Homeএখন খবর"ও ভেবেছিল ওকে আমি আদর করব কিন্তু ওর গলা টিপে আমি মেরে...

“ও ভেবেছিল ওকে আমি আদর করব কিন্তু ওর গলা টিপে আমি মেরে ফেললাম স্যার!” খড়গপুরের তরুণী হত্যায় গ্রেপ্তার ‘সরল’ স্বামীই

At first I tell my wife to move away from Samir. We will work together and start a family again with our two children. But my wife did not agree. She informs that he will go to the market with Samir. This time Samir was coming and Saraswati was following him. I also followed him and told him to stand up. Samir leaves and I take Saraswati to this forested place. I threw her on the ground. She fell down. I leaned over her. She didn't stop then. she looked like he thought I would have sex with her, caress her but I drank and the murder hit me in the head. I grabbed her by the throat. Then I realized she was dead. Then I try to cut her throat with a sharp stone. Then at night I bring this garbage inside the pile. I also tried to burn her by burning some papers. "

নরেশ জানা: ৪৮ ঘন্টা পর খড়গপুর শহরের রবীন্দ্রপল্লী এলাকার তরুণী গৃহবধূ হত্যা রহস্যের কিনারা করে ফেলল পুলিশ আর পুলিশ খানিকটা অবাক করে দিয়েই তরুণীর স্বামী শেষ অবধি স্বীকার করে নিল যে খুনটা সেই করেছে। অথচ এই স্বীকারোক্তির কয়েক ঘন্টা আগে অবধি পুলিশের ধারনা ছিল খুন করেছে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি। শুধু পুলিশ নয় এমনটাই ধারনা ছিল তরুণীর বাপের বাড়ির প্রতিবেশীদেরও। এতটাই নিজেকে সহজ সরল সাজিয়ে রেখেছিল স্বামী।কিন্তু শেষ অবধি পুলিশের লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদে শেষ অবধি ভেঙে পড়ে তরুণীর স্বামী। বৃহস্পতিবার গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ  করিয়েছে পুলিশ।

উল্লেখ্য মঙ্গলবার সকালে খড়গপুর শহরের ধোবিঘাট সংলগ্ন রেলের আবর্জনা ফেলার জায়গা থেকে উদ্ধার হয় ২৬বছরের গৃহবধূ সরস্বতী তালুকদারের মৃতদেহ। তাঁর গলায় সামান্য কাটা দাগ ছিল, দেহের কিছুটা অংশ পুড়ে কালো হয়ে যাওয়ার মত ছিল। দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ জানতে পারে সরস্বতী তার বাপের বাড়িতে থাকত তাঁর ৪ বছরের মেয়ে এবং আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে। তাঁর বিয়ে হয়েছিল শহরের বড় আয়মা, রামনগর এলাকায়। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় কয়েকবছর ধরে বাপের বাড়িতেই থাকত সে। খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে বেসরকারি আয়ার কাজ করত। রবিবার কাজে বেরিয়ে ফেরেনি সে। বাড়ির লোকের ধারনা ছিল আয়ার কাজে সে রাতে হাসপাতালেই থেকে গিয়েছে। কিন্তু সোমবারও সে ফেরেনি।

খোঁজাখুঁজি চলে কিন্ত পাওয়া যায়নি তাঁকে। মঙ্গলবার সকালের দিকে দেহ মেলে তাঁর রাম নগর। দেহ উদ্ধারের পর পুলিশ প্রাথমিকভাবে বুঝতে পারে গলায় সামান্য রক্ত কিংবা দেহে কালচে দাগ থাকলেও আদতে শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত হয় এটা খুনেরই ঘটনা। ময়নাতদন্তের পর মঙ্গলবার সরস্বতীর দেহ সৎকার করে তাঁর স্বামী প্রকাশ মংরাজ । কারন বিবাহ বিচ্ছেদ না হওয়ায় স্বামীই সেই অধিকারী। প্রকাশ পুলিশকে সে জানায় যে, সে কয়েকদিন বাড়িতে ছিলনা। কাজের সন্ধানে এদিক ওদিক গিয়েছিল, স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়েই সে এসেছে। সে আরও জানায়, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বনিবনা ছিলনা। সে নেশা করে বলে স্ত্রী তাঁকে পছন্দ করেনা আর সেও তাঁর স্ত্রীকে পছন্দ করেনা কারন তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। তাই দুজনই আলাদা আলাদা থাকত। সহজ সরল নির্ভেজাল স্বীকারোক্তি পুলিশকে প্রথম দিকে প্রভাবিত করে।

