টেক ডেস্ক: ফোনের রিচার্জের মত এবার আগে থেকেই রিচার্জ করেই মিলবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ। রিচার্জ শেষ হয়ে গেলে আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যাবে ঘরের বিদুৎ সংযোগও। ফের রিচার্জ করলে মিলবে ফের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ। এমনই যুগান্তকারী পরিবর্তন কয়েক মাসের মধ্যেই চলে আসছে আমার আপনার ঘরে। প্রচলিত বিদ্যুৎ বিলের ব্যবস্থায় আসছে আমূল রূপান্তর, জেনে নিন কী কী বদলে যাচ্ছে ? আমাদের বর্তমান জীবন অনেকটাই প্রযুক্তি নির্ভর। আমদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোতেও আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া পড়ছে দিনের পর দিন। এরকমই একটি অতি প্রয়োজনীয় জিনিস হল আমাদের বাড়ীতে থাকা মিটার বক্সগুলি। কিছুদিনের মধ্যেই আর দেখা যাবে না এই মিটার গুলি। এর বদলে চলে আসছে নতুন ধরনের প্রিপেইড মিটার। সাথে সাথে আমূল বদলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিলের প্রচলিত ব্যবস্থা। লাইনে দাঁড়িয়ে বিল জমা করার দিন শেষ হতে চলেছে। মিটার রিডিং নিতে আর কেউ আসবে না আপনার বাড়ীতে। পাবেন না বিল, থাকবে না বিল বাকির ব্যাপার, আর সেই সাথেই নোটিশও আসা হবে বন্ধ। লাইন কাটতেও আসবে না কেউ।
এক নজরে জেনে নিন কি সেই নতুন ব্যবস্থা
প্রিপেইড মিটার কি?
প্রিপেইড মিটার এক ধরনের বৈদ্যুতিক মিটার, যাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে মিটার থেকে ধীরে ধীরে টাকা কেটে নেয় এবং টাকা শেষ হয়ে গেলে মিটারটি একসময় নিজে থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আবার বিদ্যুৎ ব্যবহার করার জন্য মিটারটি তে টাকা রিচার্জ করতে হয়।
এইসব মিটারে দুটি অংশ থাকে- মিটার ও ডিসপ্লে ইউনিট।
ডিসপ্লে ইউনিট
এই ডিসপ্লে ইউনিট দিয়েই মিটারটি রিচার্জ করতে হয়, মিটারে কত ব্যালেন্স আছে জানা যায় এবং কবে টাকা শেষ হয়ে যাবে সেটাও দেখা যায়। একে আপনার সুবিধামতো ঘরের যে কোনও জায়গায় রাখতে পারবেন। মিটারের সাথে রাখার কোন দরকার নেই।
কিভাবে রিচার্জ করতে হবে?
কাস্টমার কেয়ার সেন্টার থেকে অথবা অনলাইনে টাকা জমা দিয়ে রিচার্জ কোড সংগ্রহ করতে হবে। রিচার্জ কোডটি সাধারণত ২০ অংকের হয়। এবার ডিসপ্লে ইউনিট স্টার টিপে তারপর রিচার্জ কোড টাইপ করে হ্যাস টিপতে হবে। যদি সঠিক থাকে তবে অ্যাকসেপটেড মেসেজ আসবে এবং আপনার মিটারটি রিচার্জ হয়ে যাবে।
নতুন এই প্রিপেইড মিটারে থাকা বিভিন্ন বোতাম থেকে কী কী জানতে পারবেন-
#- টিপলে জানা যাবে কত টাকা ব্যালেন্স আছে।
১ টিপলে জানা যাবে জমা টাকা আর কতদিন চলবে।
২ টিপলে বিগত দিনে সপ্তাহে মাসে আপনি কত টাকা খরচ করেছেন, জানতে পারবেন।
৩ টিপলে ইউনিট প্রতি দাম কত এবং কত ইউনিট খরচ করেছেন, জানা যাবে।
৪ টিপলে শেষ পাঁচটি রিচার্জ কোড, যা আপনি ব্যবহার করেছেন।
৫ টিপলে কত টাকা মিটারের রিচার্জ করা হয়েছে জানা যাবে।
৬ টিপলে ভোল্টেজ# কারেন্ট, পাওয়ার ফ্যাক্টর ইত্যাদি জানতে পারবেন।
৭ টিপলে মিনিমাম চার্জ (সবার জন্য নয়)।
৮ টিপলে মাসের কোন দিন, কোন সময় এবং সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ খরচ করেছেন জেনে যাবেন।
৯ টিপলে, মোট কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করেছেন বুঝতে পারবেন।
০ ডিসপ্লে টেস্ট, সময়, তারিখ ইত্যাদি।
কি করে বুঝবেন ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাচ্ছে? এই মিটারে আপনি এলার্ম সেট করে রাখতে পারবেন। ধরা যাক ব্যালেন্স ২০০ টাকায় নেমে এলে আপনি জানতে চান। ডিসপ্লে ইউনিটের বোতাম টিপে আপনি সেটাও করতে পারবেন।
ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে কি করবেন?
বিদ্যুৎ দপ্তর সাধারণভাবে রিচার্জের অতিরিক্ত নির্দিষ্ট টাকার বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে দেয়। অর্থাৎ আপনার ব্যালেন্স শেষ হলেও কিছু সময় আপনি বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর মিটার থেকে নিজে নিজেই বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে যাবে। তাই আগেভাগেই রিচার্জ কোড কিনে মিটারটি রিচার্জ করে নেওয়াই ভালো।
কবে আসছে এই মিটার?
পশ্চিমবঙ্গের নিউটাউনে ২০০৭ সাল থেকেই এই মিটার ব্যবহার হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা রাজ্যের সব সরকারি দপ্তরে কয়েক মাসের মধ্যেই এই মিটার লেগে যাবে। পরিকল্পনা অনুসারে আগামী তিন বছরের মধ্যে সারা দেশের সব মিটার প্রিপেইড হয়ে যাবে।