নিজস্ব সংবাদদাতা: বাড়ির লোক বিয়ে ঠিক করেছিল মাসুর। কিন্তু লাজুক মাসু জানিয়েছিল, ভাইকেই মেয়ে দেখতে বল, ওর পছন্দ হলেই আমার চলবে। নদিয়ার নাকাশিপাড়ার বিলকুমারি গ্রামের পশ্চিম পাড়ার সেই মাসুদুর ৫ সহকর্মীকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে নিজেও আত্মঘাতী হয়েছে বিশ্বাসই করতে পারছেননা প্রতিবেশিরা। সাংবাদিকদের উল্টোপাল্টা প্রশ্নে চটেও উঠছেন তাঁরা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
গ্রামে ফিরলেই গ্রামের ছেলেদের জন্য ফুটবল কিনে দেওয়া, প্রতিবেশির ছেলে মেয়েরা ঠিক ঠাক স্কুলে যাচ্ছে কিনা তার খোঁজ খবর নেওয়া সবই করত ২৮বছরের মাসু। আর কিছুটা ধর্মপ্রাণও বটে। বুধবার সকালে ছত্তিশগড়ের বস্তারের এমন মর্মান্তিক ঘটনা কেন ঘটাতে গেল তার উত্তর খুঁজছে সারা গ্রাম।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের জওয়ান ২৮ বছরের মাসুদুর রহমানের মা হানিফা বিবি।“ওখানকার লোকজন খুব কঠোর। ওদের লোকজন আমার ছেলেকে ছুটি দিতে চাইছিল না। আমার ছেলে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসতে চেয়েছিল। আমার ছেলেকে ছুটি দিলে হয়তো এই ঘটনা ঘটতো না।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
হানিফা বিবি জানিয়েছেন, “১০ দিন আগেই আমার ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। ছেলে বলেছিল দু’মাস পর ছুটি নিয়ে বাড়ি আসবে। ও বলেছিল এটা একটা ভয়ংকর জায়গা মা। এখানে রাস্তায় বেরনো পর্যন্ত যায় না। আমি দু’মাস পর ছুটি নিয়ে বাড়ি যাবো। এখানে অনেককেই দীর্ঘদিন ধরে ছুটি দেওয়া হয় না। কেউ পাঁচ বছর তো কেউ ছ’বছরেও ছুটি নিয়ে বাড়ি যেতে পারেনি। ও বলেছিল আমি ছুটির আবেদন করেছি। ওরা ছুটি দিচ্ছে না।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বুধবারেও ছেলেকে ফোন করেছিলেন মা হানিফা বিবি। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, “এদিন আমি ছেলেকে ফোনে পাইনি। ফোনটি ধরেছিল তারই এক সহকর্মী। সে বলেছিল, আমার ছেলে পাঁচটার সময় ডিউটি করে ফিরবে। তখনই তাকে ফোনে দেওয়া যাবে। তার আগেই এমন খবর পেলাম।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ছুটি না পেয়েই অবসাদ বা হতাশার জেরে যে এই ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হানিফা বিবি। ইতিমধ্যেই ছেলে মাসুদুলের বিয়ের কথাবার্তা প্রায় পাকা করে ফেলেছিলেন তাঁর বাবা-মা। মাসুদুলের বাবা মারফত আলি শেখ বলেন, “আমি ছেলেকে বলেছিলাম এবার বেশি করে ছুটি নিয়ে এসো। ও বলেছিল আমি ছুটির জন্য আবেদন জমা দিয়েছি। কিন্তু ছুটি দিচ্ছে না।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
গ্রামেরই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে মাসুদুল। ২০০৮ সালে ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশে যোগ দিয়েছিল মাসুদুল। সে ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলার বস্তারে কাজ করছিল।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
১বছর ছুটি পায়নি মাসুদুর। বলত, ”আমার পেছনে লোক লেগেছে। ওরাই কাঠি করে বারবার আমার ছুটি বাতিল করে দেয়।” একবছর আগেও বাড়িতে এসে তেমনটাই বলেছিল সে। ফোনেও তাই জানাত। সেই প্রচণ্ড মানসিক চাপ থেকেই কি বচসায় জড়িয়ে পড়েছিল সে? আর তার পরিনতিতেই কি এমন মারাত্মক ঘটনা ঘটিয়ে ফেলল সে ? উত্তর খুঁজছে পরিবারও।