নিজস্ব সংবাদদাতা: শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ পূর্ব মেদিনীপুরের দুই ব্লক সভাপতিকে অবিলম্বে সরানোর নির্দেশ দিলেন মূখ্যমন্ত্রী তথা দলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জী আর এই নির্দেশ পাঠানো হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তথা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা সাংসদ শিশির অধিকারীকেই। শুক্রবার বিকালে এমনই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে সঙ্গে এও বলা হয়েছে দল বিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িত দলের বিভিন্ন পদাধিকারী সহ কর্মীদের বিরুদ্ধে যেন কড়া ব্যবস্থা নেয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি।
অবশ্য একটি সূত্রে জানা গেছে শুধু পূর্ব মেদিনীপুরই নয় পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলা যেখানে শুভেন্দু সাংগঠনিক দায়িত্বে ছিলেন সেখানে সেখানেই এরকম তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ২০২১য়ের জানুয়ারি থেকেই শুভেন্দু প্রভাব মুক্ত সংগঠন দেখতে চান সুপ্রিমো। ইতিমধ্যেই দলের সংগঠন বিষয়ক দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে পরিবর্তে সেই দায়িত্বে পুনর্বহাল হয়েছেন পার্থ চ্যাটার্জী তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ‘শুভেন্দু ছাঁটাই’য়ে নেমে পড়ল তৃনমূল।
জানা গেছে আপাতত ২জন ব্লক সভাপতিকে সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শোনা যাচ্ছে নন্দীগ্রাম ও কাঁথির ব্লক সভাপতিকে সরাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি হলদিয়া, নন্দীগ্রাম সহ যেখানে যেখানে দল বিরোধী কাজ হচ্ছে সেখানে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। যদিও অন্য একটি সূত্র বলছে নন্দীগ্রামের ব্লক সভাপতিকে সরতে বলা হয়েছে নিশ্চিত কিন্তু অন্যজন নন্দকুমার নাকি কাঁথি তা নিশ্চিত নয় তবে এই এলাকাগুলিতে দল বিরোধী কাজ হচ্ছে বলে শিশির আধিকারীকে বলেছেন মমতা।
শুক্রবার জেলা সভাপতি,সাংসদ ও বিধায়কদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, ‘দলে থাকতে হলে থাকার মত থাকুন নচেৎ লুটেরাদের সঙ্গে চলে যান।” এদিন মমতা ব্যানার্জী বুঝিয়ে দিয়েছেন গ্রামে সংগঠনের ওপর দল যেমন আরও জোর দিচ্ছেন তেমনি দলের মধ্যে ‘দল বিরোধী’দের বরদাস্ত করা হবেনা। তিনি বলেছেন,”নন্দীগ্রাম সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় দলবিরোধী কাজ হচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে যাঁরা নেই তাঁদের সরতে হবে। দলে থেকে কোনও দল বিরোধী কাজ বরদাস্ত করা হবেনা।” এই আমাদের সঙ্গে যারা নেই এই কথা যে আসলে শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর অনুগামীদেরই বলা হয়েছে সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। এই লোকেদেরই তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এবং ফের ব্লক সভাপতি সহ বিভিন্ন পদে রদবদল হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
তৃনমূলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২১শে জুলাইয়ের পর যে সাংগঠনিক রদবদল হয়েছিল তাতে সংঘাত এড়াতে বহু জায়গায় শুভেন্দু অনুগামীদের রেখে দেওয়া হয়। জেলা, ব্লক, অঞ্চলের পাশাপাশি যুব, মহিলা, ছাত্র ইত্যাদি নানা স্তরে এখনো শুভেন্দু ঘনিষ্ঠরা পদে রয়েছে। এটা শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয়, পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ অন্য কয়েকটি জেলা যেখানে শুভেন্দু দায়িত্বে ছিলেন সেখানেই হয়েছে। এই পদ গুলি থেকে এবার সরানো হবে তাঁদের। সুব্রত বক্সী সহ কয়েকজন নেতার তত্ত্বাবধানে এই কাজ শুরু হবে শীঘ্রই। নতুন বছরের নতুন মাস একেবারে ‘আগাছা’ বিহীন নেতৃত্ব চাইছেন মমতা।