শশাঙ্ক প্রধান: “অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী কিংবা স্বসহায়ক দল সব্বাইকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সভায়। গরিব মানুষদের আবাস যোজনায় বাড়ি কিংবা বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা ইত্যাদি নানা রকম সরকারি প্রকল্পের লোভ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দলনেত্রীর সভা ভরানোর জন্য। আসলে ডেবরার মানুষরা তৃনমূল নেতাদের ভালবাসেনা কারন খোঁজ নিয়ে দেখুন একেকজন গত কয়েক বছরে প্রাসাদের মালিক হয়ে বসে আছে। ” রীতিমত বিস্ফোরক ভাষায় দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন দলেরই এক প্রাক্তন প্রবীণ নেতা। যে সে নেতা নয়, ডেবরায় তৃনমূল কংগ্রেসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও বটে।
মঙ্গলবার ডেবরা এলাকায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দিয়ে কিছু ফ্লেক্স পড়তে দেখা যায়। দাদার অনুগামী নাম দিয়ে ওই ফ্লেক্স কারা লাগলো তারই খোঁজে গিয়ে জানতে পারা যায় ফ্লেক্স টাঙিয়েছেন ডেবরা এলাকার পুরানো তৃনমূল নেতা অশোক বরম ও তাঁর সঙ্গীরা এই ফ্লেক্স লাগিয়েছেন। অশোক স্বীকার করে নেন সেই কথাও। কেন তিনি এই ফ্লেক্স লাগলেন প্রশ্ন করতেই নিজের ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
বরম জানান, ‘এক সময় তমলুক কলেজের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম আমি। ১৯৯৮ সাল থেকে দিদির সঙ্গে আছি। ডেবরায় পার্টিকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে চারবার আমার দোকান ভেঙেছে সিপিএম। তারপর ২০১১তে পার্টি ক্ষমতায় আসার পর ক্রমশ পার্টিতে গুরুত্ব হারিয়েছি আর যারা পার্টিতে এসেছে তারা নিজেরা কামিয়ে পার্টিকে খাদের কিনারায় ঠেলে দিয়েছে।”
বরম বলেন, ” নেতাদের বলেছি কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এরপর ডুঁয়া অঞ্চলের সভাপতি ছিলাম এবছর ২১শে জুলাই অবধি। এখন সেটাও নেই। টাকা দিয়ে জেলা ব্লক অঞ্চলের পদ কেনা হচ্ছে। এই ব্লকের ১৪টি অঞ্চলের সভাপতির মধ্যে ১২জনের একই অবস্থা। এদের পাশে মানুষ নেই। এই দলে এখন প্রতিবাদ করার লোক নেই। একমাত্র শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া। ব্লকের হাজার হাজার দলীয় কর্মী এখন দাদার (শুভেন্দু অধিকারী) দিকেই চেয়ে। দাদা যে পথেই যাবে সেই পথেই যাব আমরা।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের এই ডেবরা ব্লকে তৃনমূল দল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এমনিতেই জীর্ণ। দলের সভাপতি রাধকান্ত মাইতি, পুরানো নেতা আলোক আচার্য্য, বিধায়ক সেলিমা খাতুন বিবি সবারই নিজ নিজ গোষ্ঠী রয়েছে। এখানে বামেরা যেমন আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে তেমনই বিজেপিরও যথেষ্ট প্রাধান্য রয়েছে। তারমধ্যে দাদার অনুগামী দের প্রকাশ্যে আসায় শাসকদলের অবস্থা যথেষ্টই চ্যালেঞ্জ পূর্ন হয়ে পড়েছে।