Homeএখন খবরফের ধোঁকা খেলেন সৌগত, চাপে রাখার কৌশল ব্যর্থ করে তৃনমূল ছাড়ছেন শুভেন্দু!...

ফের ধোঁকা খেলেন সৌগত, চাপে রাখার কৌশল ব্যর্থ করে তৃনমূল ছাড়ছেন শুভেন্দু! বললেন, এক সাথে কাজ করা সম্ভব নয়

নিজস্ব সংবাদদাতা: মাত্র ৪টি শব্দ, যা বলতে পারছিলেন না অথচ অনুভব করছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সেই কথাটা শেষ অবধি বলেই ফেললেন, ‘একসঙ্গে কাজ করা মুশকিল।’ যদিও এটাও অধিকারী প্রকাশ্যে বলেননি, হোয়াটস্যাপে লিখেছেন প্রবীণ তৃনমূল সাংসদ সৌগত রায়কে সেই সৌগত রায় মাত্র ১২ঘন্টা আগে যিনি দাবি করেছিলেন, সমস্ত সমস্যা মিটে গেছে বা ‘অল প্রবলেম সর্টস।’ রায়ের এই বক্তব্যকেই কার্যত বিচ অফ ট্রাস্ট বলে অভিযুক্ত করেছেন প্রাক্তন পরিবেশ তথা সেচ মন্ত্রী। বলেছেন, কথা ছিল ৬ তারিখ এ নিয়ে প্রকাশ্যে যা বলার বলব আমিই কিন্তু তার আগেই আপনারা সব বলে ফেললেন! আর একসাথে কাজ করা সম্ভব নয়। যদিও এখনও শুভেন্দু নিজে কিছুই বলেননি কিন্তু অধ্যাপক সৌগত রায় যদি এবার ঠিকঠাক বলে থাকেন তাহলে দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি, তৃনমূল ছেড়েই দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন শুধু তাঁর নিজের মুখে ঘোষনা করা টুকু বাকি।

মঙ্গলবার উত্তর কলকাতার একটি গোপন জায়গায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সাড়ে তিনঘন্টার বৈঠক হয় যে বৈঠকে হাজির ছিলেন সৌগত রায় এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকের পরই সংবাদ সংস্থা PTI কে সৌগত রায় বলেন, “সমস্ত সমস্যা মিটে গেছে। দুপক্ষের মুখোমুখি বসার প্রয়োজন ছিল। সেই বসা হয়েছে এবং সমস্যা মিটে গেছে। দলেই থাকছেন তিনি। একসাথেই কাজ করব।” আরও একটি সংবাদমাধ্যম রায় কে উদ্ধৃত করে বলে, সম্ভবতঃ আগামীকালই (অর্থাৎ আজকে, বুধবার) সবার সামনে মুখ খুলবেন শুভেন্দু। জবাবে বুধবার শুভেন্দু বলেছেন, তাঁর মুখ খোলার কথা ছিল আরও ৪দিন পরে অর্থাৎ ৬ তারিখ। কিন্তু তাঁর আগেই সৌগত রায় বলে ফেললেন।

শুভেন্দু নাকি আজ লিখেছেন, ‘ আমার বক্তব্যের এখনও সমাধান হয়নি। সমাধান না করেই আমার ওপর সব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ৬ই ডিসেম্বর আমার সাংবাদিক বৈঠকে সব বলার কথা ছিল। তার আগেই সংবাদমাধ্যমের কাছে সব বলে দেওয়া হল। আপনাদের সাথে একসঙ্গে কাজ করা মুশকিল। আমায় মাফ করবেন।” আবারও বলার যে শুভেন্দু ঠিক এই কথাগুলি বাইরে কোথাও বলেননি। রায় নিজেও কিছু বলেননি। শোনা যাচ্ছে সৌগত রায়কেই বলেছেন যা বাইরে এসেছে। আর সেটা থেকেই পরিষ্কার সব নয় কিছুই যে মেটার নয়, এটা আরও আগে থেকেই পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন শুভেন্দু।

আসলে যেদিন থেকে শুভেন্দু বুঝেছেন যে, একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয় বিশেষ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেদিন থেকেই আলাদা পথে হাঁটা শুরু করেছিলেন তিনি। আর যেদিন থেকে আলাদা হাঁটা শুরু করেছেন সেদিন থেকে ফাটল আরও দৃঢ় হয়েছে। বৈরিতা এবং তিক্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে বাঁকুড়ার সভা থেকে নাম না করেই মমতা ব্যানার্জী তাঁকে আক্রমন করেন আর তার পরই ২৭তারিখ মন্ত্রীত্ব সহ সমস্ত সরকারি পদ ছেড়ে দেন তিনি। এখন বাকি রয়েছে বিধায়ক পদ ও দলের প্রাথমিক সদস্য পদটুকু ছাড়ার।

সূত্র বলছে একটি ভাবনা ছিল ১০ই ডিসেম্বরের মধ্যে তৃনমূল থেকে পুরোপুরি মুক্তি নিয়ে নেবেন তিনি। এরই মধ্যে তাঁর মন্ত্রীত্ব ছাড়ার পরই পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর শহরে ৭ই ডিসেম্বর সভার আহ্বান করেছেন মমতা ব্যানার্জী। হয় শুভেন্দুকে ৭ তারিখের মধ্যে দল ছাড়তে হবে নতুবা ওই দিন মূখ্যমন্ত্রীর সভায় হাজির থাকতে হবে। যদি না থাকেন তবে শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে তাঁকে বহিষ্কার করতে পারে দল। নিশ্চিত ভাবেই সেই সুযোগ তিনি দেবেননা আর সে কারনেই হয়ত ৬ই ডিসেম্বর বেছে নিয়েছিলেন মুখ খোলার জন্য। কিন্তু পরিস্থিতি এখন যা দাঁড়ালো তাতেই ৬ই ডিসেম্বরের আগেই কী এসপার ওসপার করে নেবেন শুভেন্দু অথবা তৃনমূল কংগ্রেস?

এদিকে এই নিয়ে দুবার ধোঁকা খেলেন সৌগত রায়। এর আগেও শুভেন্দুর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠক করার পর তিনি বলেছিলেন, সমস্যা মিটে গেছে, দলেই থাকছেন শুভেন্দু। সৌগত রায়ের দ্বিতীয়বারের ধোঁকা খাওয়াকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। বলেছেন, নিজের নম্বর বাড়াতে শুভেন্দুকে নিয়ে আগ বাড়িয়ে কথা বলেছেন সৌগত বাবু। অন্যদিকে মনঃক্ষুন সৌগত রায় বলেছেন, ‘আমি আপনাদের কাছে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে বলেছি গতকাল মিটিংয়ে যা হয়েছিল। যাকে শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া আরও ৪ জন উপস্থিত ছিলাম। যদি উনি ওর মন পরিবর্তন করে থাকেন তাহলে সেটা তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপার। তিনি আপনাদের তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন’।

তবে তাঁর কাছে যে শুভেন্দু অধিকারীর মেসেজ এসেছে বলে স্বীকার করে নেন সৌগত রায়। বলেন. ‘মেসেজটা পেয়েছি, বিস্তারিত জানাবো না’। তবে অনেকটাই হতাশার সঙ্গে তিনি বলেন, ‘উনি মত বদলে ফেললে আর কথা বলে লাভ কী?

RELATED ARTICLES

Most Popular