Homeএখন খবরদল ছাড়লেন শুভেন্দু, দল ছাড়ার হিড়িকে একের পর এক বিধায়ক, প্রশাসক, তৃনমূলের...

দল ছাড়লেন শুভেন্দু, দল ছাড়ার হিড়িকে একের পর এক বিধায়ক, প্রশাসক, তৃনমূলের নেতা! আগামী ৪৮ ঘন্টা পদত্যাগের ঝড়ের আভাস

নিউজ ডেস্ক; কলকাতাঃ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই দলের সঙ্গেও সব সম্পর্ক ছিন্ন করলেন শুভেন্দু।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠালেন ইস্তফাপত্র। আর শুভেন্দুর সঙ্গেই দল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গেছে তৃনমূলে। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিনবঙ্গ জুড়ে একের পর এক বিধায়ক, প্রশাসক ও ছোট বড় নেতা দল ছাড়তে শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে আগামী ৪৮ ঘন্টায় দলত্যাগীদের ঝড় বইতে চলেছে তৃনমূল কংগ্রেসে।

বৃহস্পতিবার তমলুকের নিমতৌড়িতে একটি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানের পরেই তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ সহ সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত বয়ান পাঠিয়ে দেন নন্দীগ্রামে প্রাক্তন বিধায়ক। তিনি লেখেন, তৃণমূল ও দলীয় সমস্ত সংগঠনের সব পদ থেকে ইস্তাফা দিলেন তিনি। এতদিন দলের জন্য কাজের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ দেওয়ার জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। যদিও তাঁর এই পদত্যাগপত্র এখনও গ্রহণ করেনি তৃণমূল কংগ্রেস।

তৃণমূলের নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে অনেক আগেই । অনেকের মতে গেরুয়া শিবিরে তাঁর যোগদান এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।আগামী শনিবার অমিত শাহর সভাতেই হতে পারে তার বিজেপিতে যোগ। সেই জল্পনা এদিন আরও একধাপ বাড়িয়ে দিলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জীতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি তো পদত্যাগ করেইছেন সঙ্গে পুরসভার সমস্ত প্রশাসকমন্ডলীই গন ইস্তফা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তিওয়ারি সংবাদ সংস্থাকে এও জানিয়েছেন, দ্রুত বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন শুভেন্দু।

শুভেন্দুর ইস্তফার সঙ্গে সঙ্গে গোটা রাজ্য জুড়ে ইস্তফার হিড়িক পড়ে যায়। দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন কর্নেল দীপ্তাংশু। বিধাননগর পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দেন দেবাশিস জানা। মালদহে পাঁচ জন ব্লক সভাপতি ইস্তফা দিয়েছেন দল থেকে। এর পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন ব্লক এলাকার একাধিক কর্মকর্তা জেলা কমিটির কাছে ইস্তফা পত্র পাঠিয়েই চলেছে। শনিবার মেদিনীপুর শহরে অমিত শাহের সভার আগে অবধি এই
পদত্যাগের ঝড় বইছে বলেই ওয়াকিবহাল মহলের মত।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের টিকিটে কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভা থেকে জয়লাভ করেন। ২০০৯ সালে তমলুক থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে শিল্প দফতরের স্থায়ী কমিটির সদস্য হন। ২০১৪ সালেও নিজের আসনে জয়ী হন শুভেন্দু। ২০১৬ সালে পদত্যাগ করে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করেন। জয়ও আসে। পরিবহণ দফতরের দায়িত্ব তাঁর উপরেই বর্তায়। পরে পরিবেশ ও সেচ দপ্তরও সামলেছেন তিনি।

এক বছরের বেশি সময় ধরে দলের সাথে বেশ তিক্ত সম্পর্ক গড়ে ওঠে শুভেন্দুর। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ মত ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে ২০২১ বৈতরণী পার করার দায়িত্বে আনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই শুভেন্দু লক্ষ্য করেন অভিষেককেই পরবর্তী মূখ্যমন্ত্রী করার ঘুঁটি সাজাচ্ছে পিকে। তারপরই দলের সঙ্গে ব্যবধান বাড়াতে থাকেন। দল ও সরকারের কর্মসূচি এড়িয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠেন নিজস্ব অরাজনৈতিক কর্মকান্ডে।  এরপর ২৭ নভেম্বর ছাড়েন মন্ত্রীত্ব, ১৬ ডিসেম্বর বিধায়ক পদ এবং আজ দলের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেষ বন্ধনটুকুও ছিন্ন করে করে দিলেন শাসকদলের সঙ্গে। তবে এই পদত্যাগ কোনও সাধারন পদত্যাগ হলনা, তৃনমূল দলটাকে আড়াআড়ি ভেঙে গেলেন তিনি।

RELATED ARTICLES

Most Popular