Homeএখন খবরছাগলের দুটি ছানা ও দিলীপ ঘোষরা এবং মানুষ

ছাগলের দুটি ছানা ও দিলীপ ঘোষরা এবং মানুষ

নিত্য গুপ্ত: বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে মিডিয়া দর্শন ও পড়ে দিলীপ ঘোষ বচন শোনা গেল। সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের উত্তরে উনি খড়গপুর সদর উপনির্বাচনে বাম কংগ্রেস জোটকে ছাগলের তৃতীয় ছানা বলেছেন। নিশ্চিতভাবেই এরই সাথে দিলীপ বাবু তাঁর নিজের দলকে প্রথম শ্রেনীর ছাগল ছানা ও তৃনমূল কংগ্রেসকে দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাগল ছানা মনে করেছেন। গো-ভক্ত দিলীপ ঘোষের এই ছাগ বাৎসল্য উপভোগ নিশ্চিতভাবেই কৌতুহলের। ভোটের বাজারে ওনারা গরু থেকে ছাগল সব সাজতেই রাজি খালি ভোট পেরুলেই শেয়ালের মত হয়ে যান তখন কখন খড়গপুরে আসেন আর কখন যান খড়গপুরের মানুষ টেরও পাননা।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
দিলীপবাবুরা ঠিকই করে নিয়েছেন যে লড়াইটা দুই ছাগল ছানার মধ্যেই রাখবেন যাতে তৃতীয় কাউকে মানুষ সামনে দেখার সুযোগ না পান। লড়াইটা এমন দুজনের মধ্যেই হোক যাতে মানু্ষ  তৃতীয় বিকল্পর কথা ভুলে যান। লড়াইটা এত টাকা আর চাকচিক্য ভরিয়ে হোক যাতে যার টাকা খরচ করার ক্ষমতা নেই সে প্রথম থেকেই লড়াই থেকে ছিটকে যায়। লড়াইটা চিৎকারের হোক যাতে চুরি জোচ্চরি ঢাকা পড়ে যায়, শিক্ষা দীক্ষা সততা নৈতিকতা লড়াইয়ের বিষয় হিসাবে সামনে না চলে আসে।

যেমন দিলীপ বাবুরা এমন একজনকে প্রার্থী করেছেন যিনি নির্বাচনের পর জিতুন আর নাই জিতুন জেলে যাবেন। এক স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবারের জমি জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকায় তা বিক্রি করে দেওয়ায় অভিযুক্ত তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরওয়ানা আছে , নির্বাচন অবধি আদালত তাঁকে গ্রেপ্তার করতে না বলেছে। শুরু থেকেই জালিয়াতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খড়গপুরের মানু্ষের সামনে হাজির করা হয়েছে প্রার্থী করে।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এমনটা নয় যে দল বা দিলীপবাবুরা আগে এটা জানতেননা যে উনি এই জালিয়াতিতে অভিযুক্ত। ওনার দলের মধ্যেই এ নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ বিক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছিল,  অন্যদল হলে প্রার্থীর যোগ্যতাতেই আসার কথা নয় এঁর। কিন্ত এসেছেন কারন দিলীপবাবুদের কাছে সততা, নৈতিকতা নয় প্রথমশ্রেনীর ছাগল ছানা হওয়াটাই বড় কথা।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আর দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাগল ছানা হিসাবে যাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে ভীষন পছন্দের সেই তৃনমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধেও তো ঠিক একই ধরনের অভিযোগ বারবার এসেছে। হয়ত সে মামলা আদালতের দোরগোড়ায় যায়নি কিন্তু ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তাঁর বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে বন্ধ হওয়া পানশালা চালু করে দেওয়া বা জমি দখল মুক্ত করার নামে টাকা নেওয়ার। সত্য মিথ্যা আজ নয় কাল প্রমানিত হবে কিন্ত অভিযোগ তো উঠেছে। মাত্র কয়েক বছরে জীবনযাত্রার অভাবনীয় উন্নতি নিয়ে কয়েকদিন আগেই ফেসবুক লাইফ করে প্রশ্ন তুলেছেন খড়গপুরের এক সময়ের কাউন্সিলর সত্যদেও শর্মা।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আর ছাগলের তৃতীয় ছানাকে সামনে আনলে কি আনতে হয় ? চার দশকের শিক্ষকতা আর অজস্র কৃতী ছাত্রের জনক। তিন দশকের কাউন্সিলর কিন্ত জমির দালালি করতে পারেননি। দু’দফায় ভাইস চেয়ারম্যান, অহংকারে আকাশে ফানুস হয়ে খড়গপুরের মাথায় ওড়েননি। এসব আলোচনায় আসলে দিলীপবাবুদের খুব অসুবিধা কারন এরকম আরেকজন হাজির করার জন্য পুনর্জন্মের প্রয়োজন হবে তাঁদের।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
লড়াইটা দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে মানু্ষকে বাধ্য হতে হয় কোনও একজন অভিযুক্তকে বেছে নিতে। আর কোনও অভিযোগ এমন নিষ্কলুষ কাউকে সামনে নিয়ে এলে দুজনকেই ছুঁড়ে ফেলে দেন মানুষ। সেই ভয়েই তাঁকে নগন্য করে দুরে সরিয়ে রাখা। আর সৎ পরিছন্ন মানুষদের সামনে দাঁড়াতেও এঁদের ভয় করে কারন ওই আয়নাতে নিজের কদাকার মানসিকতা ধরা পড়ে যায়।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে সত্যি সত্যি প্রচারের আলোয়, টাকার বাহুল্য, কাট আউট আর ফানুস প্রচারে সবাই টিকে থাকতে পারেনা। তা হোক,  তবুও লড়াইটা জোরালো হোক। আলোচনায় উঠে আসুক, তৃতীয়, চতুর্থ, এমনকি পঞ্চমপক্ষের কথাও । হ্যাঁ জয় তো একজনেরই হয় , একজনেরই হবে ।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
কিন্ত খড়গপুরের প্রতিটি নাগরিকের কাছে লড়াইয়ে থাকা প্রার্থীদের পৌঁছে দেওয়া হোক। মানুষ অন্ততঃ এটুকু জানুক যে লড়াইটা শুধুই দিলীপ ঘোষের সাজানো  দুটো ছাগল ছানারই নয় এরমধ্যে মাথা উঁচু করে থাকা টানটান মেরুদণ্ডের মানুষরাও রয়েছেন। ভোটের জন্য এঁদের মানুষের পা ছুঁতে হয়না , মানুষই এঁদের কাছে প্রণত হন । এঁরা খড়গপুরের ছাগল নয় , মানুষ। খড়গপুরের অহংকার । 

RELATED ARTICLES

Most Popular