ওয়েব ডেস্ক : করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বন্ধ লোকাল ট্রেন। তবে লকডাউনের প্রথমদিন থেকেই স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চললেও তাতে জায়গা নেই সাধারণ যাত্রীদের। করোনার সংক্রমণের ভয়ে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হলেও আদতে সামাজিক দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে পেশার টানে ভিড় বাসে ঝুলতে ঝুলতেই অফিস যাচ্ছে বহু যাত্রী। এতে স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় যেমন থাকছে, তেমনই গন্তব্যে পৌঁছাতে টাকা খরচ হচ্ছে তিন- চার গুন। ফলে লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে সাধারণ যাত্রীরা। এবার যাত্রীদের বিক্ষোভ আছড়ে পড়ল হাওড়া স্টেশনে। শনিবার ফের স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার দাবিতে যাত্রীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাওড়া স্টেশন। এর জেরে স্টেশন চত্ত্বরে রণক্ষেত্রের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি এতটাই হাতের বাইরে চলে যায় যে শেষমেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে জিআরপি। আর তাতেই জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন মহিলা যাত্রী সহ অনেকেই।
জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধেয় স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়তে প্রচুর সংখ্যক যাত্রী হাওড়া স্টেশনে উপস্থিত হন। কিন্তু তাঁরা স্টেশনে ঢুকতে গেলে বাধা দেয় রেলপুলিশ। এতে রেগে যান যাত্রীরা। প্রায় কয়েকশো যাত্রী বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ভাঙার চেষ্টা করা হয় গেট। রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় স্টেশন চত্ত্বর। এদিন যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখিয়ে প্রশ্ন তোলেন, রেলকর্মীরা প্রচুর টাকা মাইনে পাওয়া সত্ত্বেও যদি স্টাফ স্পেশালের সুবিধা পান তবে সাধারণ মানুষ যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের কেন ট্রেনে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতেই আচমকা লাঠিচার্জ শুরু করে জিআরপি। সেসময় বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের লাঠি কেড়ে নিয়ে পাল্টা পুলিশের দিকে লাঠি ছুঁড়ে মারে।
এরপর এক মহিলা পুলিশকে ভিড়ের মধ্যে টেনে নিয়ে মারধর করতে শুরু করেন মহিলা যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, কোনো কারণ ছাড়াই এদিন যাত্রীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পাশাপাশি এদিন মহিলা যাত্রীরা অভিযোগ করেন, পুরুষ জিআরপিরা তাঁদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। এদিকে খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী স্টেশনে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে যাত্রীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এমনকি তাদের স্টেশনের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এদিন পুলিশের মারে বহু যাত্রী কমবেশি চোট পেয়েছেন। তবে আরও এক গুরুতর অভিযোগ করেন বিক্ষোভরত জনতা। তাদের মধ্যে অনেকের অভিযোগ, তাঁরা স্বাস্থ্যকর্মী। স্টেশনে ঢোকার আগে তারা জিআরপি–কে ত পরিচয়পত্র দেখিয়েছেন। কিন্তু আদতে কোনো লাভ হয়নি। তাঁদের কোনোভাবেই গেট টপকে স্টেশনে ঢুকতে দেয়নি রেল পুলিশ।