নিউজ ডেস্ক: বিধানসভা নির্বাচন যতই কাছে আসছে ততই যেন শনি মহারাজের শাসকদলের নেতাদের কাছ থেকে সিন্নি পাওয়ার বাসনা প্রবল হয়ে উঠেছে। মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সিন্নি পেয়ে শনি দেবতা এতই ডগমগ যে একের পর এক শাসকদলের অন্দরে বিদ্রোহের প্রসাদ চেয়েই চলেছেন এবং পেয়েও চলেছেন। দক্ষিণের শুভেন্দু থেকে উত্তরের মিহিরের পর এবার প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করে শনিকে সিন্নি ছড়ালেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর।
কিছুদিন আগেই অনুব্রত মণ্ডলকে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট ব্লকের দলের সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বিধানসভা কেন্দ্রেরই বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাহ সাহেব। এদিন সরাসরি অনুব্রতর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মন্ত্রী। স্বাধীন ভাবে মঙ্গলকোটে কাজ করতে চান বলেই জানান তিনি। এমনিতেই জমিয়েতে ই উলেমা হিন্দ এ বরাবর একাই ছড়ি ঘুরিয়ে এসেছেন। এখন মাথার ওপরে কেষ্টদাকে মানবেন কেন?
তাই অনুব্রত মণ্ডলের অধীনে কাজ করতে অস্বীকার করে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনে ওরা কী করেছে সেটাও মানুষ জানে, সংবাদমাধ্যম জানে। আমি ঝুঁকি নিয়ে হাত পোড়াতে যাব না।‘
এদিন সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, ‘কেউ কাউকে দায়িত্ব দিলে দেবেন। তিনি দাঁড়াবেন, তিনি জেতাবেন। আমি ওর অনুগত হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত নই। এটা আমি পরিষ্কার বলে দিলাম। আমি ওর মেজাজ চিনি। গত নির্বাচনে ও কী করেছে সেটাতো সবার কাছেই পরিষ্কার। আমি কোনও ঝুঁকি নিতে পারবনা।” আমি মঙ্গলকোটে গেলে স্বাধীনভাবে কাজ করবো।‘
এরপরেই অনুব্রতকে কটাক্ষ করে সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, ‘উনি বড় খেলোয়াড়। আমি ওই পর্যায়ের খেলোয়াড় নই। মারামারি করতে আমি চাই না। কেউ মারামারি করুক এটাও আমি চাই না’। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এইভাবে দলের তাবড় তাবড় নেতারা যেভাবে নিজের দলে বিরুদ্ধেই সুর চড়াচ্ছেন, তাতে শাসকদলের অস্বস্তি যে ক্রমশই বাড়ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
যদিও শুধু অনুব্রত বলেই নয়, অন্দরের খবর হল গোটা তৃনমূল দলটার ওপরই চটে রয়েছেন সিদ্দিকুলা। যতদিন মমতা ব্যানার্জী মুসলিমদের এক তরফা তোষণ করে গেছেন ততদিন তিনি তাঁর মাখন খেয়েছেন। মানুষকে বুঝিয়েছেন তাঁর চাপেই সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে মুসলিমরা কিন্ত তৃণমূলের ঘাড়ের ওপর বিজেপি। ফলে তৃনমূল এখন খানিকটা আমরাও হিন্দু গোছের নীতি নিয়েছে। রামনবমী, হনুমান জয়ন্তীর পর সদ্য চালু হয়েছে পুরোহিত ভাতা। ফলে গোঁড়া মুসলিম বিশেষ করে ইমাম, পীরদের মধ্যে দোটানা শুরু হয়েছে। এমনকি ফুরফুরা শরীফেও গোঁসার লক্ষন স্পষ্ট। এমতাবস্থায় তৃণমূলের গন্ধ গায়ে থাকলে ভোট কাটার সম্ভবনা প্রবল। আর সে কারণেই সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী শুধু অনুব্রত কেন কাউকেই নিজের এলাকায় মেনে নিতে পারছেন না বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা।