Homeএখন খবরসাত সকালেই কেশিয়াড়ীতে বিস্ফোরন! ঝলসে গেলেন ২ব্যক্তি, ধসে পড়ল পাকা বাড়ি

সাত সকালেই কেশিয়াড়ীতে বিস্ফোরন! ঝলসে গেলেন ২ব্যক্তি, ধসে পড়ল পাকা বাড়ি

নিজস্ব সংবাদদাতা: সাত সকালেই প্রবল বিস্ফোরনে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ীতে উড়ে গেল পাকা বাড়ির একাংশ। পুরোপুরি ঝলসে গেলেন ২ব্যক্তি। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে একটি অবৈধ বাজি কারখানায় সঞ্চয় করে রাখা প্রচুর পরিমান বারুদ ও শব্দবাজিতে অগ্নিসংযোগের ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। শক্তপোক্ত একটি কংক্রিটের বাড়ি ধসে যাওয়ায় বিস্ফোরণ কতটা শক্তিশালী তা সহজেই মালুম হয়। বিস্ফোরনের এই তীব্রতার কারণেই অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে শুধুই বাজি নাকি বোমাও মজুত করা হয়েছিল ওই কারখানায়? ঘটনা স্থলে পৌঁছেছে পুলিশ এবং দমকল।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়-বাজি তৈরি বারুদের কাজে করার সময় এই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের ফলে বাড়ির দেয়াল ও চাল উড়ে গিয়েছে । আগুন লেগে গিয়ে ভস্মীভূত বাড়ির একাংশ । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছে দমকলের একটি ইঞ্জিন । ঘটনাস্থলে দুই জন গুরুতর আহত হন।স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আশঙ্কা জনক ওই দুই ব্যক্তির নাম প কানাই কর (৪৫) ও রতন কর (৩৮)।এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা এলাকা থেকে কারখানা সরানোর দাবি করছেন। ঘটনাস্থলে কেশিয়াড়ী থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।

ঘটনাটি ঘটেছে কেশিয়াড়ী থানা থেকে ২ কিলোমিটার দুরত্বে আনাড় বলে পরিচিত একটি এলাকায় যা কিনা মফঃস্বল এলাকাটির গা ঘেঁষেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন ওই আনাড় এলাকার এক পরিচিত বাজি ব্যবসায়ী পুলিন বিহারী জানান বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকাল ৮.১৫ নাগাদ। আনাড়ের স্থানীয় বাসিন্দা মাখন জানা বলেন, ‘তখন সবে মাত্র মানুষ সকালের জল খাবার খেয়ে কাজে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমনই সময় বিশাল আওয়াজে চমকে উঠে সবাই। থরথর করে কেঁপে উঠেছিল এলাকার ঘরবাড়ি। আমরা ছুটে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি। তখুনি দেখতে পাই ধসে যাওয়া বিস্ফোরনের বাড়ি থেকে ধোঁয়া উঠছে। এরপরই দুই ব্যক্তিকে বের করা হয় ওই ধ্বংসস্তুপ থেকে। তাঁদের চামড়া তখন শরীর থেকে নিচের দিকে ঝুলে পড়েছে। ঘটনার আধঘন্টা পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং দমকল এসে পৌঁছায়। পুড়ে যাওয়া দুই ব্যক্তিকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যদিও ওদের বাঁচার সম্ভবনা খুবই কম।”

স্থানীয় আরেক ব্যক্তি তপন জানা জানিয়েছেন, ‘গত ১৫বছর ধরে এই ভরা লোকালয়ের মধ্যে এই কারখানা চালানো হচ্ছে। এর আগেও তিন-চারবার দুর্ঘটনা ঘটেছে যদিও সেগুলি এত বড় আকারে ছিলনা। আমরা প্রতিবাদ করেছি লোকালয়ে এই কারখানা চালানোর বিরুদ্ধে কিন্তু কারখানা মালিক গ্রাহ্য করেননি। বলেছেন, আমি টাকা দিয়ে লাইসেন্স করেছি, সরকারকে ট্যাক্স দেই, এখানে ওখানে পয়সা দেই। তাই কারখানা চলবে।আমরা ১৫০ পরিবার বসবাস করি এখানে। আজ যদি এই বিস্ফোরনের কারনে আমাদের কিছু হয়ে যেত? আমরা গ্রামের লোকেরা ঠিক করেছি এখানে আর আমরা কারখানা চালাতে দেবনা। কেশিয়াড়ী বাজারে ওনার দোকান আছে, সেখানেই কারখানা করুক।”

জানা গেছে কেশিয়াড়ী সহ সংলগ্ন এলাকায় বাজি সরবরাহ করেন পুলিন বিহারী জানা। নিজের বাড়িতেই বাজি কারখানার পাশাপাশি পাইকারি বাজার থেকেও বাজি কিনে মজুত করতেন তিনি। তাঁর বাজি বিক্রির লাইসেন্স ও বাজি বানানোর কারখানার লাইসেন্স ছিল। তাহলেও প্রশ্ন ওঠে এলাকায় ঘন জনবসতি গড়ে ওঠার পর কারখানা সরানো হলনা কেন? কারখানার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো, সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা ছিল কী? গ্রামবাসীদের দাবি এর আগেও একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্ন হল সেই ঘটনা পুলিশ কী জানত? যদি জানত তাহলে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছিল? পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকা থেকে সংগ্ৰহ করা হচ্ছে নমুনা। এই মুহূর্তে পুলিন বিহারী ও তার বাড়ির সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular