নিউজ ডেস্ক: পোলিওর এক ফোঁটা যে শিশুর জীবন রক্ষা করেই সেই পোলিও ড্রপ মুখে দিতেই হাসপাতালে শয্যা নিতে হল ১২ টি শিশুকে। পোলিওর ফোঁটার বদলে তাদের মুখে তুলে দেওয়া হল স্যানিটাইজারের রাসায়নিক। মহারাষ্ট্রের ইয়াভাতমল জেলার একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, জাতীয় টিকা প্রকল্পের আওতায় রবিবার স্থানীয় কাপসিকোপরি গ্রামের ভানবোরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১ থেকে ৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের পোলিও টিকা দেওয়ার কথা ছিল। সেইমত আশপাশের গ্রাম থেকে ২, ০০০-এর বেশি শিশুকে নিয়ে তাদের বাবা মায়েরা ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপস্থিত হন। সরকারি আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, সেখানেই কয়েকটি শিশুকে পোলিও ফোঁটার বদলে দেওয়া হয় স্যানিটাইজার। এরপর অনেকের গা গুলোতে থাকে, হাত পায়ে ব্যথা শুরু হয়। কয়েকটি শিশু বমিও করতে থাকে। ১ থেকে ৫ বছর বয়সী সব কটি বাচ্চাকে তখনই স্থানীয় বসন্তরাও নায়েক সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য।
ওই হাসপাতালের ডিন মিলিন্দ কাম্বলে জানিয়েছেন, সব কটি শিশুর অবস্থা স্থিতিশীল, ভাল আছে তারা। সারাক্ষণ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এদিন সন্ধ্যের সময় তাদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। হাত পরিষ্কারের স্যানিটাইজার অতটুকু শিশুদের শরীরে ঢুকে গেলে কী ক্ষতি হতে পারে? সেই সম্পর্কে মিলিন্দ কাম্বলে জানিয়েছেন, এর ফলে প্রাণহানির আশঙ্কা নেই ঠিকই কিন্তু স্যানিটাইজারে ৭০ শতাংশের বেশি অ্যালকোহল থাকায় ছোটদের শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
জেলা শাসক এম দেবেন্দ্র সিংহ রবিবার রাতেই ওই হাসপাতাল পরিদর্শন করেন, ভর্তি হওয়া শিশুদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট জেলা আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় ৩ জন স্বাস্থ্যকর্মীর হাত রয়েছে। এঁরা হলেন এক চিকিৎসক, এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং এক আশা কর্মী। পোলিও ফোঁটার বদলে স্যানিটাইজারের ফোঁটা খাওয়ানোর গোটা ঘটনা তাঁদের তত্ত্বাবধানেই ঘটেছে বলে অভিযোগ। পোলিওর বোতলের বদলে পাশেই থাকা স্যানিটাইজারের বোতল ভুল করে ব্যবহার করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ৩ অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনায় উদ্ধব ঠাকরের সরকারের চূড়ান্ত গাফিলতি ও অবহেলার চিত্র ফুটে উঠেছে। পোলিও ড্রপ যেখানে শিশুদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এক ওষুধ, সেখানে স্বাস্থ্য কর্মীদের এহেন অবহেলা সত্যিই সেই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।