নিজস্ব সংবাদদাতা: সরকারি অনুষ্ঠান, সরকারের চতুর্দশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ প্রায় অর্ধ কোটি টাকা অথচ মমতা ব্যানার্জীর ছবি নেই! এমনই এক প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়ে বাছা বাছা বাক্যবান এবং পরামর্শ এবং তারই মধ্যে দিয়ে ‘তৃনমূল’ দলটা আসলে কোথায় গেছে তারই একটা ধারনা ছড়িয়ে দেওয়া, যা গত কয়েকমাস ধরেই করে আসছেন তিনি। মঙ্গলবার নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরেই মূখ্যমন্ত্রীর ছবি হীন সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরে শুরু হয়ে গেছে বিতর্কও। যেখানে মন্ত্রী হুঁশিয়ারি কিংবা ভবিষ্যৎ বানীও করেছেন বলা যেতে পারে, হুঁশিয়ারি দলের নেতাদের প্রতি আর ভবিষ্যতবাণী হলে অবশ্যই তা তার নিজেরই দলের উদ্দেশ্যে।
মঙ্গলবার বিকেলে নিজের জেলা পটাশপুর ২ ব্লকের আড়গোয়াল পঞ্চায়েতের নতুন প্রশাসনিক ভবন এবং প্রবেশদ্বারের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার দম্ভ ছাড়ুন না’হলে মানুষই আপনাদের সরিয়ে দেবেন।’ । এরপরই আগের জামানার প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতার দম্ভে ওদের সরকার বলতো, আমরা ২৩৫, শুধু ৩০ জনের কথা শুনবো না। কিন্তু নন্দীগ্রাম লড়াইয়ের মাত্র দেড় বছরের মধ্যেই ওদের ওত দম্ভ ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গিয়েছিল।’
আপাত দৃষ্টিতে এটিকে দলের নেতাদের প্রতি পরামর্শ মনে হতেই পারে কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর গত কয়েকমাস ধরে রাখা কিছু বক্তব্য যেমন, ‘অতীতকে যারা ভুলে যায় তাদের ভবিষ্যৎও অন্ধকার’ কিংবা ‘আমি লিফটে চড়ে উঠিনি আর প্যারাসুটেও নামিনি, সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠেছি’ যেমন দলের অনেক নেতা ভালভাবে নেননি তেমন এই ‘ক্ষমতার দম্ভ’ কিংবা ‘পরিণতি হবে বামফ্রন্টের মতই’ কথাকে স্বাভাবিক মনে করছেননা তাঁরা। বিশেষ করে দলের শুভেন্দু বিরোধী অংশ।
যেমন এই সভার পরই রামনগরের তৃনমূল বিধায়ক অখিল গিরি বলেন, ‘শুভেন্দুবাবু মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি উনি কেমন গণতান্ত্রিক ভাবে চালিয়েছেন তা আমরা দেখেছি। আর সরকারি প্রকল্পে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টাকা দিলেও তাঁর ছবি কেন ছিল না তা স্থানীয় বিডিওর কাছে জানতে চেয়েছি। শোকজ করতে বলেছি পঞ্চায়েত প্রধানকে।’ স্বাভাবিক ভাবেই মন্ত্রীকে ঘিরে ফের আরও একবার বিতর্ক জমে উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই। আর আখিলের এই কথা শুধুই যে তাঁর কথা নয় এটাও পরিস্কার। বরং মনে করা হচ্ছে দলের উঁচু তলার সায়েই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস দেখাচ্ছেন তিনি।