নিজস্ব সংবাদদাতা: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রান হারালেন ম্যাঙ্গালুরুর ২ বাসিন্দা। একই দিনে লখনউতেও পুলিশের গুলিতে প্রান হারিয়েছেন ২৫বছর বয়সী এক প্রতিবাদকারী। ম্যাঙ্গালুরুর ঘটনায় ২জন গুরুতর আহত হয়েছেন বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাঁদের অবস্থাও সংকট জনক ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে ম্যাঙ্গালুরু কর্পোরেশন এলাকার অন্তর্ভুক্ত ওই দুই নিহত হলেন আবদুল জলিল, ৪৯ এবং নৌসীন ২৫। অন্যদিকের লখনউয়ের দৌলতগঞ্জ এলাকায় নিহত যুবকের নাম মহম্মদ ওয়াকিল।
গত সপ্তাহে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল উত্তরপুর্ব রাজ্যগুলিতে চলতি সপ্তাহে তা ক্রমান্বয়ে দেশের অন্য জায়গা গুলিতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহের প্রথমে পশ্চিম বাংলা থেকেই বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়েছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। বৃহস্পতিবার সেটাই দেখা গেল লখনউয়ের ও ম্যাঙ্গালুরুতে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ আচমকাই লখনউয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ, যার মূল টার্গেট ছিল পুলিশ। ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে, বাস জ্বালিয়ে, প্রকাশ্য রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি চালালে ওয়াকিলের মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে বিক্ষোভ ধুমায়িত হচ্ছিল দক্ষিনের কর্নাটকেও। বেঙ্গালুরু-সহ দক্ষিণ ভারতের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় জারি হয় কারফিউ। জানা গেছে উত্তর এবং দক্ষিন ম্যাঙ্গালুরু ছাড়াও কারফিউ বলবৎ করা হয় বারকে , কাদরি ও উরবা মোট ৫টি থানা এলাকায়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
কার্ফ্যু চলাকালীন রাস্তায় সন্ধে নাগাদ বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ২০ জন পুলিশকর্মী। বিক্ষোভ দমনে পুলিশ প্রথমে শূন্যে গুলি চালায়। কিন্তু পরে পুলিশের গুলিতেই ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। কংগ্রেস এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবারই দিনের শুরুতেই বেঙ্গালুরুতে নাগরিক সংশোধনী আইন বিরোধী মিছিলের পর আটক করা হয় ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহকে। তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরন করে পুলিশ। তার জেরে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠায় জায়গায় জায়গায় কারফিউ জারি করা হয়। সন্ধের পর কারফিউ অগ্রাহ্য করেই ফের ম্যাঙ্গালুরুতে বিক্ষোভে শামিল হন অনেকে। সেখান থেকেই এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি। যদিও পুলিশ প্রশাসনের দাবি, পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে দেখেই গুলিচালনা হয়েছিল। তবে তাতে মৃত্যুর ঘটনা কার্যত দক্ষিণ ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের আগুনে ঘৃতাহুতি দিল।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এই ঘটনার পর ম্যাঙ্গালুরুতে কারফিউয়ের সময়সীমা শনিবার অবধি বাড়ানো হয়েছে। আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। বেঙ্গালুরু, মাইসোর, হুবলি, বেল্লারি-সহ একাধিক শহরে প্রতিবাদে শামিল হওয়ায় বহু বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। সমস্ত স্পর্শকাতর এলাকায় জারি রয়েছে কারফিউ। তবে ম্যাঙ্গালুরুতে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর পর সাধারণ মানুষজন যে কোনও বাধাই আর মানছেন না, বরং আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি, তাও এতক্ষণে বেশ স্পষ্ট।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পুলিশকে সতর্ক করেছেন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরিয়াপ্পা । তিনি বলেন, পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনাকে ভালো চোখে দেখা হচ্ছেনা। পুলিশের কাজ গুন্ডা বদমাশদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া। ঘটনার তদন্ত করছে সরকার। যদি পুলিশ দোষি হয় তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
অসমে এই আন্দোলনের জেরে পুলিশের গুলিতে ৪জনের মৃত্যুর ঘটনার পর কর্ণাটক ও উত্তরপ্রদেশে আরও তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় দেশে মোট ৭জনের মৃত্যু হল সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধি আন্দোলনের জেরে ।