নিজস্ব সংবাদদাতা: মমতা ব্যানার্জীর ছবি ছাড়াই অন্য কারো ছবি নিয়ে তৃণমূলের মিছিল দেখল পশ্চিম মেদিনীপুর, মিছিল দেখল বেলদা। মিছিলের আগা গোড়াই অভিষেক ব্যানার্জী। মিছিলরের ব্যানারে, উঁচিয়ে ধরা হোর্ডিংয়ে, বুকে ঝোলানো পোষ্টারে শুধুই অভিষেক ব্যানার্জী। এমন কি এই প্রথম অভিষেক ব্যানার্জীর ছবি দেওয়া গেঞ্জিও দেখা গেল।
মঙ্গলবার পি.কের পরামর্শ মত তৃণমূলের সদ্য গড়ে ওঠা ‘যুবশক্তি’র মিছিল ছিল বেলদা মফঃস্বল শহরে। অবশ্য যুবশক্তি নাম হলেও প্রৌঢ়, বৃদ্ধ কিংবা অন্য শক্তিরাও ছিলেন সেই মিছিলে। নাই নাই করে হাজার তিনেক মানুষের এই মিছিল পুরোটাই অভিষেকময় হয়ে রইল। মিছিলের আয়োজক ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা বেলদার তৃনমূল নেতা সূর্যকান্ত অট্ট। অট্ট নিজেও অবশ্য প্রৌঢ় তবুও তাক লাগিয়ে দেওয়া মিছিল করেছেন তিনি। আর সেই মিছিল আক্ষরিক অর্থে ২০২১শে দল ক্ষমতায় এলে অভিষেক ব্যানার্জীর অভিষেককেই নিশ্চিত করে দিল যেন।
মিছিল ছিল মূলতঃ কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতায় এবং হাথরস কান্ডের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে। কিন্তু সেই মিছিলে যেটা অবাক করেছে যেটা সেটা হল অভিষেক ব্যানার্জীর ছবি সম্বলিত উপস্থিতি যা এক কথায় নজির বিহীন। অনেকেরই মতে এই মিছিল ছিল কার্যত শুভেন্দু অধিকারী অনুগামী সংগঠন ‘আমরা দাদার অনুগামী’ সংগঠন কে টক্কর দেওয়ার মিছিল।
গত কয়েকদিন ধরেই সারা জেলা জুড়ে কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ‘দাদার’ অনুগামীরা। করোনা থেকে লকডাউন একের পর এক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ভাবে মানুষের বিভিন্ন সমস্যায় কাজ করে চলেছেন শুভেন্দুর অনুগামীরা। দুঃস্থ, দুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা। দেখা যাচ্ছে সর্বত্রই তাঁরা বিভিন্ন সমাজ সেবা কাজ করছেন ‘আমরা দাদার অনুগামী।’ ঘাটালের বীরসিংহ গ্রামে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরে ২০০বছর পূর্তিতে সেখানে যাওয়া, করোনা কয়েক হাজার দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সর্বত্রই তাঁরা ছুটে গেছেন। এরপর শুভেন্দু অধিকারী করোনা আক্রান্ত হওয়ার সময় শত শত শুভেন্দু অনুগামীকে রাজ্যে, রাজ্যের বাইরে শুভেন্দুর মঙ্গল কামনায় যাগ যজ্ঞ পূজো করতে। আর সর্বত্রই এই অনুগামীদের বুকে ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে দেখা গেছে ‘আমার দাদার অনুগামী’ লেখা আর মন্ত্রীর ছবি।’ বহু জায়গায় মন্ত্রীর ছবি সম্বলিত গেঞ্জিও দেখা গেছে। ক্রমশ ভিড় বাড়ছে এঁদের।
রাজ্য রাজনীতিতে শুভেন্দু-অভিষেক দ্বৈরথ এখনও সুস্পষ্ট। একের পর সরকারি সভা, দলের কর্মসূচি এড়িয়েছেন মন্ত্রী। দলনেত্রীকে নাকি শুভেন্দু আধিকারি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, “আপনি ছাড়া অন্য কারও নেতৃত্ব মানতে পারবনা।” যা স্পষ্টই অভিষেক বিরোধিতাকে বুঝিয়ে দেয়।
মঙ্গলবার বেলদায় অভিষেকময় মিছিল এটা প্রমান করে দিয়েছে যে শুভেন্দু অনুগামীদের ছেড়ে কথা বলবেননা শুভেন্দুর বিপরীত গোষ্ঠীতে অবস্থানকারী তৃণমূলের সদস্যরা। ‘তৃনমূল VS তৃণমূলের’ এই লড়াই ২০২১ অবধি গড়াবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা অবশ্য যদি শেষ অবধি শুভেন্দু তৃণমূলে থাকেন।