অশ্লেষা চৌধুরী: নাড্ডার জনসভায় যাওয়ার পথে আক্রান্ত বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। বাসে ভাঙচুর, সেইসাথেই জঙ্গল লাগোয়া এলাকা গুলি ছোঁড়ার অভিযোগ। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের লালগড়ে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা ও জনসভা ঘিরে টানটান উত্তেজনা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মী সমর্থকেরা সেই উদ্দেশ্যে জমায়েত হন।
জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর থেকে বাস চেপে লালগড়ে নাড্ডার সভায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে ঝিটকার জঙ্গলে বিজেপি কর্মীদের বাসে হামলা হয়। হামলার জেরে জানলার কাঁচ ভেঙেছে। কর্মীদের দাবী, জঙ্গল থেকে বাস লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয়। তবে বাস না থামিয়ে কোনওমতে লালগড়ে সভাস্থলে পৌঁছন বিজেপি কর্মীরা।
লালগড়ের ঝিটকার জঙ্গল বিজেপি কর্মীদের বাস লক্ষ্য করে কারা গুলি চালাল? উত্তর জানা নেই কারও। তবে যাঁরা এই ঘটনার ‘সাক্ষী’ হলেন, গন্তব্যে পৌঁছানোর পরেও তাঁদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।
৭২ ঘন্টার ব্যবধানে ফের বঙ্গে এদিন পা রাখেন নাড্ডা। মঙ্গলবার অনুব্রতের গড়ে বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার সূচনে করে ঝাড়গ্রামের লালগড়ে তিনি উড়ে যান। সেখানেও পরিবর্তন যাত্রার সূচনার পর জনসভা করেন নাড্ডা। আর সেই সভায় যোগ দিতে যাওয়ার পথেই আক্রান্ত হলেন বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা।
তবে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। গত শনিবার হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সভার আগেই উত্ততপ্ত হয়ে ওঠে মেদিনীপুর। হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার পথে, মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন ধর্মা এলাকায় বাসে হামলা, ইটবৃষ্টির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ইটের আঘাতে মাথা ফাটল তিন বিজেপি কর্মীর। প্রতিবাদে বাস থেকে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। বিজেপির অভিযোগ, কেশপুর থেকে হলদিয়ায় যাওয়ার পথে, মেদিনীপুর শহরের কাছে ধর্মা এলাকায় বাসে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা।
এছাড়াও হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সভার আগে নন্দীগ্রামের কমলপুরে বিজেপির প্রস্তুতি সভায় হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আহত হয়েছেন ৫ বিজেপি কর্মী। ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায়, তাঁদের তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাওয়া নিয়ে দলের প্রস্তুতি বৈঠক চলাকালীন রড-বাঁশ-লাঠি নিয়ে হামলা চালায় তৃণমূল কর্মীরা। এই ঘটনায় বিজেপির তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে শাসক শিবিরের দাবী, বিজেপির আদি ও নব্যের দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা।
নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মীদের উপর এই হামলা ও অশান্তি প্রসঙ্গে অবশ্য শাসক শিবিরের নেতা-কর্মীদের উস্কানিমূলক মন্তব্যকেই সেদিন দায়ী করেছিলেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি। বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূলের যুব নেতা ইঞ্চিতে-ইঞ্চিতে দেখে নেব, বুঝে নেব বলে উস্কানি দিচ্ছেন, এধরনের ঘটনা তারই পরিণতি।‘
প্রসঙ্গত, এর আগে বঙ্গ সফরে এসে নাড্ডার কনভয়তেও হামলা হয়, ছোঁড়া হয় ইঁট, পাথর। আক্রান্ত হন মুকুল রায় সহ গেরুয়া শিবিরের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। যদিও ঝাড়গ্রাম পুলিশের তরফে মঙ্গলবার ঝিটকার জঙ্গলে গুলি চালানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি করা হয়েছে।