Homeদক্ষিণবঙ্গপুরুলিয়াবিজেপি মাওবাদীদের থেকেও ভয়ঙ্কর, বিষাক্ত সাপ; পুরুলিয়ার জনসভা থেকে গেরুয়া শিবিরকে নিশানা...

বিজেপি মাওবাদীদের থেকেও ভয়ঙ্কর, বিষাক্ত সাপ; পুরুলিয়ার জনসভা থেকে গেরুয়া শিবিরকে নিশানা মমতার

অশ্লেষা চৌধুরী: ‘বিজেপি মাওবাদীদের থেকেও ভয়ঙ্কর। বিষাক্ত সাপ, এক ছোবলেই শেষ। একজন সিনেমা করেন, তাকে ধমকাচ্ছে বিজেপি, এত বড় ক্ষমতা! রাজ্যে এমন করলে মুখে লিউকোপ্লাস্টার দেবে রাজ্যবাসী।‘ পুরুলিয়ার ২ ব্লকের হুটমুড়া ফুটবল মাঠের জনসভা থেকে এভাবেই বিজেপিকে নিশানা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিনের সভা থেকে বিজেপিকে ফের বহিরাগত ইস্যুতে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “কখনও বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে, কখনও রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভাঙে। ভোটের সময় বাংলার কথা মনে পড়ে। বাংলাটাও ঠিক করে বলতে পারে না। বাংলাকে বলে বঙ্গাল। মুখে বঙ্গাল, বিজেপি কাঙ্গাল। বাংলা সম্পর্কে কিস্যু জানে না। মিথ্যে কথা বলে ভোট নিয়ে পালায়। বহিরাগতদের কাছে মাথা নোয়াবেন না।”

মমতা বলেন, ‘পুরুলিয়া প্রথম রাজ্য, যেখানে প্রথম ভাষা আন্দোলন হয়। পুরুলিয়া বহিরাগতদের কাছে মাথা নত করেনি। আদিবাসীদের জন্য কাজ করেছে রাজ্য সরকার। বীরসা মুণ্ডাকে অপমান করেছে, অন্যের ছবিতে মালা দিয়েছে। ভুল বুঝিয়ে ভোট নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে দিল্লি। ভোটের আগে মন্ডা-মিঠাই, ভোটের পর কাঁচকলা।

একই সঙ্গে তিনি বলেন, “ভয় দেখিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে কাজে লাগাচ্ছে। সায়নী বলে একজন মেয়ে। ধমকাচ্ছে বিজেপি, এত বড়ো ক্ষমতা? ক্ষমতা থাকলে সায়নীর গায়ে হাত দিয়ে দেখাক। টলিউডের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক। নাতনির বয়সি মেয়ে তাঁকে প্রতিদিন হুমকি দিচ্ছে। স্বাধীন ভাবে কথা বলার অধিকার নেই ওর? বাংলায় ধমকালে মুখে লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে আটকে দেব”।

বিতর্কিত কৃষি আইন সম্পর্কে এ দিনের সভা থেকে তিনি বলেন, “দিল্লীতে কৃষকরা এক মাসের বেশি সময় ধরে রাস্তায় পড়ে আছেন। কৃষকরা আমাদের গর্ব। আগের বিল ছিল জমি অধিগ্রহণের, আর এখনকার ফসল কেড়ে নিয়ে যাওয়ার। আপনি ফসল তৈরি করবেন, আর জোতদাররা জোর করে লুঠ করে নিয়ে যাবে। আপনারা কি তা দিতে চাইবেন। তাই আমরা এই আইন বাতিল করার দাবী তুলেছি।”

এরপরেই পুরুলিয়ায় রাজ্য সরকারের একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন বলেন, “লালগড়ে সেতু তৈরি করেছি। ওটা রঘুনাথ মাহতোর নামে করা হল। তাঁর জন্মদিনটিও ছুটি ঘোষণা করা হল। বিরসা মুন্ডার জন্মদিনের ছুটি দিয়েছি। আদিবাসীদের পরিচিতি দেওয়া হচ্ছে। “এখানকার জমিতে ফসল ফলবে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি এই জেলায় শিল্পও হবে। লকডাউনের সময় জেলায় ফিরে আসা ২০ হাজার অভিবাসী শ্রমিককে কাজ দিয়েছে রাজ্য সরকার। ডানকুনি-অমৃতসর প্রকল্পের বিস্তার হবে। প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে,” তিনি যোগ করেন।

পুরুলিয়ায় বাড়ী বাড়ী জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থার কথাও তিনি এদিন বলেন। সেইসাথেই অনলাইন পড়াশোনার সুবিধায় ট্যাবলেট অথবা স্মার্টফোন কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা পৌঁছে যাবে বলেও তিনি জানান। মমতা বলেন, “আমার কাছে যতটা টাকা আছে, ততটাই করতে পারি আমি। তার বেশি পারি না। বিনা পয়সায় রেশন দিতে কত কোটি টাকা খরচ হয় জানেন? আজ রেশন, স্বাস্থ্য, পড়াশোনা, জল, ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিনা পয়সায় দিচ্ছি।”

এরপরেই তিনি সভায় আগত সকল মা-বোনের উদ্দেশ্যে প্রণাম ও সেলাম জানান। আর বাংলা থেকে বিজেপিকে নিঃশেষ করারও শপথ নেন তিনি। সেই সাথেই যারা দল ত্যাগ করেছেন, তাদের প্রতিও এদিন সরব হন মমতা।

RELATED ARTICLES

Most Popular