নিজস্ব সংবাদদাতা : শেষ অবধি ঘরে ফেরা হলনা ডলফিনের । পুলিশ ও বনদপ্তরের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে মারা গেল সেটি। শনিবার সকালে একটি ছোট খাল থেকে উদ্ধার হয়েছে তার মৃতদেহ। জানা যাচ্ছে বনদপ্তরের আশংকা মতই মাছ ধরার ফাঁদেই আটকে মৃত্যু হয়েছে তার।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
গাঞ্জেটিক ডলফিন! পৃথিবীর একমাত্র ডলফিন যারা স্বচ্ছ জলে বাস করে। গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র মেঘনার শাখা প্রশাখা ছাড়াও সিন্ধু নদের মিষ্টি জলে বাস এদের। সেই গাঞ্জেটিক ডলফিনেরই একটি পথ ভুলে হলদি রসুলপুর নদি হয়ে পুর্ব মেদিনীপুরের কালিনগর হয়ে ঢুকে পড়েছিল একটি সেচ খালে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পুর্ব মেদিনীপুর জেলার ভূপতিনগর থানা এলাকার উদাখালি সেচ খালে সেই ডলফিনকে দেখা যায় বৃহস্পতিবার । শুক্রবার যখন তাকে ঘরে ফেরানোর তোড়জোড়ও শুরু হয় সে তখন আরও ৫কিলোমিটার উজানে চলে আসে বাসুদেব বেড়িয়া গ্রামপঞ্চায়েতের উদবাদলের খালে। রসুলপুর নদি থেকে দুরত্ব বেড়ে দাঁড়িয়ে ছিল ১৩কিলোমিটার।
![]() |
শুক্রবারই শেষবারের জন্য জীবন্ত দেখা |
শুক্রবার খালে জোয়ারের জল ঢুকতেই একটি ভুটভুটি নিয়ে বনদপ্তরের কর্তারা ড্রাইভ শুরু করে ডলফিনটিকে কালিনগরের খালের মুখ দিয়ে রসুলপুর নদিতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। খালের দু’পাশে তখন হাজার হাজার জনতা ডলফিন দেখার উল্লাসে চেঁচাচ্ছে। গত প্রায় ৪৮ঘন্টা ধরেই এই চিৎকার চেঁচামেচি শুনেছে ডলফিন। তার শ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়ায় ভেসে ওঠাকে খেলা বলে ধরে নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েছে জনতা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সেই চিৎকারে ভয় পেয়ে বারবার জলের তলায় চলে যেতে হয়েছে তাকে। পুলিশ ও বনদপ্তর থেকে মাইকিং করে ডলফিনকে বিরক্ত না করার অনুরোধ করা হলেও জনতা থামেনি।অবিশ্রান্ত ওই চিৎকার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডলফিনের রসদ সংগ্রহেও। ডলফিনের খাদ্য মাছ। একে খালগুলিতে ডলফিনের জন্য পর্যাপ্ত মাছের অভাব তার ওপর জনতার হৈচৈ য়ে ভীত সন্ত্রস্ত ডলফিন পর্যাপ্ত খাদ্য সংগ্রহ করতে পারেনি এমনটাই মনে করছেন বনদপ্তরের কর্তারা। রসদ ও বিশ্রামহীনতা ক্লান্ত করে দিয়েছিল ডলফিনটিকে।
![]() |
খালের দুপাশে উপচে পড়া ভিড় |
পুলিশ দেহটি উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থলে ছুটেছেন বনদপ্তরের কর্তারা। বনদপ্তরের বাজকুল রেঞ্জ অফিসার বানীব্রত সামন্ত জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত হবে ডলফিনটির তারপরই জানা যাবে মৃত্যুর আসল কারন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, গাঞ্জেটিক ডলফিন বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন। আর এই বিপন্নতার অন্যতম কারন হল পরিকল্পনাহীন সেচ খাল খনন , বাঁধ নির্মাণ এবং যথেচ্ছ মৎস্য শিকার। নদি দুষণও অন্যতম প্রধান কারন এই স্বচ্ছ জলের প্রানীটির বিপন্নতার। সেই মৎস শিকারের ফাঁদেই শেষ হয়ে গেল গঙ্গাপুত্র।