নিজস্ব সংবাদদাতা: ঝাড়গ্রাম: পশ্চিম মেদিনীপুরের পর এবার ঝাড়গ্রাম, জাতীয় সড়কের পর রাজ্য সড়ক।। দুর্ঘটনার বিরাম নেই যেন, অব্যাহত মৃত্যু মিছিলও। রবিবার, ছুটির দিনে আরও একটি মৃত্যুর ঠিকানা লেখা হল ঝাড়গ্রাম জেলার জিতুশোল নামক স্থানে, লোধাশুলি থেকে ৩কিলোমিটার উত্তরে ঝাড়গ্রাম শহরে যাওয়ার ৫-নম্বর রাজ্য সড়কের ওপরেই। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম বিজয় মাহাত। বছর পঁয়ত্রিশের বিজয় লোধাশুলি থেকে বাজার করে নিজের জিতুশোলের বাড়িতে ফেরার পথে মাত্র কয়েক মিটার আগেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন এবং ঘটনস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে দুটি গাড়িই যথেষ্ট গতিতে ছিল। উত্তরমুখি বিজয়ের বাইকের একদম সামনাসামনি ধাক্কা মারে উল্টো দিক থেকে আসা দুরন্তগতির পিকভ্যানটি। সরাসরি ধাক্কা মারে বাইক সহ বিজয়কে। ধাক্কার অভিঘাত এতটাই ছিল যে গাড়ি থেকে অনেকটাই উঁচুতে উঠে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়েন বিজয়। মাথায় হেলমেট ছিলনা ফলে পিক-আপ ভ্যান এবং রাস্তা দু-তরফেই জোরালো আঘাত লাগে মাথায়। মুখমন্ডল থেঁতলে যায়। এক্ষেত্রে বাঁচার কোনও সুযোগই ছিলনা প্রায়, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
এদিকে চোখের সামনেই এলাকার যুবকের এই ভয়াবহ পরিণতি দেখে ক্ষুব্ধ জনতা দাঁড়িয়ে থাকা ঘাতক পিক-আপ ভ্যানটিতে আগুন লাগিয়ে দেন। রাস্তায় সাময়িক ভাবে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে পড়ে। গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় আশেপাশের গ্রামের রাস্তা দিয়ে। অনেক পরে পুলিশের তৎপরতায় ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে দুটি গাড়িই অত্যন্ত দ্রুত গতিতে থাকায় জোরালো সংঘর্ষ হয়েছে এবং সেই সংঘর্ষের অভিঘাত এতটাই ছিল যে বিজয়ের বাইকের সামনে অংশ দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। ফ্রক ভেঙে চাকা আলাদা হয়ে গেছে এবং চাকার আ্যলয় স্টীলের শক্তিশালী রিং বেঁকে গিয়েছে। অন্যদিকে ধাক্কা মারার পর প্রায় ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে পিক-আপ ভ্যানটি রাস্তার পাশে একটি সীমানা প্রাচীরে গিয়ে গোঁত্তা মেরে থেমে যায়।
পুলিশের অনুমান প্রায় ফাঁকা এবং প্রশস্ত সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে যার থেকে মনে করা হচ্ছে দুই চালকই অন্যমনস্ক ছিলেন ফলে শেষ অবধি সংঘাত এড়ানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পুলিশের আরও আফশোষ যে বাইক আরোহী হেলমেট পরে ছিলনা বলেই তাঁরা প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানতে পেরেছেন। যদি মাথায় হেলমেট থাকত তাহলে এই দুর্ভাগ্য জনক মৃত্যু এড়ানো যেত। মাহাত নিজে একজন লরি চালক হয়েও এই কাজ কেন করলেন, কেন তিনি সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ নীতি মানলেননা সেটাই আশ্চর্য্য। রবিবার, ছুটির দিনে রাস্তায় পড়ে রইল শুধু পরিবারের সঙ্গে আনন্দে সময় কাটানো আর ভালো মন্দ খাওয়ার তরিতরকারি আর পরিবারের জন্য রইল একরাশ হাহাকার।