নিজস্ব সংবাদদাতা: শুভেন্দু অধিকারীকে জবাবটা দেওয়া উচিৎ ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের মাটি থেকেই কিন্তু মাঠ ভরানোর ঝুঁকি নিলনা তৃনমূল। কারন পূর্ব কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুর অথবা ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলিতে লোক জোগানোর লোকটাই যে শুভেন্দু অধিকারী। শেয়ালের কুমির ছানা দেখানোর মত একই লোককে হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম মায় বাঁকুড়া, পুরুলিযার সভায় নিয়ে গিয়ে যিনি লোক ভরানোর ছবি বাজিমাত করতেন তাঁর বিরুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুরে কমব্যাট সভা করে লোক হাসানোর মানে হয়না। তাই পশ্চিম মেদিনীপুরেই সভা করার সিদ্ধান্ত নিল তৃনমূল। আগামী ৭ই ডিসেম্বর মেদিনীপুর শহরে শুভেন্দু বিহীন তৃণমূলের ক্ষমতা দেখানোর প্রথম সভায় আসছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জী। আর তারই প্রস্তুতি হিসাবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শীর্ষ নেতৃত্বকে একটি সাংগঠনিক সভা সেরে ফেললেন রাজ্যে তৃণমূলের অন্যতম সেনাপতি সুব্রত বক্সী।
শুক্রবার শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রীত্ব সহ কয়েকটি সরকারি পদে ইস্তফা দেওয়ার পরই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আশু বৈঠক ডেকেছিলেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। কলকাতার সেই বৈঠকেই ঠিক হয়েছিল শুভেন্দুকে কমব্যাট করার ডাক। তৃণমূলের উচিৎ ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের মাটিতে সভা করেই সেই কমব্যাটের সাহস দেখানোর কিন্তু সম্ভবতঃ মূখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক না হলে বিষয়টা লোক হাসাহাসির পর্যায়ে চলে যেতে পারে আন্দাজ করেই পূর্ব মেদিনীপুরের বদলে পশ্চিমে মমতার সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৭ই ডিসেম্বর সেই সভার প্রস্তুতি বৈঠকেও প্রকট হয়ে উঠল শুভেন্দু এফেক্ট। কাউকে ডাকাই হলনা এই সভায় আর কেউ ডাক পেয়েও এলেননা।
শুক্রবার কলকাতার জরুরি বৈঠকের পরই ঠিক হয়েছিল মেদিনীপুর শহরের সভা দিয়েই শুরু হবে তৃণমূলের ‘বিভীষন’ বধের লড়াই। সেই সভারই প্রস্তুতি বৈঠকে শনিবার মেদিনীপুর শহরের প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত থাকার জন্য দলের জেলা কমিটি ছাড়াও, বিধায়ক, ব্লক নেতৃত্ব, জেলা পরিষদ সদস্য, ব্লক সভাপতি ইত্যাদি সবার উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল জেলা পরিষদের শহিদ প্রদ্যোৎ স্মৃতি ভবনে অনুষ্ঠিত সুব্রত বক্সীর বৈঠকে। কিন্ত সেখানেই আড়াআড়ি বিভাজন হয়ে গেল দলে।
অভিযোগ এই বৈঠকে ডাক পাননি দলের মেন্টর প্রণব বসু, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রণব বসু, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশিস ভৌমিক ও সঞ্জয় পান, গড়াবেতা-৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক সভাপতি আকাশদ্বীপ সিনহা, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি ও অমূল্য মাইতি ইত্যাদি জেলার শীর্ষ নেতারা। আবার জানা গেছে বৈঠকে ডাক পেয়েও হাজির হননি জেলাপরিষদের অধ্যক্ষ তপন দত্ত, উপাধ্যক্ষ কাবেরী চ্যাটার্জী, জেলা নেতা দুলাল মন্ডলের মত নেতারা।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি জানান, “দেখুন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর প্রতি আমার আনুগত্য প্রশ্নাতীত। যদি আমাকে ধরেই নেওয়া হয় শুভেন্দু অনুগামী বলে তাহলেও বলতে হয় আমি দল ছাড়িনি আর শুভেন্দু অধিকারীও অন্যদলে যোগ দেননি। তাহলে আমাদের এই বৈঠকে ডাকা হলনা কেন? আমার মনে হচ্ছে একদল নিজেদের স্বার্থে মূখ্যমন্ত্রীকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন।”
যদিও শুভেন্দু বিরোধীদের কথায়, ‘ দেখুন কারা কোথায় অবস্থান করছে তা দলের কেন কারও জানতে বাকি নেই। তারপরেও আমরা কয়েকজনকে ডেকেছিলাম কিন্তু তাঁরা অনুপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দিয়েছেন নিজের অবস্থান।’ সব মিলিয়ে মমতা ব্যানার্জীর সভার আগেই আড়াআড়ি স্পষ্ট দলীয় বিভাজন।প্রশ্ন হচ্ছে এই পরিস্থিতিতে কতটা সফল কমব্যাট করা সম্ভব শুভেন্দুকে।