নিজস্ব সংবাদদাতা: মেয়ে খুন হয়ে যেতে পারে এমন ম্যাসেজ পেয়েই ডানকুনি থানায় হাজির হয়েছিলেন পিয়ালির বাবা-মা। আর সেই থানাতে বসে থাকার সময় দিঘা থানাকে ফোন এল খুনই হয়ে গেছেন পিয়ালি। বুধবার দিঘার মহাপ্রভূ হোটেল থেকে উদ্ধার হয়েছিল পিয়ালির ঝুলন্ত দেহ । দুটো হাত সামনের দিকে রুমাল দিয়ে বাঁধা। পাশে চারবছরের ছেলে মোবাইলে গেম খেলছিল। তারই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মঙ্গলবার রাতেই নিজের আশঙ্কার কথা হোয়াটসপে বোন মিতালিকে মেসেজ লিখে পাঠিয়ে ছিলেন তিনি।বুধবার সকালে ডানকুনি থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগও জানিয়ে এসেছিলেন পিয়ালি দেঁড়ের বাবা প্রফুল্ল ।কিন্তু ততক্ষণে দিঘা থানা থেকে খবর এসে পৌঁছে ছিল, হোটেলের ঘর থেকে পিয়ালির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনা আত্মহত্যা নয় খুন, তদন্তে নেমে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েগেছিল পুলিশ।কিন্তু খুনি শনাক্তে শুরুতে বিপাকে পড়েছিল তারা।হোটেল মালিক শঙ্করের দাবি ছিল, মঙ্গলবার সন্ধেয় পিয়ালির সঙ্গে তার ৪ বছরের শিশুপুত্র দেবজ্যোতি ছাড়া আর কেউই ছিল না ।তাছাড়া হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় রাতে কে এসেছিল পিয়ালির ঘরে তা বোঝারও উপায় ছিল না।রাতে মালিক-কর্মচারীরাও কেউ ছিলেন না হোটেলে।ফলে খুনি ধরতে পুলিশের একমাত্র ভরসা ছিল পিয়ালির শিশুপুত্র দেবজ্যোতি।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সে জানিয়েছিল, রাতে যে ঘরে এসেছিল তাকে সে চেনে, কিন্তু নাম জানে না তার।পুলিশের অনুমান ছিল, খুনি পিয়ালিদের সঙ্গেই দিঘা এসেছিল।সে আড়ালে এবং অন্য জায়গায় ছিল।পিয়ালির এবং দেবজ্যোতির পরিচিত সেই ব্যক্তি মধ্যরাতে হোটেলে আসে এবং পিয়ালি তাকে দরজাও খুলে দিয়েছিল।পুলিশের সেই ধারণাই কার্যত সত্য বলে প্রমাণ হয়ে যায় পিয়ালির শ্বশুর ও বাপের বাড়ি লোকেরা দিঘা আসার পর।খুনের নেপথ্যে উঠে আসে পরকীয়া প্রেমের গল্প।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সেই সঙ্গে জানা যায় তার পরকীয়া প্রেমিক ডানকুনি থানার চন্দনপুরের বাসিন্দা অভিজিৎ পালের নাম।তার হাতেই খুন হওয়ার আশঙ্কা করে বোন মিতালিকে হোটেল থেকে মেসেজ লিখেছিলেন পিয়ালি।মেসেজে পিয়ালি লিখেছিলেন,”যার সঙ্গে দিঘা এসেছি সে ভালো নয়।আমি হয়তো আর বাঁচবে না।তোরা এসে ছেলেকে যেন দিঘার হোটেল থেকে নিয়ে যাস।” রুমালে হাত বেঁধে ওড়নার ফাঁসে পিয়ালিকে ঝুলিয়ে দেওয়ার আগেই শ্বাসরোধ করা হয়েছিল তার।ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে সেই ইঙ্গিতই স্পট করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।কিন্তু কেন খুন হতে হল পিয়ালিকে?
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিষেক চক্রবর্তীর জবাব,”খুনি গ্রেপ্তারের পরই স্পষ্ট হবে খুনের কারণ।ঘটনার তদন্ত চলছে।দ্রুতই ধরে ফেলা হবে অভিযুক্তকে।”দিঘা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে পিয়ালির পরিবার।।পরিবারের লোকেদের হাতে পিয়ালির ছেলে দেবজ্যোতিকে তুলে দেয় পুলিশ।ময়নাতদন্তের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে দেহ নিয়ে ডানকুনির ক্ষুদিরাম বসু পল্লীর বাড়িতে ফিরে যান তাঁরা।পিয়ালির শ্বশুরবাড়ি ডানকুনির বন্দেরবিলে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
৫ বছর আগে বেসরকারি সংস্থার কর্মী প্রশান্ত দাসের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর।কিন্তু স্বামীর অবর্তমানে পরকীয়ায় মজে ছিলেন চন্দনপুরের অভিজিৎ পালের সঙ্গে।গত ১০ নভেম্বর তার হাত ধরেই ছেলে দেবজ্যোতিকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে ছিলেন পিয়ালি।জানা গেছে, পিয়ালির শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে আত্মীয়তা রয়েছে অভিজিতের। বছর দেড়েক মতো তার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল পিয়ালির।যা জানতেন তাঁর শ্বশুর এবং বাপের বাড়ির লোকেরাও।