পুলিশও খোঁজ খবর নিয়ে সরস্বতীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের হদিসও পায় এবং জানতে পারে সরস্বতীর দিদির স্বামী সমীরের সঙ্গে তাঁর একটা সম্পর্ক রয়েছে যাকে আবার তাঁর দিদি বর্তমানে ছেড়ে দিয়েছে। পুলিশ সমীরের সঙ্গে কথা বার্তা বলে কিন্তু সমীর জানায় তার সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেও রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ সরস্বতীর সঙ্গে প্রকাশকেই শেষ দেখেছিল সে। এদিকে প্রকাশ পুলিশকে জানিয়েছিল যে সে কয়েকদিন এলাকায় ছিলনা, কাজের সন্ধানে এদিক ওদিক গিয়েছিল। তাহলে কে মিথ্যা বলছে এটা জানতে ফের প্রকাশকে জেরা করে পুলিশ এবং এরপরই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য।

খড়গপুর পুলিশের এক আধিকারিক জানান, “রবিবার বিকালে সমীরের সঙ্গেই বাজারে যাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল সরস্বতী কিন্তু রাস্তায় দেখা হয়ে যায় প্রকাশের সাথে। প্রকাশ সরস্বতীকে সমীরের সাথে দেখা করার পথে আটকায়। সমীরের বাড়িও বড় আয়মা এলাকায়। প্রকাশ পুলিশকে জানায়, ‘আমি আমার বউ কে বোঝাই যে সমীরের কাছ থেকে সরে আস। আমরা দুজনে মিলে খেটে খাব আর বাচ্চা দুটোকে নিয়ে ফের সংসার শুরু করব। কিন্তু আমার স্ত্রী রাজি হয়নি। সে জানিয়ে দেয় সে সমীরের সঙ্গেই বাজার যাবে। এই সময় সমীর আসছিল এবং সরস্বতী তার পেছনে পেছনে যাচ্ছিল। আমিও তার পেছনে পেছনে যাই এবং তাকে দাঁড়াতে বলি। সমীর চলে যায় সরস্বতীকে নিয়ে আমি এই জঙ্গলঘেরা জায়গাটায় নিয়ে আসি। আমি তাকে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলাম। সে চিৎ হয়ে পড়ে। আমি তার ওপর ঝুঁকে পড়ি। ও তখন বাধা দেয়নি ওকে দেখে মনে হচ্ছিল ও যেন ভাবছে আমি ওর সাথে সহবাস করব, আদর করব কিন্তু আমি মদ খেয়েছিলাম আর আমার মাথায় খুন চেপে গিয়েছিল। আমি ওর গলা টিপে ধরি। তারপর বুঝতে পারি ও মারা গেছে। তখন একটা ছুঁচালো পাথর দিয়ে গলা কেটে দেওয়ার চেষ্টা করি। এরপর একটু রাত হলে এই আবর্জনার স্তুপের ভেতরে নিয়ে আসি। কিছু কাগজপত্র জ্বালিয়ে দিয়ে ওকে পোড়ানোর চেষ্টাও করি।”

বৃহস্পতিবার দুটো ঘটনাস্থল অর্থাৎ যেখানে সরস্বতীকে খুন করা হয় আর যেখানে তাকে নিয়ে গিয়ে লাশ গোপন করার চেষ্টা করা হয় সেই জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় প্রকাশকে। খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। প্রকাশের গ্রেপ্তারের খবরে হতবাক হয়ে যায় সরস্বতীর বাপের বাড়ির প্রতিবেশীরা। তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার শ্মশানে স্ত্রীকে পোড়ানোর সময় প্রকাশের হৃদয় বিদারক কান্না এতটাই নিখুঁত অভিনয় ছিল যে তাঁরাও ভেবেছিলেন, খুন করলে সমীরই করতে পারে প্রকাশ কখনওই নয়।

RELATED ARTICLES

Most Popular