শুক্রবার এই তাণ্ডবে পড়েছিলেন সহেলি আর সুশোভন । আরও হাজার হাজার জনতার মত এরাও মনে করেছিলেন ঘরে ফেরা হবেনা আর । ঠিক কি হয়েছিল দ্য খড়গপুর পোষ্টকে জানালেন দুজন । |
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
কালো পতাকা টায়ার জ্বালিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ চলছে। তখনই এক শুভানুধ্যয়ি বললেন স্টেশনে গিয়ে কান্ডারি এক্সপ্রেস ধরে নিতে। উলুবেড়িয়া স্টেশনে যখন টিকিট কেটে ট্রেনে চড়লাম তখন ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। তবে স্টেশন থেকে একটু এগিয়েই থেমে গেল। তারপর চারিদিকে লোকারণ্য। চলন্ত করমন্ডল এক্সপ্রেসের ওপর পাঠ ছড়ায় ভয়ে সকলে জানালার কাঠের সাটার নামিয়ে দিয়েছেন। বাইরে থেকে দরজায় ক্রমাগত আঘাত চলছে। আর তার সাথে দুম দাম আওয়াজ আসছে। এর মাঝেই আতঙ্কিত যাত্রীরা ট্রেনের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু করে দিয়েছেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সবার মধ্যে আতঙ্ক গ্রাস করেছে। বিকেল পাঁচটা অবধি আটকে থাকার পর বাইরে থেকে একজন জানালা খুলে বললেন ট্রেন থেকে বেরিয়ে যান, নয়ত ঝামেলায় পড়বেন। ট্রেন থেকে বেরিয়ে প্ল্যাটফর্ম চিনতেই পারছিনা। পুরো স্টেশন চত্তর ভেঙেচুরে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হামসফর এক্সপ্রেসের একাধিক কোচ ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সেই অচেনা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে কোনো রকমে বেরিয়ে আবার বাস ধরে কোনোভাবে বাড়ি পৌঁছলাম যখন তখন প্রায় রাত নটা। প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই রুটে নিয়মিত যাতায়াত করছি, জীবনে প্রথমবার এই দেশেরই সহনাগরিকের হাতে এভাবে আক্রান্ত হতে হবে সেটা ভাবতেও পারিনি। এদের সাথেই যদি আমাদের মাতৃভূমি বন্টন করে থাকতে হয় তাহলে আমাদের আবারও এরম ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
সুশোভন বর
সরকারী কর্মচারী
বাঘাযতীন প্যাসেঞ্জারের যাত্রী
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সকলেই হালকা মেজাজে যে যার মতন করে মতামত দিচ্ছিলেন। কিন্তু সেই পরিস্থিতির মাঝে যে পড়তে হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি। সাতরাগাছি পের হওয়ার সময়ই গুঞ্জন ওঠে উলুবেরিয়াতে নাকি একদল মানুষ রেল অবরোধ করেছে। তবে সঠিক সময়ে সাতরাগাছি ছেড়ে যাওয়ায় গুজব বলেই ধরেছিলাম। এরপরই হঠাৎ নলপুরে এসে দাঁড়িয়ে গেল ট্রেনটা। তারপর কোনো রকম কোনো ঘোষণা নেই।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
টানা আধ ঘন্টা পর মাইকে ঘোষণা হল উলুবেড়িয়াতে অবরোধের কারণে ট্রেন ছাড়তে দেরি হবে। ততক্ষনে একাধিক নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে যে করমন্ডল এক্সপ্রেসে যাত্রীদের ওপর পাথর ছোড়ার ঘটনা। সমস্ত যাত্রীরা কার্যত স্টেশনে কাঁপছেন কখন কি হয়। এত যাত্রী অথচ একজন কোনো আরপিএফ বা জিআরপি দেখা গেলনা। এভাবে আতঙ্কিত অবস্থায় প্রায় চার পাঁচ ঘণ্টা আটকে থাকার পর ঘোষণা হল ট্রেনটি সাঁতরাগাছি ফিরে যাবে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
তবে কখন যাবে সেটা বলা যাবেনা। তারও পরে প্রায় রাত সময় ঘোষণা হল যে ট্রেনটি খড়গপুর অবধি রাস্তার সব স্টেশনে দাঁড়াবে। ট্রেন চলতে শুরু করার পর উলুবেড়িয়া স্টেশনে যেভাবে ধ্বংসলীলা চলেছে সেটা দেখে প্রায় সমস্ত যাত্রীরাই আঁতকে উঠি। করমন্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রীদের কথা ভেবে তখনও শরীর শিউরে উঠছে। প্রায় রাত দুটোয় বেলদা পৌঁছনোর পর কার্যত ভগবানকে ধন্যবাদ দিলাম, অন্তত সুস্থ ভাবে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য।