ্ডে অভিযুক্ত রাকেশ সিংয়ের বাড়ীর ভেতরে পা দিল পুলিশ। বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী মাদককাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে রাকেশ সিং-এর নাম। সোমবার রাকেশ সিংকে হাজিরার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার তার জবাবে রাকেশ সিং জানান, জরুরি দরকারে দিল্লি যাচ্ছেন তিনি। তাঁর হয়ে হাজিরা দেবেন তাঁর আইনজীবীরা। দিনকয়েক পরে হাজিরা দিতে পারবেন তিনি।
এদিকে দুপুর আড়াইটায় আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে রাকেশের বাড়িতে যান কলকাতা পুলিশ আধিকারিকরা।সেখানে তাদের বাড়িতে ঢুকতে বাঁধা দেয় রাকেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানরা। তাদের সঙ্গে কথা বলে রাকেশ সিং এর বাড়ি ঢুকতে নিলে বেরিয়ে আসে তার আত্মীয়রা। দেখাতে বলা হয় সার্চ ওয়ারেন্ট।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা টালবাহানার পর বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের বাড়িতে ঢুকলেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। মাদক মামলায় মঙ্গলবার বিকেল ৪টেয় তাঁকে তলব করেছিল কলকাতা পুলিশ। এদিন হাজিরা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে সকালে ই-মেল করেন রাকেশ সিং। তার পরই রাকেশ সিংয়ের খোঁজে তার বাড়ি পৌছায় পুলিশ আধিকারিকরা।
ওদিকে রাকেশ সিংয়ের করা মামলায় কলকাতা পুলিশের তলবি নোটিশে স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে কলকাতা হাইকোর্ট। এর পর রাকেশ সিংয়ের বাড়ির দরজার তালা ভাঙার প্রস্তুতি শুরু করেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা।
যদিও শেষ পর্যন্ত তার দরকার পড়েনি। বিকেল ৫টা নাগাদ পুলিশ আধিকারিকদের বাড়িতে ঢোকার অনুমতি দেন রাকেশ সিংয়ের আত্মীয়রা। তবে জারি করেন কতগুলি শর্ত। জানান, বেশি পুলিশকর্মী একসঙ্গে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। তাছাড়া তল্লাশি অভিযানের ভিডিয়োগ্রাফি করবেন রাকেশ সিংয়ের পরিবারের সদস্যরাও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাকেশ সিংয়ের খোঁজ মেলেনি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার মাদকচক্রে বিজেপি যুব মোর্চা নেত্রী পামেলা গোস্বামী ও বিজেপি নেতা বলে পরিচিত প্রবীর দে, যার সাথে পামেলার ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়, তাদের গ্রেপ্তার করে নিউ আলিপুর থানার পুলিশ। তাঁর গাড়ি থেকে প্রায় ১০০ গ্রাম কোকেনের প্যাকেট এবং তাঁর ব্যাগেও পাওয়া যায় কোকেন। সেগুলিকে উদ্ধার করে বাজেয়াপ্ত করে নিউ আলিপুর থানার পুলিশ। এরপরেই কোর্ট লকআপে বিস্ফোরক অভিযোগ এনে পামেলা বলেন, কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঘনিষ্ঠ রাকেশ সিং গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন। রাকেশ ফাঁসিয়েছেন পামেলাকে। আর এতেই সরগরম হয় রাজ্য রাজনীতি। তবে ঘটনায় মুখ খোলেন রাকেশ সিং। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পামেলাকে দিয়ে বলানো হচ্ছে এসব কথা। তৃণমূল কংগ্রেস কলকাতা পুলিশকে দিয়ে এই সব কাজ করাচ্ছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মদত রয়েছে গোটা ঘটনায়। কিন্তু ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাকেশ সিংকে মঙ্গলবার বিকেল ৪টের মধ্যে দেখা করতে বলে সমন পাঠায় কলকাতা পুলিশ। তবে রাকেশ জবাবে জানান তিনি দিল্লী যাওয়ার কারণে দিনকয়েক পরে হাজিরা দিতে পারবেন। তবে সেই কথার তোয়াক্কা না করেই পুলিশ হাজির হন রাকেশের বাড়িতে।