বচ্চন গিরি; নেতাই: মাত্র ৮ মিনিটের বক্তব্য আর পাঁচ মিনিটের পদচারনা আর তাতেই তিনি জানিয়ে দিলেন, আপোষের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি, স্পষ্ট করে দিলেন লড়াই চলবেই! রবিবার শুভেন্দু অধিকারী নেতাই গ্রামে অবস্থান করেছেন খুব অল্প সময়। কিন্তু ওই স্বল্প সময়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন সমঝোতার দিন শেষ হয়ে গেছে প্রায়। ২০২১য়ের সম্মুখ সমরে তিনি একাই এগুচ্ছেন নিজের অনুগামীদের নিয়ে।
আগে থেকেই ঘোষনা ছিল, এই অনুষ্ঠান হবে দলীয় পতাকাহীন। তিনি নিজেও আসবেন অ-মন্ত্রী, অরাজনৈতিক হয়ে। হলও তাই। সেই অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানেই শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ” আমাকে কেউই আমার লক্ষ্য, আমার কর্ম পদ্ধতি, আমার দায়বদ্ধতা থেকে কেউ কখনও সরিয়ে দিতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবেনা।”
গত ৭ই জানুয়ারি নেতাই দিবসে এই গ্রামে এসে শুভেন্দু শুনে গিয়েছিলেন নিজেরই দল আর সরকারের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের কথা, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কথা। ১৮ই অক্টোবর, রবিবার সরকার বা দল নয় গিয়েছিলেন নেতাই গ্রামের সেবক হিসাবে আর সেখানকার ৫২জন মহিলার হাতে সেলাই মেশিন এবং ১৭টি পরিবার কে বাড়ি দিয়ে এসেছেন তিনি।
আর এভাবেই নেতাই সহ সমগ্র জঙ্গলমহলকে জানিয়ে দিয়েছেন তৃনমূল আর তৃনমূল পরিচালিত সরকারের বিকল্প নাম হল শুভেন্দু অধিকারী।যদিও এটাই প্রথম নয়, এর আগেও সরকারি হুল উৎসবের বাইরে গিয়ে জঙ্গলমহলের কাঁটাপাহাড়ি আর ঝাড়গ্রামে সেই একই বার্তা দিয়ে এসেছেন তিনি। শুধুই সেলাই মেশিন বা বাড়ি নয়, ২০১১ সালে সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে নেতাইয়ে নিহত ও আহত পরিবার গুলি দাবি করেছিলেন তৃনমূল সরকার প্রতিশ্রুতি মত সবাইয়ের কর্মসংস্থান করেনি, চাকরির ব্যবস্থা করেনি।
রবিবার নেতাইয়ে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিয়েছেন, দু’জনের বয়সসীমা নিয়ে সমস্যা রয়েছে কিন্তু বাকি ৫ জনের অস্থায়ী পদে হলেও চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি। শুভেন্দু বলেছেন, “চন্দ্র সূর্য যতদিন উঠবে, যতদিন শুভেন্দু অধিকারী হাঁটতে চলতে পারবে ততদিন নেতাইয়ের গ্রামবাসীদের পাশে আছি, ছিলাম ও থাকব।” অভিজ্ঞ রাজনীতিকদের মতে শুভেন্দু অধিকারীর এই বার্তা শুধু নেতাই নয়, এই বার্তা, এই আশ্বাস তাঁর হাজার হাজার সক্রিয় অনুগামীদের উদ্দেশ্য যে অনুগামীরা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে হয়ত আরেক লড়াইয়ের ময়দানে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
২০২১ শুভেন্দু অধিকারী কী তৃণমূলেই থাকছেন? নাকি অন্য কোনও রাজনৈতিক দলে অথবা কোনোও নতুন মঞ্চ গড়ে পৃথকভাবে লড়াইয়ে নামছেন এনিয়ে এখন জোর আলোচনা রাজনৈতিক মহলে। যদি রাজনীতির পোশাক খুলে অরাজনৈতিক কোনও মঞ্চ গড়ে আগামী লড়াইয়ের প্রস্তুতি তিনি নিয়ে থাকেন তবে সেই পোশাক খোলার কাজটা তিনি নেতাই থেকেই করে ফেললেন বলতে হয়, একদশক আগে যে নেতাই থেকে তৃণমুলের জয়যাত্রাকে নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন।