Homeহেঁসেলিয়ানাহেঁসেলিয়ানা : পাঁপড়ি চাট ।সোহম দে

হেঁসেলিয়ানা : পাঁপড়ি চাট ।সোহম দে

আজকের মেনু : পাপড়ি চাট                                            সোহম দেসামনে পুজো। মনটা খুশিতে ভরে উঠছে মাঝে মাঝে। শিশির ভেজা সকালে শিউলি পড়ে থাকছে পাশের বাড়ির বাগানে ঘাসের ওপরে। সন্ধ্যে বেলায় ভেসে আসে তার মিষ্টি গন্ধ।কিন্তু অন্য বারের মতো মা র সাথে বিগবাজারে গিয়ে পুজোর জামা কেনা হলোনা। যেটুকু হলো, তা অনলাইন পূজা শপিং।মন্দ নয়। তবে মন্দ সাজছে খাওয়া দাওয়া। মানে বাইরের খাবার। পুজো মানেই বন্ধু দের সাথে একটু দেখা করা, দল বেঁধে সিসিডি তে আড্ডা, র নাহলে পুরনো স্কুল স্যাক্রেড হার্ট র কাছে সাউথসাইড এ ফুচকা র পাঁপড়ি চাট খাওয়া। কিন্তু এবছর সব কিছুতেই যে বাধ সেধেছেন করোনা মহারাজ… অবিশ্যি, রাজা না রানী জানা নেই। জানা আছে শুধু ফুচকা পাঁপড়ি চাট খাওয়া। মা কিছুতেই সাউথ সাইড গিয়ে খেতে দেবেনা। এদিকে মনটা খাইখাই করছে।তাই আমার সাংবাদিক তিন্নি দিদি কে ফোন করে রেসিপি জেনে নিয়ে ঘরেই বানিয়ে ফেললাম.. পাঁপড়ি চাট।

উপকরণ:
ময়দা(এক কাপ),
সুজি(দুই চামচ)
ঘি বা রিফাইন অয়েল,
টক দই, তেঁতুল, ধোনে পাতা, পুদিনা পাতা,
ভাজা মশলা(গোটা ধোনে, জিরা, লাললংকা গরম করে গুঁড়ো করে নিতে হবে)
সাদা নুন, বিট নুন,
সেদ্ধ করে রাখা একটি আলু,
হাফ টোম্যাটো কুচো, পেঁয়াজ কুচো, ধোনে পাতা কুচো, কাঁচা লঙ্কা,একটি পাতি লেবু এবং
ঝিরি ভাজা।

প্রণালী:পাঁপড়ি চাট বানানোর জন্য আগে আমরা পাপড়িগুলি বানিয়ে নেবো। একটি পাত্রে এক কাপ ময়দা নিয়ে তাতে দুই চামচ সুজি,এক চামচ ঘি দিয়ে, পরিমাণমতো নুন দিয়ে ভালোবাসা করে মিশিয়ে নেবো। ঘি র পরিবর্তে রিফাইন অয়েল ও দিতে পারেন। তবে ঘি দিলে পাপড়িগুলি অনেকদিন মুচমুচে থাকবে।খুব সামান্য জল দিয়ে এবার ময়দা সুজি টি মেখে নেবো। জল খব বেশি দিলে ডু টি নরম হয়ে যাবে, তাই খেয়াল রাখতে হবে, জল যেন বেশি না পড়ে। যাইহোক, লুচির মতো মেখে ময়দা টি 15মিনিটে ঢাকা দিয়ে রেখে দিলাম।

