নিজস্ব সংবাদদাতা: এ যেন শেষ হয়ে হইলনা শেষ। বৃহস্পতিবার বিজেপির নবান্ন অভিযানের হাতি পুলিশ পাইপের মধ্যে দিয়ে গলিয়ে এপাশ ওপাশ করিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব প্রায় নিয়েই ফেলেছিল রাজ্য পুলিশ কিন্তু পুরো হাতি পের করেও হাতির ল্যাজ পের করতে পারলনা পুলিশ। আর সেই ল্যাজ হল বলবিন্দর সিংয়ের পাগড়ি। বৃহস্পতিবার বিজেপির নবান্ন অভিযানের সময় শিখ সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির পাগড়ি টেনে-হিঁচড়ে খুলে দেয় পুলিশ। তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারতেও দেখা যায়। এই ঘটনার ভিডিও সামনে আসতেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। এই ব্যক্তির কাছ থেকেই পিস্তল পাওয়া গিয়েছিল, যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। সেই ঘটনাই এবার সম্ভঃবত বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে সর্বভারতীয় মিডিয়ায়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে বলবিন্দরের সেই পাগড়ি খুলে ফেলার ভিডিও ইমপ্রীত সিং বক্সি টুইটারে পোস্ট করেন। সেই ট্যুইট নজরে পড়ে ভারতের ক্রিকেট তারকা হরভজন সিংয়ের। তিনি সেই ভিডিওটি রি-টুইট করে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ক্ষুব্ধ ভাজ্জি সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভাইরাল একটি ভিডিও টি পোষ্ট করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করলেন, যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। তিনি বলেন এটা হওয়া উচিৎ ছিলনা।
শিখ সম্প্রদায়ের কাছে পাগড়ি খুলে দেওয়া শুধু গর্হিত অপরাধই নয় মারাত্মক অপমানের। পাগড়ি শুধুই ধর্ম নয় শিখদের সংস্কৃতিরও অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। অতীতে বহু শিখ নেতা পাগড়ির সম্মান রক্ষার্থে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। তাই নবান্ন অভিযান চলাকালীন বলবিন্দর সিং নামক ব্যক্তির পাগড়ি খুলে দেওয়ার ভিডিওটি হরভজন সিংকে অত্যন্ত ব্যথিত করেছে। ক্ষুব্ধ ভাজ্জি টুইটারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টিতে নজর দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
বলবিন্দর সিংকে বৃহস্পতিবার পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তাঁর কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। শিখ যুবক বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য প্রিয়াঙ্গু পান্ডের দেহরক্ষী বলে জানা গিয়েছে। রাজ্য বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, বলবিন্দরের কাছ থেকে পাওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। তবে পরে জানা যায় সেই লাইসেন্স রাজৌরির ও তার বাইরে এই পিস্তল ব্যবহার করা বা নিয়ে ঘোরার অধিকার তাঁর নেই।
ইমপ্রীত সিং বক্সি টুইটারে বলবিন্দরকে বাংলার পুলিশের মারধর ও তাঁর পাগড়ি খুলে দেওয়ার ভিডিও পোস্ট করেন। হরভজন ভিডিওটি রি-টুইট করে নিজের রাগ প্রকাশ করেন।
প্রশ্ন উঠেছে বলবিন্দর যদি আইন ভঙ্গ করে থাকেন তাহলে আইন মোতাবেক শাস্তি পাবেন। জানা গেছে তিনি সেনা বাহিনীর প্রাক্তন জওয়ান। তা স্বত্ত্বেও আইন ভাঙলে তাঁর আইনগত বিচার হবে। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতেই পারে কিন্তু তাঁর পাগড়ি খুলে দেওয়া যায়না। পুলিশের অবশ্য দাবি ধস্তাধস্তিতে তাঁর পাগড়ি খুলেছে যদিও সেটা মানতে রাজি নয় অনেকেই। পাশাপাশি এ প্রশ্নও থেকেই যায় এই ধরনের আন্দোলনে ব্যক্তিগত দেহরক্ষী রাখা যায় কিনা। সব মিলিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠতে চলেছে।