ওয়েব ডেস্ক : সকলের ভাগ্য বিচার করে তাঁদের ভালো মন্দের পূর্বাভাস আগেই দিতে পারতেন। অথচ, নিজেই যে অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে প্রাণ হারাবেন, সেই আভাস হয়তো আগে থেকে পাননি জনপ্রিয় জ্যোতিষী জয়ন্ত শাস্ত্রী। রবিবার সকালে কেষ্টপুর সমর সরণিতে নিজের বাড়িতেই আচমকা অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল ওই জ্যোতিষীর। মর্মান্তিক ঘটনায় হতচকিত তাঁর অনুরক্তরা।
জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে আচমকা জয়ন্তবাবুর বাড়ির দোতলায় আগুন লেগে যায়। আগুন এতটাই তীব্র ছিল যে মূহুর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি থেকে বেরোতে পারেননি জনপ্রিয় জ্যোতিষী। এদিকে সাত সকালে আচমকা জয়ন্ত শাস্ত্রীর বাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া বেরতে দেখেন প্রতিবেশীরা। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিবেশীরা আগুন দেখে চিৎকার শুরু করেন। প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলেও ধোঁয়ার ফলে ভেতরের কিছু দেখা যাচ্ছিল না। এদিকে ঘটনার পর পরই দ্রুত খবর দেওয়া হয় কেষ্টপুর থানায়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে দমকলের ২টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। এদিকে তাঁর পুড়ে যাওয়া দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ই এম বাইপাসের এক হাসপাতালে। এ ঘটনায় চিকিৎসকরা জানান, আগুনে শরীরের প্রায় ৫০% পুড়ে মৃত্যু হয়েছে জ্যোতিষীর।
এদিকে ততক্ষণে ঘরের দরজা ভেঙে জ্যোতিষীকে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ধোঁয়া এবং আগুনের তাপে রীতিমতো অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন জয়ন্ত শাস্ত্রী। ঘটনায় স্থানীয়দের তরফে জানানো হয়েছে, স্ত্রীকে নিয়ে কেষ্টপুরের এই বাড়িতে থাকতেন জ্যোতিষী জয়ন্ত শাস্ত্রী। দিন কয়েক আগেই কৃষ্ণনগরে বাপের বাড়ি গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। সেকারনে শনিবার রাতে বাড়িতে একাই ছিলেন খ্যাতনামা জ্যোতিষী। ঘটনায় দমকলের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য জীবনের মধ্যাহ্নে এসে খ্যাতির শিখরে উঠেছিলেন এই জ্যোতিষী। কলকাতা ও দক্ষিনবঙ্গ তো বটেই সমগ্র বাংলা এমনকি বাংলার বাইরেও অনেক জায়গাতেও তাঁর তুখোড় জনপ্রিয়তা ছিল। পশ্চিম বাংলার মহানগর, শহর, শহরতলি এবং মফঃস্বলে অজস্র চেম্বার ছিল। পাশাপাশি একাধিক টিভি চ্যানেলে লাইভ প্রোগ্রাম করতেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও অজস্র ভক্ত ছিলেন তাঁর। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর আগুনের মতই ছড়িয়ে পড়েছে। শোকের স্তব্ধতা নেমে এসেছে। রবিবার ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যা নাগাদ শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।