এবার অন্য দিকের জিনিস গুলো তৈরী করে নিন। যেমন, পাকা তেঁতুল মিনিট 15 এককাপ জলে ভিজিয়ে রাখার পর, তেঁতুল ভালো করে চটকে নিন। এরপর একটি কড়াই এ এক চামচ তেল দিয়ে, একটা শুকনো লঙ্কা দিন, তেল গরম হলে কাপে রাখা তেঁতুল জলটা ঢেলে দিন, সামান্য নুন ও মিষ্টি, একটুভাজা মশলা দিয়ে নাড়তে থাকুন। একটু ঘন হয়ে গেলে নামিয়ে দিন ও একটি কাঁচের বোল র মধ্যেই ঢেলে দিন। তৈরী হয়ে গেলো তেঁতুল চাটনি।
এবার তৈরী করবো আর একটি চাটনি…পুদিনা-ধোনে পাতার চাটনি। একগুচ্ছ ধোনে পাতা ও পুদিনা পাতা পরিষ্কার করে ধুয়ে মিক্সি তে দিয়ে দেবো,তাতে একটু কাঁচা লঙ্কা, স্বাদমতো নুন, চিনি, একটু আদা, একটা পাতিলেবু র রস দিয়ে বেটে নেবো।কেউ যদি, পেঁয়াজ বা রসুন র টেস্ট পছন্দ করেন তাহলে যে কোনো একটা মেশাতে পারেন। 2মিনিট মিক্সি তে ঘোরালেই তৈরী হয়ে গেলো পুদিনা চাটনি। এবার এটি একটি কাঁচের বোল এ রেখে দিন।

আমরা এবার ফিরে যাবো মূল পর্বে অর্থাৎ পাঁপড়ি বানানোর দিকে। 15মিনিট
ভিজিয়ে রাখা ময়দা র ডু টি 2ভাগ্ করে নেবো। তারপর বড়ো রুটির মতো বেলে নেবো। বেলে নেওয়া রুটিটার সারা গায়ে কাঁটা চামচ দিয়ে ফুটো ফুটো করে দেবো, যাতে পাঁপড়ি গুলি ফুচকার মতো ফুলে না যায়।একটি ছোট স্টিলের গ্লাসের মুখ দিয়ে রুটি টা গোল গোল করে ছোট ছোট লুচির মতো পাঁপড়ি গুলো কেটে বের করে নেবো। সাইড এর বাড়তি ময়দা গুলি নিয়ে আবার পাঁপড়িলুচি বেলে ফেলুন। ঠিকএই ভাবেই আর একটা ডুকে রুটির মতো বেলে পাঁপড়িলুচি বের করে নিন।

কেউ যদি এইভাবে না করেন, তাহলে ছোট ছোট লুচি বেলে নিন, তাতে করে অনেক সময় লাগবে।
এবার কড়াই তে রিফাইন তেল দিন, তেল বেশি গরম করবেন না, অল্প গরম হলে পাঁপড়ির লুচি গুলি এক এক করে ছাড়তে থাকুন। এপিঠ ও পিঠ করে পাঁপড়ি গুলি কম আঁচে ভাজতে থাকুন, যাতে মুচমুচে হয়। ভাজা হয়ে গেলে একটি থালাতে তুলে ঠান্ডাকরুন। কতক গুলো পাঁপড়ি কৌটো তে ভরে রাখতে পারেন, পড়ে ব্যবহারের জন্য। যা আরামসে একমাস পর্যন্ত রাখা যায়।

থালায় রাখা পাঁপড়ি গুলি পরপর রেখে সাজিয়ে নিন।আবার সেদ্ধ করে রাখা আলুর ছোটছোট টুকরো পাঁপড়ির ওপর দিন, সামান্য নুন ছড়িয়ে দিন আলুর গায়ে, নাহলে আলোনো লাগবে। আলুর ওপর ফেটিয়ে রাখা টকদই চামচে করে একটু একটু করে দিন,ওপরে বিটনুন ও ভাজা মশলা ছড়িয়ে দিন।এর ওপর পরপর কুচোনো ধোনে পাতা, পেঁয়াজ কুচো, কাঁচা লংকা কুচো, টোম্যাটো কুচো ছড়িয়ে দিন। তেঁতুল চাটনি, আর পুদিনা চাটনি চামচে করে অল্প অল্প করে দিয়ে দিনএবং সবার শেষে ঝুড়ি ভাজা ছড়িয়ে দিন। তৈরী হয়ে গেলো ঘরে বসে নানান রঙে সেজে ওঠা পাঁপড়ি চাট। আহা খেয়ে, সবাই কে খাইয়ে মন ভরে গেলো। মা হেসে মাথায় চাটা দিয়ে বললো, ভাগ্গিস, সাউথ সাইড ছাড়িনি, নাহলে ঘরে বসে এমন টেস্টি পাঁপড়ি চাট খেতে পেতুম না। পুজোর মাঝে আবার করে খাওয়াস বাবা।

RELATED ARTICLES

Most Popular