নিউজ ডেস্ক: বিধানসভা নির্বাচন যত কাছে আসছে ততই কী রাজনৈতিক হিংসা অথবা হিংসার অভিযোগ বাড়ছে? ঘটনা বা অভিযোগ যাইহোক না কেন বাস্তবতা বলছে উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলা এবং হিংসাত্মক ঘটনা ঘটছে। রবিবার রাতে এমনই দুটি ঘটনার অভিযোগ এসেছে উত্তর এবং দক্ষিনবঙ্গে যেখানে দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে কেন্দ্র করে শ্যুট আউটের ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটনাক্রমে শ্যুট-আউটের লক্ষ্যে থাকা ২জনই বিজেপি নেতৃত্ব। রবিবার রাতে ঘটনা দুটি ঘটেছে আসানসোল এবং মালদহে। গুলি চালানোর ঘটনায় আসানসোলের বিজেপি নেতা তথা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় রক্ষা পেলেও গুলিতে আহত হয়েছেন মালদহের বিজেপি নেতা সাদেক আলি, তাঁর হাতে গুলি লেগেছে। দুই ঘটনাকে ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছেন বলে দাবি করে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ “দলীয় কাজে কলকাতা গেছিলাম। রাতে আসানসোলে ফেরার পথে সাড়ে ১১ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। বার্নপুর রোডে আমাকে লক্ষ্য করেই গুলি চালানো হয়। আমি তখন বাড়ি ঢুকছিলাম। অল্পের জন্য আমার গুলি লাগেনি বটে তবে আমার গাড়িতে গুলি লেগেছে।”
জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে হীরাপুর থানার বার্নপুর রোডে ডলি লজের কাছাকাছি যেখানে কৃষ্ণেন্দুর বাড়ি। বাইকে করে এসে দুই দুষ্কৃতি গুলি চালায় বলে জানা গেছে। হামলার ছবি পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। পুলিশ সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। দেখা যাচ্ছে হামলা চালিয়ে চম্পট দিচ্ছে মুখ ঢাকা দুস্কৃতিরা।
কৃষ্ণেন্দু অভিযোগ করেছেন, ‘আসানসোলে তৃণমূলের মাটি ধসে পড়েছে। এখন সন্ত্রাস চালিয়ে এলাকায় অস্তিত্ব বজায় রাখার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি থাকায় সন্ত্রাস চালানো যাচ্ছে না বলেই তাঁকে দুনিয়া থেকে সরানোর লক্ষ্য নিয়েই এই গুলি চালানো হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃনমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি,’ এই ঘটনার সঙ্গে তৃনমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটি একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা। এর পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা থাকতে পারে। তৃনমূল কখনওই সমাজ বিরোধীদের প্রশ্রয় দেয় না। পুলিশ সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক অথবা ব্যবসায়িক কোন শত্রুতা রয়েছে ঘটনার পেছনে তা তদন্ত করছে পুলিশ। কারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে, শ্যুটার কারা তদন্ত করছে। এলাকার পরিচিত সমাজ বিরোধীদের তত্ত্বতল্লাশ করছে পুলিশ। তবে এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
অন্যদিকে, রবিবারই একটি গুলি চালানোর ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মালদহের পুখুরিয়ার শ্রীপুরে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সাদেক আলি। সাদেকের বাঁ হাতে গুলি লেগেছে। জানা গেছে রাতে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন সাদেক। বিজেপির দাবি, সাদেকের গাড়ি গাড়ি থামিয়ে গুলি চালানো হয়। দুস্কৃতিরা সাদেকের গাড়ি ঘিরে ধরেছিল। বর্তমানে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সে । বিজেপির অভিযোগ, ঘটনায় যুক্ত রয়েছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী ও তাঁর দলবল। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে বড়সড় আন্দোলনে নামবে মালদা বিজেপি। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুখুরিয়া থানা।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের জানিয়েছেন, ‘আমরা গোড়া থেকেই বলে আসছি নির্বাচন যত সামনে আসবে তত এই ধরনের ঘটনা বাড়বে। আর এটা করার জন্য এই সরকার দাগী সমাজবিরোধীদের জেল থেকে ছেড়ে দিচ্ছে। কৃষ্ণেন্দুকে অনেক আগে থেকেই নিশানা করেছে তৃনমূল।’ বিজেপির এক রাজ্য নেতা জানিয়েছেন, ‘ রাজনৈতিক হিংসা, খুন ইত্যাদি হতে পারে এটা আমরা বুঝতে পারছি। কারন সামান্য পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এরাজ্যে বিরোধী নেতা কর্মীদের লাশ পড়ে। হামলার আশঙ্কা যাঁদের ওপরে আছে তাঁদের তো বটেই আমাদের সমস্ত নেতা, সক্রিয় কর্মীদের বলব ভয় নয় সতর্ক থাকতে হবে। ২০২১য়ের জনমত বিজেপির পক্ষেই। বিজয় উৎসবের আনন্দটা আমরা বাংলার জনতার সঙ্গে আর আমাদের সমস্ত নেতা-কর্মীর সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। তাই তৃনমূলের পাতা মৃত্যু ফাঁদ এড়িয়ে চলুন।